Thursday, January 30, 2025

আদানি ঘুষকাণ্ড: হোয়াইট হাউসের প্রতিক্রিয়া এবং ভারত-আমেরিকা সম্পর্কের ভবিষ্যৎ

Share

ভারতের শক্তিশালী শিল্পপতি গৌতম আদানি এবং তাঁর ঘনিষ্ঠ ছয়জনের বিরুদ্ধে ঘুষের অভিযোগে আমেরিকার আদালতে মামলা দায়েরের বিষয়টি বিশ্বমহলে আলোড়ন ফেলেছে। অভিযোগ অনুযায়ী, সৌরবিদ্যুৎ প্রকল্পের জন্য ভারতীয় নেতা-মন্ত্রী ও সরকারি কর্মকর্তাদের প্রায় ২২৩৭ কোটি টাকার ঘুষ দেওয়ার চেষ্টা করা হয়েছে। এই ঘটনায় বিদায়ী আমেরিকার প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের প্রশাসন প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে।

আদানি ঘুষকাণ্ড: হোয়াইট হাউসের অবস্থান

হোয়াইট হাউসের মুখপাত্র কারিন জিনান পিয়ের বলেছেন, ভারত-আমেরিকার সম্পর্ক দীর্ঘদিনের এবং গভীর। এই সম্পর্ক ভবিষ্যতে আরও মজবুত হবে বলে আশাবাদী তারা। সাংবাদিকদের সামনে তিনি জানান, আদানিদের বিরুদ্ধে আমেরিকার তদন্তকারী সংস্থাগুলো সুনির্দিষ্ট তথ্য উপস্থাপন করবে এবং বিষয়টি তাদের পর্যবেক্ষণে রয়েছে।

অভিযোগের বিশদ বিবরণ

অভিযোগ উঠেছে যে আদানি গ্রুপের সৌরবিদ্যুৎ প্রকল্পের জন্য ভারতের বিভিন্ন রাজ্যের সরকারি আধিকারিকদের ঘুষ দেওয়ার পরিকল্পনা করা হয়েছিল। আমেরিকার তদন্তকারী সংস্থা এবং সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (SEC) এই অভিযোগের ভিত্তিতে গৌতম আদানি, তাঁর ভাইপো সাগর আদানি এবং আরও পাঁচজনের বিরুদ্ধে পাঁচটি মামলা করেছে। মামলাগুলোর মধ্যে রয়েছে ফৌজদারি ও দেওয়ানি মামলা।

কেন আমেরিকার আইনি পদক্ষেপ?

এখানে প্রশ্ন উঠছে, ভারতের ঘটনার জন্য আমেরিকা কেন আইনি পদক্ষেপ নিচ্ছে? তদন্তে জানা গিয়েছে, আমেরিকান শেয়ারবাজার থেকে আদানি গ্রুপ বেআইনিভাবে অর্থ সংগ্রহ করেছে, যা ঘুষ দেওয়ার জন্য ব্যবহৃত হতে পারে। আমেরিকার আইন অনুযায়ী, তাদের শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত কোনও কোম্পানি যদি অর্থ সংগ্রহ করে বেআইনি কাজে ব্যবহার করে, তবে আইনি পদক্ষেপ নেওয়া বাধ্যতামূলক।

ভারত-আমেরিকা সম্পর্কের প্রভাব

এই ঘটনার প্রেক্ষিতে ভারতের রাজনৈতিক মহলে উত্তেজনা সৃষ্টি হলেও দুই দেশের কূটনৈতিক সম্পর্কে এর কোনও দীর্ঘমেয়াদি প্রভাব পড়বে না বলে মনে করছে হোয়াইট হাউস। কারিন পিয়ের আরও বলেছেন, ‘‘ভারত-আমেরিকার মধ্যে মজবুত সম্পর্ক ভবিষ্যতে সমস্যাগুলোর সমাধান সহজ করবে।’’

আদানি গ্রুপের অবস্থান

অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে আদানি গ্রুপ থেকে আনুষ্ঠানিক কোনও মন্তব্য আসেনি। তবে তাঁরা অতীতে সবসময় তাঁদের ব্যবসায়িক কার্যক্রমের স্বচ্ছতা ও নীতিনিষ্ঠার উপর জোর দিয়ে এসেছে।

ভবিষ্যতের সম্ভাবনা

বিশ্লেষকরা মনে করছেন, এই ঘটনাটি ভারত এবং আমেরিকার ব্যবসা এবং কূটনৈতিক সম্পর্কের ক্ষেত্রে একটি গুরুত্বপূর্ণ পরীক্ষা হতে পারে। আমেরিকার আদালতের রায় এবং ভারতের রাজনৈতিক প্রতিক্রিয়া এই বিষয়ে বড় ভূমিকা পালন করবে।

আদানি ঘুষকাণ্ড শুধুমাত্র একটি ব্যবসায়িক কেলেঙ্কারি নয়, বরং এটি আন্তর্জাতিক সম্পর্কের সূক্ষ্মতার একটি উদাহরণ। ভারত ও আমেরিকার মধ্যকার গভীর সম্পর্ক এবং অর্থনৈতিক সহযোগিতার শক্তি এই চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করতে পারবে কি না, সেটাই দেখার বিষয়।

Read more

Local News