জুলাইয়ে মোদীর কূটনৈতিক অভিযান শুরু হচ্ছে ঘানা থেকে!
আন্তর্জাতিক কূটনীতির মঞ্চে ফের একবার ব্যস্ত সফরসূচি নিয়ে বিদেশ সফরে যাচ্ছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। জুলাই মাসের শুরুতেই আট দিনের মধ্যে মোট পাঁচটি দেশ সফর করবেন তিনি। দক্ষিণ আমেরিকা ও আফ্রিকার বিভিন্ন দেশে ভারতীয় সম্পর্ককে আরও দৃঢ় করতে এই সফর। তবে সফরের মূল কেন্দ্রবিন্দু ব্রাজ়িলে অনুষ্ঠিত হতে চলা ১৭তম ব্রিকস (BRICS) সম্মেলন।
২ জুলাই নয়াদিল্লি থেকে যাত্রা শুরু করবেন প্রধানমন্ত্রী। প্রথম গন্তব্য পশ্চিম আফ্রিকার দেশ ঘানা। গত তিন দশকে ভারতীয় কোনও প্রধানমন্ত্রী এই দেশে সফর করেননি। ফলে মোদীর এই পদক্ষেপ ঐতিহাসিক বলেই ধরা হচ্ছে। ৩ জুলাই পর্যন্ত ঘানায় থাকবেন তিনি। মূলত বাণিজ্য, প্রতিরক্ষা ও কৌশলগত সহযোগিতা আরও মজবুত করাই এই সফরের মূল উদ্দেশ্য।
এরপর ৩ ও ৪ জুলাই মোদী পৌঁছাবেন ক্যারিবিয়ান দ্বীপপুঞ্জের দেশ ত্রিনিদাদ ও টোবাগোতে। ১৯৯৯ সালের পর ভারতীয় প্রধানমন্ত্রীর এটাই প্রথম সফর এই দেশে। প্রেসিডেন্ট ক্রিস্টিন কার্লা কাংগালু ও প্রধানমন্ত্রী কমলা প্রসাদ বিশ্বেশ্বরের সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক বৈঠক হবে তাঁর। এছাড়াও সংসদের যৌথ অধিবেশনে ভাষণ দেওয়ারও কথা রয়েছে মোদীর, যা এই সফরের বিশেষ আকর্ষণ।
ত্রিনিদাদ থেকে মোদীর পরবর্তী গন্তব্য আর্জেন্টিনা। ৪ ও ৫ জুলাই তিনি থাকবেন দক্ষিণ আমেরিকার এই দেশে। আর্জেন্টিনার প্রেসিডেন্ট জেভিয়ার মিলেইয়ের সঙ্গে বৈঠকে অংশ নেবেন তিনি। প্রতিরক্ষা, কৃষি, খনিজ, জ্বালানি এবং বাণিজ্য— এই পাঁচ ক্ষেত্রে দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক আরও গভীর করাই এই সফরের মূল উদ্দেশ্য।
এরপরই মোদী পৌঁছাবেন ব্রাজ়িলের রিও ডি জেনেইরো শহরে, যেখানে আয়োজিত হতে চলেছে ১৭তম ব্রিকস সম্মেলন। ৫ থেকে ৮ জুলাই পর্যন্ত ব্রাজ়িলে থাকবেন তিনি। প্রেসিডেন্ট লুলা দা সিলভার সঙ্গে বৈঠক ছাড়াও বিভিন্ন দেশের নেতাদের সঙ্গে বৈঠক করবেন তিনি। সম্মেলনে অংশ নেওয়ার পাশাপাশি ব্রাসিলিয়াতেও ব্রাজ়িলের প্রেসিডেন্টের সঙ্গে আলাদা করে বৈঠক হওয়ার কথা।
সব শেষে, ৮ জুলাই তিনি পৌঁছাবেন দক্ষিণ আফ্রিকার দেশ নামিবিয়ায়। এই দেশেও মোদীর এটাই প্রথম সফর। ভারত-নামিবিয়া সম্পর্কের ক্ষেত্রে এটি অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ পদক্ষেপ। বিশেষ করে নামিবিয়া থেকে আফ্রিকান চিতা ভারতে আনার যে উদ্যোগ মোদী সরকার নিয়েছিল, তার পরিপ্রেক্ষিতে দুই দেশের মধ্যে পরিবেশ ও বন্যপ্রাণ সংরক্ষণ নিয়েও আলোচনা হতে পারে। নামিবিয়ার প্রেসিডেন্ট নেটুম্বো ন্যান্ডি-নাইতওয়ার সঙ্গে সাক্ষাৎ হবে তাঁর।
৯ জুলাই মোদীর এই আন্তর্জাতিক সফর শেষ হবে। বিদেশ মন্ত্রকের দাবি, এই সফর শুধু কূটনৈতিক নয়, বাণিজ্য ও বৈশ্বিক নেতৃত্বের দিক থেকেও ভারতের অবস্থানকে আরও মজবুত করে তুলবে।

