Saturday, May 17, 2025

‘আটকে’ ২২টি বিল? রাজ্যপালকে তোপ, রাজভবনের পাল্টা জবাব: দায় নবান্নের!

Share

‘আটকে’ ২২টি বিল?

রাজ্যের বিধানসভায় পাস হওয়া একের পর এক বিল রাজভবনে আটকে পড়েছে—এই অভিযোগ নতুন নয়। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও বহুবার এই নিয়ে মুখ খুলেছেন। তবে এবার বিষয়টি আরও গুরুত্ব পেল যখন দেশের সর্বোচ্চ আদালত জানাল, রাজ্যপালরা কোনো বিল দীর্ঘদিন ঝুলিয়ে রাখতে পারেন না। তারই পরিপ্রেক্ষিতে মঙ্গলবার বিধানসভার অধ্যক্ষ বিমান বন্দ্যোপাধ্যায় রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোসকে ‘কর্তব্য স্মরণ’ করিয়ে দেন।

একদিন যেতে না যেতেই রাজভবনের তরফে এল পাল্টা প্রতিক্রিয়া। বুধবার রাতে রাজভবন থেকে দু’টি বিবৃতি প্রকাশ করা হয়। যদিও সেখানে স্পিকার বা রাজ্য সরকারের নাম সরাসরি বলা হয়নি, তবে ইঙ্গিত স্পষ্ট। বিবৃতিতে বলা হয়েছে, সংবাদমাধ্যমের খবরে বলা হয়েছিল রাজভবনে নাকি ২২টি বিল আটকে রয়েছে। সেই তথ্য সামনে আসার পরই রাজ্যপাল বিষয়টি খতিয়ে দেখার নির্দেশ দেন।

রাজভবনের দাবি, ওই ২২টি বিলের মধ্যে পাঁচটিতে ইতিমধ্যেই রাজ্যপাল সম্মতি দিয়েছেন। আরও দু’টি বিলে সিদ্ধান্ত নেওয়ার আগে রাজ্য সরকারের কাছ থেকে অতিরিক্ত তথ্য চাওয়া হয়েছে। বাকির মধ্যে ১১টি বিল রাজ্যপাল রাষ্ট্রপতির বিবেচনার জন্য পাঠিয়েছেন। এদের মধ্যে ১০টি বিল বিশ্ববিদ্যালয় সংক্রান্ত এবং একটি ‘অপরাজিতা’ বিল।

‘অপরাজিতা বিল’টি বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য। রাজ্য সরকার এটি পাশ করায় ভয়াবহ অপরাধ—বিশেষ করে ধর্ষণের পর খুন—ঘটনার জন্য আরও কঠোর শাস্তির বিধান করতে। উল্লেখযোগ্য ভাবে, আরজি কর হাসপাতালের নার্স অপরাজিতা ভট্টাচার্যের মর্মান্তিক হত্যাকাণ্ডের পরই এই বিল তোলা হয় বিধানসভায়।

এছাড়াও রয়েছে বহু পুরনো বিল, যেগুলি এখনও রাষ্ট্রপতির বিবেচনার জন্য অপেক্ষমাণ। যেমন, ২০১৩ সালে সারদা কেলেঙ্কারির পরে ‘ডিপোজিটরদের স্বার্থ রক্ষা’ সংক্রান্ত একটি বিল পাস করা হয় বিধানসভায়। সেটি ২০১৫ সালে রাষ্ট্রপতির কাছে পাঠানো হলেও আজও তা অনুমোদন পায়নি। ঠিক তেমনই ডানলপ ও জেসপ কারখানা অধিগ্রহণ সংক্রান্ত দুটি বিল—২০১৬ সালে পাস হলেও—এখনও রাষ্ট্রপতির বিচারাধীন।

রাজভবনের বক্তব্য, এই বিলগুলির অনেকগুলিতে রাজ্য সরকারের তরফে প্রয়োজনীয় তথ্য দেওয়া হয়নি। ফলে বিলগুলি নিয়ে দ্রুত পদক্ষেপ নেওয়া যাচ্ছে না। এমনকি কিছু ক্ষেত্রে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক থেকেও তথ্য চাওয়া হয়েছে।

কিছু বিলের ক্ষেত্রে আবার রাজভবন সরাসরি বলেছে, সংশ্লিষ্ট দফতরের মন্ত্রী বা সচিবকে নিয়ে আলোচনা করতে বলা হয়েছে। এইসব পদক্ষেপের মাধ্যমে রাজভবন স্পষ্ট করতে চেয়েছে—সব দায় রাজ্যপালের ঘাড়ে চাপিয়ে দেওয়া উচিত নয়।

তবে রাজনৈতিক মহল বলছে, এটি নিছক সংবিধান মেনে চলার প্রশ্ন নয়, এর পেছনে রয়েছে কেন্দ্র ও রাজ্যের রাজনৈতিক সংঘাত। রাজভবন বনাম নবান্ন এই টানাপোড়েনের মাঝে আটকে পড়েছে একাধিক জনস্বার্থমূলক বিল। আগামী দিনে এই বিবাদ কোন দিকে মোড় নেয়, সেটাই এখন দেখার।

তালা ভাঙার পাল্টা তালা! কসবা থেকে হুগলি—চাকরিহারাদের ক্ষোভে কাঁপছে রাজ্য

Read more

Local News