মমতার সামনে খোলাখুলি দাবি চাকরিহারাদের!
চোখে অনিশ্চয়তা, কণ্ঠে ক্ষোভ আর মনে হাজার প্রশ্ন। নেতাজি ইন্ডোর স্টেডিয়ামের মঞ্চে আজ এক ঐতিহাসিক দৃশ্য— চাকরি হারানো এসএসসি প্রার্থীদের সঙ্গে সরাসরি মুখোমুখি মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। একে একে উঠে আসছেন প্রার্থীদের প্রতিনিধি, জানাচ্ছেন তাঁদের অভিজ্ঞতা, হতাশা এবং দাবি।
সোমবার সকাল থেকে আলোচনার জন্য নির্ধারিত ছিল এই বৈঠক। তবে তার আগে পাস বিতরণ নিয়ে জটিলতা, অভিযোগ-পাল্টা অভিযোগের মধ্যেই অবশেষে শুরু হয় বহু প্রতীক্ষিত এই মুখোমুখি সাক্ষাৎ।
নেতাজি ইন্ডোরে মমতার পাশে আছেন শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু, মুখ্যসচিব মনোজ পন্থ, সাহিত্যিক আবুল বাশার ও কবি সুবোধ সরকার। উপস্থিত আছেন একাধিক সরকারি কর্তা ও আইনি বিশেষজ্ঞরাও। আর মঞ্চের সামনের সারিতে বসে আছেন সেই সমস্ত চাকরি হারানো প্রার্থীরা, যাঁদের কণ্ঠে ভর করে উঠে আসছে হাজারো পরিবারের বেদনা।
চাকরিহারাদের তরফ থেকে প্রথম দাবিই ছিল— “আমাদের জন্য দক্ষ আইনজীবী দিন।” কারণ, তাঁদের মতে, সুপ্রিম কোর্টের রায় অনুযায়ী যাঁরা চাকরি হারিয়েছেন, তাঁদের হয়ে আরও জোরালো ও সুনিপুণ আইনগত লড়াই প্রয়োজন। বর্তমান আইনি পরিস্থিতিতে তাঁদের কথা যেভাবে আদালতে উপস্থাপন করা হচ্ছে, তাতে ন্যায্যতা মিলছে না বলে দাবি তাঁদের।
দ্বিতীয় বড় দাবি, সব রাজনৈতিক দলকে নিয়ে এক সর্বদল বৈঠক ডাকুন মুখ্যমন্ত্রী নিজেই। কারণ, এই সমস্যা শুধু সরকারের নয়, গোটা রাজ্যের— রাজনীতির ঊর্ধ্বে উঠে এর সমাধান চাই। বিরোধী দলগুলিরও দায়িত্ব রয়েছে এই সংকটময় মুহূর্তে পাশে দাঁড়ানোর।
প্রতিনিধিরা বলছেন, “আমরা কোনও অবৈধ পথে চাকরি পাইনি, কিন্তু এখন আমরা যেন একেবারে অদৃশ্য। ন্যায়বিচার কোথায়? সংসার ভেঙে যাচ্ছে, সামাজিক ভাবে অসম্মান সহ্য করতে হচ্ছে— অথচ কেউ আমাদের কথা শোনে না।”
মঞ্চে বসে ছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি মন দিয়ে শুনছিলেন, মাঝে মাঝে মাথা নেড়ে সায় দিচ্ছিলেন। যদিও এখনো পর্যন্ত কোনও আনুষ্ঠানিক প্রতিশ্রুতি দেননি তিনি, তবে তাঁর উপস্থিতিই চাকরিহারাদের মনে কিছুটা আশার আলো জোগাচ্ছে।
এখন সবার নজর এই বৈঠকের ফলাফলের দিকে। কি বলবেন মুখ্যমন্ত্রী? তাঁদের দাবিগুলো নিয়ে কী পদক্ষেপ করবেন তিনি? এবং সবথেকে গুরুত্বপূর্ণ— এই সংকট থেকে কোনও বাস্তব সমাধানের পথে এগোবে কি রাজ্য?
বৈঠকের উত্তাপ ছড়িয়ে পড়েছে রাজ্য রাজনীতিতেও। বিরোধীরা চাইছেন, পুরো বিষয়টি নিয়ে মুখ্যমন্ত্রী পরিষ্কার অবস্থান নিন এবং উপযুক্ত সমাধানের দিকে অগ্রসর হোন।
এই মুহূর্তে শুধু চাকরি নয়, একটা প্রজন্মের ভবিষ্যত ঝুলে আছে। নেতাজি ইন্ডোরের এই বৈঠক তাই হয়ে উঠেছে অনেক বড় প্রতীক— হতাশার মধ্যেও আশার শেষ আলোটুকু খুঁজে পাওয়ার প্রয়াস।
রুই-কাতলার একঘেয়েমিতে বিরাম! স্বাদ বদল আনতে রান্না করুন ট্যাংরা মাছের ঝালঝালে তেল-ঝাল