আইএমএফ ও বিশ্ব ব্যাঙ্ক ছাড়তে পারে আমেরিকা?
আন্তর্জাতিক অর্থনীতি নিয়ে আমেরিকার অবস্থান কি বদলাচ্ছে? বিশ্ব ব্যাঙ্ক ও আন্তর্জাতিক অর্থ ভান্ডার (আইএমএফ) থেকে সরে আসার পরিকল্পনা করছে কি ট্রাম্প প্রশাসন?
জি২০ সম্মেলনে মার্কিন ট্রেজারি সচিব স্কট বেসেন্টের অনুপস্থিতি ঘিরে এই প্রশ্নই এখন ঘুরপাক খাচ্ছে গোটা বিশ্বে।
🔎 কী ঘটেছে ঠিক?
ডোনাল্ড ট্রাম্প দ্বিতীয়বার প্রেসিডেন্ট হওয়ার পর মার্কিন অর্থনীতিকে ‘পুনর্গঠনের’ লক্ষ্যে নতুন নীতি গ্রহণ করছেন।
🔹 দক্ষিণ আফ্রিকায় অনুষ্ঠিত জি২০ অর্থমন্ত্রী পর্যায়ের বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন না মার্কিন ট্রেজারি সচিব।
🔹 এরপর থেকেই গুঞ্জন শুরু— আমেরিকা কি আইএমএফ ও বিশ্ব ব্যাঙ্ক ছেড়ে দিচ্ছে?
🔹 ট্রাম্প প্রশাসনের দাবি, এই দুই সংস্থা মার্কিন অর্থনীতির তেমন কোনো উপকারে আসছে না, উল্টে বছরে কোটি কোটি ডলার খরচ হচ্ছে।
এই প্রসঙ্গে ট্রাম্প প্রশাসনের এক শীর্ষ কর্মকর্তা বলেন, “আমরা কেন এমন এক প্রতিষ্ঠানে টাকা ঢালবো, যেটা আমাদের কোনও উপকারই করছে না?”
💰 আইএমএফ ও বিশ্ব ব্যাঙ্ক কেন গুরুত্বপূর্ণ?
দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পরে আন্তর্জাতিক অর্থনীতিকে স্থিতিশীল করতে ১৯৪৪ সালে প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল আইএমএফ ও বিশ্ব ব্যাঙ্ক।
🌍 আইএমএফ:
- অর্থনৈতিক সংকটে পড়া দেশগুলিকে ঋণ দিয়ে সাহায্য করে।
- গ্রিস, আর্জেন্টিনা, পাকিস্তান, শ্রীলঙ্কা— বহু দেশ টিকে আছে আইএমএফ-এর সহায়তায়।
- বিপর্যস্ত অর্থনীতি গুছিয়ে নিতে বিশ্বের প্রায় ১৯০টি দেশ এই সংস্থার সদস্য।
🏗️ বিশ্ব ব্যাঙ্ক:
- গরিব দেশগুলিকে পরিকাঠামো উন্নয়নের জন্য ঋণ দেয়।
- এশিয়া ও আফ্রিকায় বহু গুরুত্বপূর্ণ প্রকল্প চালু আছে বিশ্ব ব্যাঙ্কের মাধ্যমে।
তাহলে হঠাৎ আমেরিকা কেন এই সংস্থা ছাড়তে চাইছে?
🇺🇸 ট্রাম্পের পরিকল্পনা: অর্থনীতির পুনর্গঠন না বিচ্ছিন্নতা?
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (WHO) এবং রাষ্ট্রপুঞ্জের মানবাধিকার পরিষদ থেকে আমেরিকা ইতিমধ্যেই বেরিয়ে গেছে।
এবার আইএমএফ ও বিশ্ব ব্যাঙ্ক থেকে সরে আসার বিষয়টি নিয়েও জল্পনা তুঙ্গে।
📉 ট্রাম্প প্রশাসনের যুক্তি:
✅ আইএমএফ-এ আমেরিকার অনুদান অনেক বেশি, কিন্তু তার যথাযথ ব্যবহার হচ্ছে না।
✅ বিশ্ব ব্যাঙ্কের প্রকল্পগুলিতে আমেরিকার প্রভাব কমছে, সেখানে চিন বড় বিনিয়োগকারী হয়ে উঠছে।
✅ এশিয়া ও আফ্রিকায় চীনের অর্থনৈতিক বিস্তার ঠেকাতে আলাদা কৌশল দরকার।
বিশ্লেষকদের মতে, আমেরিকা যদি সত্যিই এই সংস্থা ছেড়ে দেয়, তাহলে আন্তর্জাতিক অর্থনীতিতে বিশাল পরিবর্তন আসবে।
🌍 বিশ্বের প্রতিক্রিয়া কী?
আইএমএফ ও বিশ্ব ব্যাঙ্কে আমেরিকার বড় ভূমিকা আছে। তারা যদি সরে যায়, তাহলে বিশ্বজুড়ে অর্থনৈতিক অস্থিরতা দেখা দিতে পারে।
📢 বিশ্ব নেতাদের প্রতিক্রিয়া:
- ইউরোপ: আমেরিকা যদি বেরিয়ে যায়, তাহলে আইএমএফ ও বিশ্ব ব্যাঙ্কের নেতৃত্ব কি চীনের হাতে যাবে?
- চীন: তারা ইতিমধ্যেই আফ্রিকা ও এশিয়ায় বিপুল ঋণ দিচ্ছে, আমেরিকার সরে যাওয়া তাদের জন্য বড় সুযোগ।
- উন্নয়নশীল দেশগুলো: কম সুদে ঋণ পাওয়ার পথ বন্ধ হতে পারে, যা তাদের অর্থনীতির জন্য ধাক্কা হবে।
আইএমএফের এক কর্মকর্তা বলেন,
🗣️ “আমেরিকা যদি বেরিয়ে যায়, তাহলে অনেক দেশ অর্থনৈতিক সংকটে পড়বে, কারণ তারা আইএমএফের সহায়তায় নির্ভরশীল।”
❗ তাহলে সত্যিই কি আমেরিকা বেরিয়ে যাবে?
এই মুহূর্তে নিশ্চিতভাবে কিছু বলা সম্ভব নয়। তবে—
✅ আমেরিকা যদি বেরিয়ে যায়, তাহলে বহু দেশের অর্থনীতি ধসে পড়তে পারে।
✅ চীন বিশ্ব অর্থনীতির নিয়ন্ত্রণে আরও বড় ভূমিকা নিতে পারে।
✅ আমেরিকার নিজস্ব অর্থনীতিতেও অস্থিরতা দেখা দিতে পারে।
বিশ্লেষকরা বলছেন,
🗣️ “ট্রাম্পের সিদ্ধান্ত অনেক সময়ই চমকপ্রদ হয়। তাই আমেরিকা সত্যিই আইএমএফ বা বিশ্ব ব্যাঙ্ক ছাড়বে কি না, সেটি সময়ই বলে দেবে।”
📌 উপসংহার: বিশ্ব অর্থনীতির দোরগোড়ায় বড় পরিবর্তন?
আমেরিকার সিদ্ধান্ত শুধু তাদের জন্য নয়, গোটা বিশ্বের অর্থনীতির উপর প্রভাব ফেলবে।
ট্রাম্প প্রশাসন কি সত্যিই এই দুটি গুরুত্বপূর্ণ সংস্থা ছাড়বে, নাকি এটি কেবলমাত্র কৌশলগত চাল?
এই প্রশ্নের উত্তর পেতে বিশ্বজুড়ে নজর এখন হোয়াইট হাউসের দিকে। 🚀
৬.১ মাত্রার ভূমিকম্পে কেঁপে উঠল নেপাল, কম্পন অনুভূত শিলিগুড়িতেও! আতঙ্কে রাত কাটালেন বাসিন্দারা

