অ্যাস্টন ভিলার কাছে পরাজয়ে
এখন আর ভালো সময় কাটছে না ম্যাঞ্চেস্টার সিটির। প্রিমিয়ার লিগে পর পর হারের ফলে দলটি এক কঠিন সময়ের মধ্যে দিয়ে যাচ্ছে। আগের ম্যাচে, যখন তারা ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডের বিরুদ্ধে এগিয়ে গিয়েছিল, তখনও শেষ পর্যন্ত হারতে হয় তাদের। এবার, অ্যাস্টন ভিলার কাছে পরাজয়ের ফলে তাদের কোচ পেপ গুয়ার্দিওলার ওপর চাপ আরও বেড়ে গেল।
গুয়ার্দিওলার পরিকল্পনায় ফাঁক, সিটিকে আরও একবার ব্যর্থতা
এই ম্যাচে কেভিন দ্য ব্রুইনকে ছাড়া দল সাজিয়েছিলেন পেপ গুয়ার্দিওলা। আক্রমণের দায়িত্ব ছিল আর্লিং হালান্ড, জ্যাক গ্রিলিশ, ফিল ফডেনদের ওপর, সাথে ছিলেন বের্নার্দো সিলভা, মাতেও কোভাচিচ, ইলকাই গুন্ডোগানদের মতো প্রতিভাবান ফুটবলার। কিন্তু তবুও, সিটি তাদের আক্রমণে সফল হতে পারেনি। যদিও বলের দখল তাদের বেশ ছিল এবং গোল লক্ষ্য করে শটও বেশি মেরেছিল, কিন্তু একাধিক চেষ্টা সত্ত্বেও তারা গোল করতে ব্যর্থ হয়। ভিলার গোলরক্ষক এমিলিয়ানো মার্তিনেসকে একবারও পরাস্ত করতে পারল না সিটি, যার খেসারত তাদের দিতে হল।
ভিলার আক্রমণ এবং সিটির রক্ষণ ভেঙে পড়া
ম্যাচের শুরুতেই ভিলার জন ডুরান সিটির রক্ষণে ফাটল ধরিয়ে গোল করেন। সেই সময় থেকেই সিটির রক্ষণ দুর্বলতার প্রতিফলন দেখা যায়। বার বার বিপদ তৈরি হচ্ছিল তাদের বক্সে। প্রথমার্ধে আর গোল না হলেও, দ্বিতীয়ার্ধের ৬৫ মিনিটে মর্গ্যান রজার্স ভিলার জন্য ব্যবধান বাড়িয়ে দেন।
সিটির কোচ গুয়ার্দিওলা এই অবস্থায় দ্রুত পরিবর্তন আনতে শুরু করেন। তিনি কাইল ওয়াকার এবং জেরেমি ডোকুকে মাঠে নামান, কিন্তু তাতেও কোনো লাভ হয়নি। সংযুক্তি সময়ে ফিল ফডেন একটি গোল করে হলেও, তা কার্যকর হয়নি। ফলে, সিটি ১-২ গোলে হেরে যায়।
হারের পর পয়েন্ট তালিকায় পতন, গুয়ার্দিওলার ভবিষ্যৎ নিয়ে প্রশ্ন
এই পরাজয়ের ফলে পয়েন্ট তালিকায় ষষ্ঠ স্থানে নেমে গেছে ম্যাঞ্চেস্টার সিটি। ১৭ ম্যাচে তাদের পয়েন্ট ২৭। অন্যদিকে, তাদের হারিয়ে অ্যাস্টন ভিলা তাদের টপকে পাঁচ নম্বরে উঠে গেছে, তাদের পয়েন্ট ২৮। শীর্ষে থাকা লিভারপুলের পয়েন্ট ৩৬, যারা সিটির চেয়ে ৯ পয়েন্ট এগিয়ে, এবং তারা দু’টি ম্যাচ কম খেলেছে।
প্রিমিয়ার লিগে প্রথম চারটি দল চ্যাম্পিয়ন্স লিগে খেলার যোগ্যতা অর্জন করে, আর পাঁচ নম্বরে থাকা দল ইউরোপা লিগে খেলার সুযোগ পায়। অর্থাৎ, সিটির জন্য এই অবস্থায় ইউরোপের কোন বড় লিগে খেলা কঠিন হতে পারে। সিটির খারাপ পারফরম্যান্সে গুয়ার্দিওলার উপর আঙুল উঠতে শুরু করেছে। আগের দিকে, দলের খেলোয়াড়রা গুয়ার্দিওলাকে সমর্থন করতেন, কিন্তু পর পর হার তাঁর ভবিষ্যৎ নিয়ে এখন প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে।
গুয়ার্দিওলাকে দেখে মনে হচ্ছে, তার কাছে দলকে জয়ে ফিরিয়ে আনতে কোনো সঠিক পরিকল্পনা নেই। এই পরাজয়ের পরেও, তিনি মাঠ থেকে মাথা নিচু করে বেরিয়ে যান, যা তাঁর মনোভাবে হতাশার ইঙ্গিত দেয়।
এখন সিটির সামনে বড় চ্যালেঞ্জ
এই মুহূর্তে সিটির সামনে এক বড় চ্যালেঞ্জ দাঁড়িয়ে রয়েছে— কীভাবে তারা নিজেদের ঘুরে দাঁড়াবে এবং নিজেদের শক্তি প্রমাণ করবে? গুয়ার্দিওলাকে তার দলের সামর্থ্য তুলে ধরতে হবে, এবং খুঁজে বের করতে হবে সেই পথ, যার মাধ্যমে তারা আবার শীর্ষে ফিরে আসবে।
এখনই বলতে পারা যাচ্ছে না, তবে সিটির জন্য এই মৌসুমের প্রতিযোগিতা আরও কঠিন হতে চলেছে। গুয়ার্দিওলাকে অবশ্যই তাঁর পরিকল্পনাকে কার্যকরী করতে হবে, না হলে তার কোচিং ভবিষ্যৎ বড় ঝুঁকিতে পড়বে।