Friday, February 7, 2025

অস্ট্রেলিয়ার চতুর্থ টেস্ট স্কোয়াড: বাদ পড়লেন ম্যাকস্যুইনি, সুযোগ পাচ্ছেন ৭০ বছরে কনিষ্ঠতম ব্যাটার!

Share

অস্ট্রেলিয়ার চতুর্থ টেস্ট স্কোয়াড

ভারত বনাম অস্ট্রেলিয়া বর্ডার-গাভাস্কার ট্রফির চতুর্থ টেস্টকে সামনে রেখে অস্ট্রেলিয়া দলে বেশ কিছু উল্লেখযোগ্য পরিবর্তন আনা হয়েছে। প্রথম তিন টেস্টে ব্যর্থতার কারণে তরুণ ব্যাটার ন্যাথান ম্যাকস্যুইনিকে বাদ দেওয়া হয়েছে এবং তাঁর জায়গায় আরও এক তরুণ প্রতিভা স্যাম কন্সটাসকে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। কন্সটাস তাঁর সম্ভাব্য অভিষেকের মাধ্যমে অস্ট্রেলিয়ান ক্রিকেটে নতুন ইতিহাস রচনা করতে চলেছেন।

ম্যাকস্যুইনির পরিবর্তে কন্সটাস: ইতিহাসের পথে কনিষ্ঠতম ব্যাটার

চলতি সিরিজে নিজের টেস্ট অভিষেক করেছিলেন ন্যাথান ম্যাকস্যুইনি। কিন্তু প্রথম তিন টেস্টে প্রত্যাশিত পারফরম্যান্স দেখাতে ব্যর্থ হন তিনি। বিশেষত, ভারতীয় পেসার যশপ্রীত বুমরার বোলিংয়ের সামনে বারবার অসুবিধায় পড়েন। ছয় ইনিংসে মাত্র ৭২ রান করার কারণে তাঁকে দলে রাখা সম্ভব হয়নি।

তাঁর জায়গায় সুযোগ দেওয়া হয়েছে স্যাম কন্সটাসকে, যিনি সম্প্রতি ১৯ বছরে পা দিয়েছেন। কন্সটাস যদি চতুর্থ টেস্টে মাঠে নামেন, তাহলে তিনি হয়ে উঠবেন অস্ট্রেলিয়ার ইতিহাসে দ্বিতীয় কনিষ্ঠতম ব্যাটার। এর আগে প্রাক্তন অধিনায়ক ইয়ান ক্রেগ ১৭ বছর বয়সে এই কৃতিত্ব অর্জন করেছিলেন। বর্তমান অস্ট্রেলিয়ান অধিনায়ক প্যাট কামিন্সও খুব অল্প বয়সে টেস্ট অভিষেক করেছিলেন, ২০১১ সালে মাত্র ১৮ বছর বয়সে।

নতুন মুখ ও দলে পরিবর্তন

কন্সটাসের অন্তর্ভুক্তি ছাড়াও, তিন বছর পর অস্ট্রেলিয়ান টেস্ট দলে ফিরেছেন পেসার ঝাই রিচার্ডসন। দলে রাখা হয়েছে অলরাউন্ডার বিউ ওয়েবস্টারকেও। তবে এই পরিবর্তন সত্ত্বেও, ম্যাকস্যুইনি ছাড়া প্রথম তিন টেস্টে দলে থাকা আর কোনো খেলোয়াড় বাদ পড়েননি।

ওয়ার্নার-পরবর্তী যুগে একজন স্থায়ী ওপেনার খুঁজে বের করাই এখন অস্ট্রেলিয়ার বড় চ্যালেঞ্জ। ম্যাকস্যুইনি এই দায়িত্বে সফল হতে পারেননি। এবার দেখার পালা, কন্সটাস সেই দায়িত্ব কতটা ভালোভাবে পালন করতে পারেন।

বক্সিং ডে টেস্টে কন্সটাসের সম্ভাব্য অভিষেক

মেলবোর্নের ঐতিহ্যবাহী বক্সিং ডে টেস্টে নিজের টেস্ট অভিষেক হতে পারে বলে বেশ উচ্ছ্বসিত কন্সটাস। সম্প্রতি এই প্রসঙ্গে তাঁকে জিজ্ঞেস করা হলে তিনি বলেন, “এটা একেবারে স্বপ্ন সত্যি হওয়ার মতো। হয়তো ম্যাচের আগে একটু নার্ভাস থাকব, তবে আমি এর জন্য কঠোর পরিশ্রম করেছি।”

কন্সটাসের এমন ইতিবাচক মনোভাব এবং তারুণ্যের উদ্দীপনা তাঁকে বড় মঞ্চে আলাদা করে তুলতে পারে। তরুণ এই ব্যাটারের অভিষেক শুধু তাঁর ব্যক্তিগত ক্যারিয়ার নয়, বরং অস্ট্রেলিয়ান ক্রিকেটের ভবিষ্যৎ দিকনির্দেশনাও নির্ধারণ করতে পারে।

ম্যাকস্যুইনির ব্যর্থতা: সমস্যা কোথায়?

প্রথম তিন টেস্টে ম্যাকস্যুইনির পারফরম্যান্স একেবারেই হতাশাজনক ছিল। তিনি ছয় ইনিংসে মাত্র ৭২ রান করতে সক্ষম হন, যা বর্তমান সিরিজের মানদণ্ডে মোটেই গ্রহণযোগ্য নয়। যশপ্রীত বুমরার বোলিংয়ের সামনে তাঁর দুর্বলতা স্পষ্ট হয়ে ওঠে। এই কারণেই তাঁকে বাদ দিতে বাধ্য হয়েছে নির্বাচকরা।

পরিবর্তনের মাধ্যমে অস্ট্রেলিয়ার প্রত্যাবর্তনের চেষ্টা

ভারতের বিপক্ষে প্রথম তিন টেস্টে লড়াই করেও চ্যালেঞ্জের মুখে পড়েছে অস্ট্রেলিয়া। দলকে আরও শক্তিশালী করে তুলতে এবং ব্যাটিং অর্ডারে গভীরতা আনার জন্যই এই পরিবর্তনগুলি করা হয়েছে। তরুণ কন্সটাসের অন্তর্ভুক্তি দলের জন্য নতুন শক্তি যোগাবে বলে আশা করা হচ্ছে।

অস্ট্রেলিয়ান দলে তরুণ প্রতিভাদের সুযোগ দেওয়া এবং পুরনো খেলোয়াড়দের ফিরিয়ে আনার এই কৌশল নির্বাচকদের নতুন করে ভাবাচ্ছে। বিশেষত ঝাই রিচার্ডসনের ফেরা দলের পেস বিভাগকে আরও ধারালো করে তুলতে পারে।

কন্সটাস কি পারবেন প্রত্যাশা পূরণ করতে?

অস্ট্রেলিয়ান ক্রিকেটে তরুণ প্রতিভাদের সুযোগ দেওয়া নতুন কিছু নয়। তবে স্যাম কন্সটাসের অভিষেক নিয়ে আশা যেমন রয়েছে, তেমনি চাপও কম নয়। তিনি যদি চতুর্থ টেস্টে নিজের সামর্থ্য প্রমাণ করতে পারেন, তাহলে শুধু বর্ডার-গাভাস্কার ট্রফিতে নয়, তাঁর ভবিষ্যৎ অস্ট্রেলিয়ান ক্রিকেটে দীর্ঘস্থায়ী হতে পারে।

তরুণ বয়সে এমন মঞ্চে নিজের নাম খোদাই করা সহজ কাজ নয়। কিন্তু কন্সটাসের ইতিবাচক মনোভাব এবং কঠোর পরিশ্রমের মানসিকতা তাঁকে সাফল্যের পথে এগিয়ে নিয়ে যেতে পারে। অস্ট্রেলিয়া দলে এই পরিবর্তন শেষ পর্যন্ত কতটা কার্যকর হবে, তা সময়ই বলে দেবে।

Read more

Local News