অভিনয় নয়, স্থিতিশীল জীবনের স্বপ্ন!
বলিউডের জনপ্রিয় অভিনেতা সঞ্জয় দত্ত নিজের মেয়ের ভবিষ্যৎ নিয়ে বরাবরই কড়া অবস্থানে থেকেছেন। প্রয়াত অভিনেত্রী রিচা শর্মা ও সঞ্জয়ের একমাত্র কন্যা ত্রিশলা দত্ত একসময় অভিনয়ের জগতে পা রাখার ইচ্ছে প্রকাশ করেছিলেন। কিন্তু সেই ইচ্ছার কথা শুনেই সঞ্জয় সরাসরি সতর্ক করে দিয়েছিলেন মেয়েকে। এমনকি রসিকতার সুরে হলেও তিনি বলেছিলেন, “যদি অভিনয়কে পেশা হিসেবে বেছে নিস, মেরে ঠ্যাং খোঁড়া করে দেব!”
এই হুঁশিয়ারির পিছনে ছিল বাবা হিসেবে তাঁর গভীর উদ্বেগ এবং অভিজ্ঞতা। কয়েক বছর আগের এক সাক্ষাৎকারে সঞ্জয় খোলাখুলি বলেছিলেন, তিনি চান না তাঁর মেয়ে অভিনয় জগতে আসুক। অধিকাংশ তারকা-সন্তানই বাবা-মায়ের পথ অনুসরণ করে অভিনয়ে আসেন— কেউ সাফল্য পান, কেউ আবার হারিয়ে যান। সঞ্জয়ের মতে, এই অনিশ্চিত এবং প্রতিযোগিতামূলক জগৎ তাঁর মেয়ের জন্য নয়।
ত্রিশলার শিক্ষাজীবনও বলিউড থেকে একেবারেই আলাদা পথে গিয়েছে। তিনি বিদেশে ফরেন্সিক সায়েন্স নিয়ে পড়াশোনা করেছেন এবং বর্তমানে যুক্তরাষ্ট্রে সাইকোথেরাপিস্ট হিসেবে কাজ করছেন। সঞ্জয় মনে করেন, ত্রিশলা তাঁর পেশাগত জীবনে সঠিক দিকেই এগোচ্ছেন। তাঁর কথায়, “অভিনয়ের জগতে এসেই বা ও কী করবে? তাছাড়া হিন্দি সিনেমায় কাজ করতে গেলে ভাষার জ্ঞান থাকা দরকার, যা ওর ক্ষেত্রে বাধা হতে পারে।”
সঞ্জয়ের ইচ্ছে ছিল, মেয়ে পড়াশোনা শেষ করে এফবিআই (ফেডেরাল ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন)-এর মতো গুরুত্বপূর্ণ সংস্থায় চাকরি করুক। যদিও ত্রিশলা সেই পথে না গিয়ে অন্য পেশা বেছে নিয়েছেন, বাবা হিসেবে তিনি এখন সন্তুষ্ট। ত্রিশলার সিদ্ধান্ত নিয়ে সঞ্জয় বলেছিলেন, “জানি না, অভিনেত্রী হওয়ার চিন্তাটা ওর মাথায় কে ঢুকিয়েছিল। তবে এখন নিশ্চিতভাবে বলতে পারি, সেই ভাবনা কেটে গেছে। ও এখন নিজের জায়গায় দারুণ করছে, খুব ভালো কেরিয়ার গড়ছে।”
সঞ্জয় ও ত্রিশলার সম্পর্ক সবসময়ই খুব ঘনিষ্ঠ। রিচা শর্মার মৃত্যুর পর বাবা-মেয়ের বন্ধন আরও গভীর হয়েছে। ত্রিশলা প্রায়ই সামাজিক মাধ্যমে বাবার সঙ্গে নিজের মুহূর্ত ভাগ করে নেন এবং বাবার প্রতি শ্রদ্ধা ও ভালোবাসা প্রকাশ করেন। অন্যদিকে, সঞ্জয়ও মেয়ের প্রতি গর্বিত এবং তাকে জীবনের প্রতিটি সিদ্ধান্তে সমর্থন করে যান।
ত্রিশলার অভিনয়ের ইচ্ছা এবং সঞ্জয়ের কড়া অবস্থান কেবল এক বাবা-মেয়ের গল্প নয়, এটি আসলে একজন পিতার দৃষ্টিভঙ্গি, যিনি চান তাঁর সন্তান নিরাপদ ও স্থিতিশীল ভবিষ্যতের পথে হাঁটুক। বলিউডের আলো-আঁধারির জগৎকে খুব কাছ থেকে দেখা সঞ্জয় জানেন, এই শিল্পে সাফল্যের পাশাপাশি ব্যর্থতার সম্ভাবনাও সমান। সেই কারণেই তিনি চাননি, তাঁর মেয়ে সেই অনিশ্চিত পথে পা বাড়াক।
আজ ত্রিশলা নিজের কেরিয়ারে প্রতিষ্ঠিত, অভিনয়ের বাইরে থেকে মানুষের মানসিক স্বাস্থ্যের যত্ন নিচ্ছেন। আর সঞ্জয়ও সন্তুষ্ট যে তাঁর মেয়ে নিজের মতো করে শক্ত ভিত্তির উপর জীবন গড়ছে। সেই পুরনো হুঁশিয়ারি আজ হয়তো রসিকতা বলেই মনে হয়, কিন্তু তার মধ্যেই লুকিয়ে ছিল এক বাবার অগাধ স্নেহ, চিন্তা এবং নিরাপত্তা দেওয়ার ইচ্ছে।
কষা মাংসের রান্নায় পেঁয়াজ কাটতে গিয়ে চোখে জল? জানুন ৫ কার্যকরী টোটকা

