‘অপারেশন সিঁদুর’-এর সময় পাকিস্তানের পরমাণু হামলার হুমকি?
সম্প্রতি সংসদ ভবনে আয়োজিত একটি গুরুত্বপূর্ণ বৈঠকে ‘অপারেশন সিঁদুর’ এবং ভারত-পাকিস্তান সামরিক উত্তেজনা নিয়ে আলোচনা করলেন ভারতের বিদেশসচিব বিক্রম মিস্রী। সোমবার বিকেলে হওয়া এই বৈঠকে শাসক ও বিরোধী দলের একাধিক সাংসদ উপস্থিত ছিলেন। বৈঠকে উঠে আসে বহু স্পর্শকাতর বিষয়, যার মধ্যে অন্যতম ছিল—পাকিস্তান কি সত্যিই ভারতের দিকে পরমাণু অস্ত্র ছোড়ার হুমকি দিয়েছিল?
পিটিআই সূত্রের খবর অনুযায়ী, বৈঠকে বিক্রম মিস্রী পরিষ্কারভাবে জানান যে, পাকিস্তানের পক্ষ থেকে কোনও পরমাণু হামলার হুমকি আসেনি। তাঁর কথায়, “ভারত-পাকিস্তান সংঘর্ষ সব সময়েই প্রচলিত অস্ত্রের ব্যবহারের মধ্যেই সীমাবদ্ধ ছিল। কোথাও পরমাণু অস্ত্র ব্যবহারের আশঙ্কা তৈরি হয়নি।”
বিদেশ সম্পর্কিত এই সংসদীয় কমিটির সভাপতি ছিলেন কংগ্রেস সাংসদ শশী থারুর। উপস্থিত ছিলেন তৃণমূলের অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়, কংগ্রেসের রাজীব শুক্লা ও দীপেন্দ্র হুডা, বিজেপির অপরাজিতা ষড়ঙ্গী ও অরুণ গোভিল এবং AIMIM প্রধান আসাদউদ্দিন ওয়েইসিও। যদিও সরকারিভাবে এই বৈঠক নিয়ে কোনও মন্তব্য করা হয়নি, তবে সূত্রের দাবি, পরমাণু অস্ত্র প্রসঙ্গে এই বৈঠকে সরকারের অবস্থান অত্যন্ত স্পষ্টভাবে তুলে ধরেন বিদেশসচিব।
‘শাহিন’ ক্ষেপণাস্ত্র ও জল্পনা
পহেলগাঁওয়ে হামলার পর ভারতীয় সেনা পাকিস্তান অধিকৃত কাশ্মীরের নয়টি জঙ্গিঘাঁটি গুঁড়িয়ে দেয়। ভারত পাকিস্তানের মূল কোনও সামরিক ঘাঁটিতে আঘাত করেনি। এরপর পাল্টা জবাবে পাকিস্তান ভারতের উপর হামলা চালায়। কয়েকদিন ধরে চলা এই সংঘর্ষ শেষে দু’দেশই যুদ্ধবিরতিতে সম্মত হয়। যদিও সংঘর্ষ থামলেও উত্তেজনা পুরোপুরি কমেনি।
এর মাঝেই ভারতীয় সেনা জানায়, পাকিস্তান তাদের উপর হামলার সময় ‘শাহিন’ ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবহার করেছিল, যা পরমাণু অস্ত্র বহনে সক্ষম বলে মনে করা হয়। যদিও সরকারিভাবে এই ক্ষেপণাস্ত্রের পরমাণু সামর্থ্য সম্পর্কে কিছুই জানানো হয়নি, ফলে এই তথ্য ঘিরে তৈরি হয় নানা জল্পনা। সেই প্রেক্ষিতেই সংসদীয় কমিটিতে বিদেশসচিব এই পরমাণু হুমকির আশঙ্কা নস্যাৎ করেন।
ট্রাম্পের মন্তব্য ও ভারতের জবাব
বৈঠকে আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ প্রসঙ্গ ছিল প্রাক্তন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সাম্প্রতিক মন্তব্য। ট্রাম্প দাবি করেছিলেন, ভারত ও পাকিস্তানের সংঘর্ষ থামাতে আমেরিকা ‘ট্রেড চিপ’ অর্থাৎ বাণিজ্যকে ব্যবহার করেছে। এই বক্তব্য আগেই খারিজ করেছে ভারত সরকার।
সোমবারের বৈঠকেও এই বিষয়টি আলোচনায় আসে। বিক্রম মিস্রী সাংসদদের জানান, “সামরিক উত্তেজনা কমানো নিয়ে সমস্ত সিদ্ধান্ত হয়েছে সম্পূর্ণ দ্বিপাক্ষিক স্তরে। তৃতীয় কোনও দেশের মধ্যস্থতা ছিল না।”
এই বৈঠকে সরকারের অবস্থান যেভাবে স্পষ্ট করা হয়েছে, তা নিঃসন্দেহে আন্তর্জাতিক মঞ্চে ভারতের কূটনৈতিক দৃষ্টিভঙ্গি আরও দৃঢ় করল। ‘অপারেশন সিঁদুর’-এর মতো স্পর্শকাতর অভিযান নিয়ে স্বচ্ছ আলোচনা এবং পরমাণু হুমকির গুঞ্জন খণ্ডন—এ দুটি বিষয়ই বৈঠককে বিশেষ তাৎপর্যপূর্ণ করে তুলেছে।
“শাহরুখ আসলে খুবই মধ্যবিত্ত মানুষ” — বলিউডের বাদশাহর এমন গুণ দেখে মুগ্ধ পরিচালক অনুভব সিন্হা

