অন্ধ্রপ্রদেশের রেড্ডি পরিবারের সম্পত্তি
অন্ধ্রপ্রদেশের রাজনীতি ও প্রভাবশালী রেড্ডি পরিবারের মধ্যে আবারও শুরু হয়েছে এক তীব্র বিরোধ। সরস্বতী পাওয়ার ও অন্যান্য প্রতিষ্ঠানে মালিকানার শেয়ার ও বেঙ্গালুরুর ইয়েলাহাঙ্কায় ২০ একর জমির অধিকার নিয়ে আইনি লড়াইয়ে নেমেছেন অন্ধ্রপ্রদেশের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী ওয়াইএস জগন্মোহন রেড্ডি এবং তার বোন ওয়াইএস শর্মিলা। কোটি কোটি টাকার এই সম্পত্তি নিয়ে চলমান দ্বন্দ্ব বর্তমানে সংবাদমাধ্যমে প্রধান শিরোনামে পরিণত হয়েছে।
২০০৯ সালে কংগ্রেস নেতা এবং রেড্ডি পরিবারের পিতামহ ওয়াইএস রাজশেখর রেড্ডির হেলিকপ্টার দুর্ঘটনায় মৃত্যুর পর পারিবারিক সম্পত্তির দায়িত্ব হাতে আসে জগন্মোহনের। সেই সময় তার মা বিজয়াম্মা ও বোন শর্মিলা পাশে দাঁড়িয়েছিলেন। পরবর্তীতে রাজনৈতিক মতবিরোধ ও কংগ্রেস ত্যাগ করে ২০১১ সালে ওয়াইএসআর কংগ্রেস প্রতিষ্ঠা করেন জগন। শর্মিলা ও বিজয়াম্মা তার নতুন দলের গুরুত্বপূর্ণ অংশীদার হয়ে উঠেছিলেন এবং নির্বাচনী প্রচারেও সক্রিয় ভূমিকা নিয়েছিলেন।
তবে ২০২১ সালে শর্মিলা ওয়াইএসআর কংগ্রেস ত্যাগ করে নিজের একটি নতুন দল গঠন করেন, যা নিয়ে জগন ও শর্মিলার মধ্যে টানাপোড়েন স্পষ্ট হয়। শর্মিলার দল গঠনের পরপরই তাদের মধ্যকার সম্পর্কের ফাটল ক্রমশ আরও গভীর হয়। শর্মিলা নিজে দাবি করেন, তার পিতা চেয়েছিলেন, পরিবারের সকল সম্পত্তি চার নাতি-নাতনির মধ্যে সমান ভাবে ভাগ হোক। কিন্তু জগনের দিকে অভিযোগ তোলা হয়, তিনি সেই ইচ্ছাপত্র অনুযায়ী কাজ করেননি।
সম্প্রতি জাতীয় কোম্পানি আইনি ট্রাইব্যুনালে জগন একটি আবেদনপত্র জমা দেন, যেখানে দাবি করা হয় যে সরস্বতী পাওয়ার সংস্থার শেয়ারগুলো ‘উপহার’ হিসেবে তিনি পেয়েছিলেন এবং সেই শেয়ারগুলোর বৈধতা রয়েছে তার কাছে। তবে, জগন আরও অভিযোগ করেন, শর্মিলা বেআইনিভাবে এই শেয়ারগুলো নিজের নামে হস্তান্তর করিয়ে নিয়েছেন এবং ‘প্রতারণা’ করে বিষয়টিকে জটিলতার দিকে ঠেলে দিয়েছেন।
অন্যদিকে শর্মিলার পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে, তাদের বাবা রাজশেখর রেড্ডির ইচ্ছানুযায়ী চার নাতি-নাতনির মধ্যে সম্পত্তি ভাগ হওয়া উচিত ছিল, যা জগন উপেক্ষা করেছেন। শর্মিলার দাবি, সম্পত্তির মালিকানা নিয়ে তার পদক্ষেপ পুরোপুরি বৈধ এবং বাবার ইচ্ছানুযায়ী। এই পারিবারিক দ্বন্দ্ব ক্রমশ আদালতের দ্বারস্থ হয়েছে, এবং আগামী ৮ নভেম্বর এই মামলার পরবর্তী শুনানি অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা রয়েছে।
এই সম্পত্তি নিয়ে চলমান লড়াই পারিবারিক বিবাদকে আরও প্রকাশ্যে নিয়ে এসেছে।

