Monday, December 8, 2025

অনস্ক্রিন ‘মৃত্যু’ দেখে কাঁদলেন স্ত্রী শ্বেতা! কেন নিজের ‘মৃতদেহ’ দৃশ্য দেখতে পারলেন না রুবেলও?— পর্দার মুহূর্তে বাস্তবের আবেগ

Share

অনস্ক্রিন ‘মৃত্যু’ দেখে কাঁদলেন স্ত্রী শ্বেতা!!

টেলিভিশনের দৈনিক ধারাবাহিক দর্শকদের আবেগে এমনভাবে ছাপ ফেলে যে পর্দার চরিত্রের সুখ–দুঃখ অনেক সময় বাস্তব জীবনের অনুভূতিকে নাড়িয়ে দেয়। ঠিক তেমনই একটি অভিজ্ঞতা হল ‘তুই আমার হিরো’ ধারাবাহিকের সাম্প্রতিক পর্বে, যেখানে নায়ক শাক্য সেনকে— অর্থাৎ অভিনেতা রুবেল দাসকে— মৃত্যুর দৃশ্যে দেখানো হয়। পর্দাজুড়ে শোকের আমেজ, চরিত্রের পরিবার–বন্ধুর কান্না, আর দর্শকের হৃদয়ে শিউরে ওঠা মুহূর্ত।

কিন্তু এই দৃশ্য রুবেলের নিজের পরিবার ও স্ত্রী শ্বেতা ভট্টাচার্য–এর মনে যে কী তীব্র অভিঘাত ফেলেছিল, তা তাঁরা নিজেরাই জানালেন।


🔶 পর্দায় ‘মৃত’ রুবেল— কী দেখানো হয়েছিল?

পর্বে দেখানো হয় শাক্য সেন গুলিবিদ্ধ হয়ে মারা গিয়েছেন। রুবেলকে শায়িত দেখানো হয় নামাবলিতে মোড়া, কপালে চন্দনের ফোঁটা, গলায় মালা, বুকে পুষ্পস্তবক— একেবারে প্রকৃত মৃত্যুশয্যার সাজে।

দর্শক হতবাক হয়ে যায়। সোশ্যাল মিডিয়ায় জল্পনা—
ধারাবাহিক কি শেষ? নাকি নাটকীয় মোড়?
শেষমেশ জানা যায়, শত্রুর ষড়যন্ত্র ভেস্তে দিতে এটি ছিল পরিকল্পিত ‘মৃত্যুনাটক।’


🔶 সে দৃশ্য দেখেই শ্বেতার চোখে জল, উঠে গেলেন মাঝপথে!

রুবেলের স্ত্রী অভিনেত্রী শ্বেতা ভট্টাচার্য স্পষ্ট বললেন—
“হ্যাঁ, আমি অভিনেত্রী। অভিনয় মানে সবটাই মায়া— সেটা জানি।
তবুও নিজের স্বামীকে মৃত অবস্থায় দেখতে আমার একেবারেই ভালো লাগেনি!

সেই দৃশ্যে রুবেলকে দেখানো শুরু হতেই আমি উঠে গিয়েছিলাম।
দিনের শেষে আমিও তো রক্তমাংসের মানুষ!”

শ্বেতা জানান, তাঁর মায়ের অবস্থাও একই। তিনি চ্যানেল ঘুরিয়ে দেন এবং ঘরের অন্য কাজে ব্যস্ত হয়ে পড়েন।


🔶 শাশুড়ির মনেও ব্যথা— দেখা হয়নি সেই দৃশ্য

রুবেলের মাও (শাশুড়ি) নাকি সেই দৃশ্য দেখতে পারেননি।
এই ধরনের প্রতিক্রিয়া নতুন কিছু নয়—
২০২১ সালে ‘শ্রীময়ী’ ধারাবাহিকের রোহিত সেনের মৃত্যুতে টোটা রায়চৌধুরীর শাশুড়িও চ্যানেল বদলে দিয়েছিলেন।
বাস্তব–অভিনয়ের এই সংযোগই মানুষের হৃদয়ে এত গভীর প্রভাব ফেলে।


🔶 কিন্তু রুবেল নিজে কী বললেন নিজের ‘মৃতদেহ’ দেখে?

রুবেল খুবই সংযতভাবে বিষয়টি দেখেছেন। তবে তিনিও স্বীকার করেছেন—
“মৃত্যু একদিন আসবেই, জানি।
কিন্তু নিজের শরীরে পুষ্পস্তবক, নামাবলি জড়ানো—
এগুলো লাগানো মাত্রই মনে হচ্ছিল, যত তাড়াতাড়ি সম্ভব শুটিংটা শেষ হোক।”

অদ্ভুত হলেও সত্যি—
🔸 রুবেল নিজেও পরে সেই দৃশ্য আর দেখেননি!

অভিনেতা জানান,
“আমি পেশাদার। সব ধরনের দৃশ্যেই অভিনয় করতে হয়।
কিন্তু সেই মুহূর্তটা অস্বস্তিকর ছিল, কারণ ওটা অনেকটা বাস্তবের মতো লেগেছিল।”


🔶 দর্শক–ভাবনায় ‘মৃত্যু দৃশ্য’ এত প্রভাব ফেলে কেন?

• কারণ দর্শক চরিত্রকে বাস্তব মানুষ মনে করেন
• পরিবারের সদস্যদের মনে আবেগের টান তৈরি হয়
• অভিনেতার প্রতি ব্যক্তিগত স্নেহ কাজ করে
• পর্দার ‘মৃত্যুচিত্র’ বাস্তবের ভয়, হারানোর অনুভূতি জাগিয়ে তোলে

এমন দৃশ্য তাই শুধু নাটক নয়— কখনও কখনও হৃদয়ের গভীরেও নাড়া দেয়।


🔶 শেষ কথা

রুবেল–শ্বেতার এই অভিজ্ঞতা আবারও মনে করিয়ে দেয়—
অভিনয় যতই কৃত্রিম হোক,
অনুভূতি কখনও কৃত্রিম হয় না।
মনের টান, ভালোবাসা, ভয়— সবটাই সত্যি।

আর সেই কারণেই রিল–লাইফের এক মুহূর্তও রিয়েল–লাইফে জল এনে দেয় কারও চোখে।

Read more

Local News