Thursday, May 1, 2025

অতিরিক্ত পদ নয়, অতিরিক্ত স্বস্তি! মমতা সরকারের বড় জয় সুপ্রিম কোর্টে

Share

অতিরিক্ত পদ নয়, অতিরিক্ত স্বস্তি

অবশেষে স্বস্তির নিশ্বাস ফেলল রাজ্য সরকার। এসএসসি-সংক্রান্ত অতিরিক্ত শূন্যপদ (সুপারনিউমেরারি পোস্ট) তৈরি নিয়ে যে বিতর্ক ঘনীভূত হয়েছিল— তার নিষ্পত্তি ঘটাল দেশের সর্বোচ্চ আদালত। মঙ্গলবার সুপ্রিম কোর্ট জানিয়ে দিল, এই পদ তৈরি সংক্রান্ত বিষয়ে তারা হস্তক্ষেপ করবে না। একইসঙ্গে কলকাতা হাই কোর্টের দেওয়া সিবিআই তদন্তের নির্দেশও বাতিল করে দিল প্রধান বিচারপতি সঞ্জীব খন্নার নেতৃত্বাধীন বেঞ্চ।

২০২২ সালের মে মাসে শিক্ষা দফতর প্রায় ছ’হাজার অতিরিক্ত পদ তৈরি করে নিয়োগের বিজ্ঞপ্তি জারি করে। এই সিদ্ধান্তে রাজ্যপালের অনুমোদন এবং মন্ত্রিসভার সম্মতিও ছিল। তবে হাই কোর্টের বিশেষ ডিভিশন বেঞ্চ সেই পদ তৈরিকে ‘‘আইনবিরুদ্ধ’’ আখ্যা দিয়ে সিবিআই তদন্তের নির্দেশ দিয়েছিল এবং প্রয়োজনে মন্ত্রিসভার সদস্যদের হেফাজতে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদের কথাও বলেছিল। বিষয়টি সুপ্রিম কোর্ট পর্যন্ত গড়ায়। শুরুতে স্থগিতাদেশ মিললেও, এবার স্থায়ীভাবে সেই নির্দেশ খারিজ করে দেওয়া হল।

রাজ্য সরকারের যুক্তি মানল সুপ্রিম কোর্ট

শীর্ষ আদালত স্পষ্ট করে জানায়, রাজ্যপালের সম্মতি এবং মন্ত্রিসভার বৈধ সিদ্ধান্ত থাকায় অতিরিক্ত শূন্যপদ তৈরিতে আইনি অসঙ্গতি নেই। তাই আদালতের হস্তক্ষেপের প্রয়োজনও নেই। এই রায়ের ফলে স্বস্তিতে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং তাঁর মন্ত্রিসভার সদস্যরা, যাঁদের বিরুদ্ধে তদন্তের ছায়া ঘনিয়ে উঠেছিল।

চাকরিহারাদের হতাশা: “আমরাই কেন শাস্তি পাচ্ছি?”

তবে এই রায় পৌঁছে গিয়েছে শহিদ মিনারে অবস্থানরত চাকরি হারানো শিক্ষকদের কাছেও। তাঁদের অনেকেই মনে করছেন, দুর্নীতির মূল অভিযুক্তরা আড়ালেই থেকে যাচ্ছেন, অথচ যাঁরা যোগ্য হয়েও চাকরি হারিয়েছেন, শাস্তি ভোগ করছেন তাঁরাই। আন্দোলনকারী এক সদস্য বলেন, “সুপারনিউমেরারি পদের পক্ষে বা বিপক্ষে আমাদের কোনো অবস্থান নেই। এটা আদালতের বিষয়। কিন্তু আমরা শুধু চাই, যোগ্যদের প্রতি অন্যায় যেন না হয়।”

পদ তৈরি হয়েছিল কাদের জন্য?

এই অতিরিক্ত পদ তৈরির সময়কাল নিয়েও প্রশ্ন উঠেছিল। ২০২২ সালে এসএসসি দুর্নীতি মামলায় তৎকালীন বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় কিছু ‘অযোগ্য’ প্রার্থীর চাকরি বাতিলের নির্দেশ দেন। তার ঠিক পরেই অতিরিক্ত পদ তৈরি হয়। অভিযোগ ওঠে, বেআইনিভাবে নিযুক্ত প্রার্থীদের বাঁচাতেই এই পদক্ষেপ। সেই অভিযোগেই হাই কোর্টের তরফে সিবিআই তদন্তের নির্দেশ আসে।

আইনি যাত্রার ইতি, কিন্তু আন্দোলনের?

মঙ্গলবারের রায়ে স্পষ্ট, সুপ্রিম কোর্ট মন্ত্রিসভার সিদ্ধান্তকে সম্মান জানিয়েছে। তবে আন্দোলনকারীদের অসন্তোষ থেকেই যাচ্ছে। তাঁরা এখনও আশা রাখছেন, রাজ্য সরকার যোগ্যদের একটি নির্ভুল তালিকা প্রকাশ করবে, এবং যাঁরা প্রকৃত যোগ্য প্রার্থী— তাঁদের আবার চাকরিতে ফিরিয়ে আনা হবে।

শেষ কথা?

রাজ্যের পক্ষে এটি নিঃসন্দেহে বড় জয়। মমতা সরকারের উপর থেকে সিবিআই তদন্তের চাপ সরে গেল। কিন্তু চাকরিহারা প্রার্থীদের প্রশ্ন রয়ে গেল— “আমাদের চাকরি ফেরত কবে?” আইনগত জট খুলেছে, এখন নজর রাজনৈতিক সদিচ্ছার দিকে।

পুরুষের ত্বকে ক্যানসারের ঝুঁকি ৫০% বেশি! সানস্ক্রিন মাখছেন ঠিকঠাক?

Read more

Local News