Thursday, May 1, 2025

অজানা আত্মীয়ার উইলে মিলল বাংলো, শুরু হল ৩ বছরের দুঃস্বপ্ন!

Share

অজানা আত্মীয়ার উইলে মিলল বাংলো!

কোনও দিন দেখেননি, এমন এক আত্মীয়ার উইল থেকে হঠাৎই জুটে গেল ২.২ কোটি টাকার এক বিলাসবহুল বাংলো। প্রথমে যেন স্বপ্ন পূরণের আনন্দ! কিন্তু খুব তাড়াতাড়ি সেই স্বপ্নই রূপ নিল দুঃস্বপ্নে। দীর্ঘ আইনি লড়াই, মানসিক যন্ত্রণা, আর অবিশ্বাস্য প্রতারণার গল্প যেন সিনেমাকেও হার মানায়। এই বাস্তব ঘটনাটি ঘটেছে ব্রিটেনের হার্টফোর্ডশায়ারে।

২০২০ সালে মৃত্যুবরণ করেন হার্টফোর্ডশায়ারের এক প্রাক্তন স্কুলশিক্ষিকা মৌরিন। মৃত্যুর আগে উইলে তিনি রেখে যান প্রায় ৪৭ কোটি টাকার সম্পত্তি, যার মধ্যে অন্যতম ছিল একটি ২.২ কোটি টাকার বাংলো। অবাক করার মতো বিষয় হল, উইলে এই বাংলো পেয়েছেন এক তরুণ দম্পতি—টম ও অ্যালেক্স রেনি, যাঁরা কখনও মৌরিনকে দেখেননি, এমনকি তাঁর নামও শোনেননি।

তবে পরে খোঁজখবর চালিয়ে টম জানতে পারেন, মৌরিন ছিলেন তাঁর সৎঠাকুমা। যদিও কখনও তাঁদের মধ্যে কোনো সম্পর্ক বা সাক্ষাৎ হয়নি। সেই অচেনা সম্পর্ক থেকেই এমন বিশাল উপহার—দম্পতি প্রথমে আনন্দে আত্মহারা হয়ে ওঠেন। দ্রুতই তাঁরা সেই বাংলোতে উঠেও যান। কিন্তু সেখানেই ঘটনার মোড় ঘুরে যায়।

তাঁরা বসতি স্থাপন করার কিছু দিনের মধ্যেই হাজির হন মৌরিনের এক প্রাক্তন ছাত্রী। তিনি দাবি করেন, মৌরিন তাঁকে ওই বাংলো দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন। নিজের দাবির সমর্থনে তিনি কিছু নথিপত্রও পেশ করেন এবং সঙ্গে আনেন দুই সাক্ষী। শুরু হয় এক বিতর্কিত আইনি লড়াই। টম-অ্যালেক্স সেই দাবিকে মানতে রাজি না হওয়ায় বিষয়টি আদালতে গড়ায়।

তিন বছর ধরে মামলা চলতে থাকে। এই দীর্ঘ সময়ে টম ও অ্যালেক্স মানসিকভাবে ভেঙে পড়েন। দম্পতির জীবনে চেপে বসে আইনি খরচ, অনিশ্চয়তা ও চাপ। অ্যালেক্স বলেন, “আমাদের কাছে এই তিন বছর ছিল এক দীর্ঘ, বেদনাদায়ক যাত্রা।”

অবশেষে ২০২৪ সালের অক্টোবরে আদালত রায় দেয়—ছাত্রীটির পেশ করা নথি ভুয়ো, এবং দুই সাক্ষীর জবানবন্দিও সাজানো। আদালত ছাত্রীটিকে সাড়ে ছ’বছরের কারাদণ্ডে দণ্ডিত করে। দুই সাক্ষীরও সাজা ঘোষণা করা হয়।

রায়ের পর অ্যালেক্স সংবাদমাধ্যমের সামনে কেঁদে ফেলেন। বলেন, “শেষ পর্যন্ত ন্যায়ের জয় হয়েছে। আমরা কৃতজ্ঞ বিচারব্যবস্থার প্রতি।”

দীর্ঘ লড়াইয়ের পর অবশেষে দম্পতি আইনি ভাবে বাংলোর মালিকানা পান। এখন তাঁরা সেই বাড়িতেই শান্তিতে বসবাস করছেন।

অজানা আত্মীয়ার উপহার হয়তো কপালের খেলা, কিন্তু সেই উপহারকে ঘিরে এমন দুঃস্বপ্ন—জীবন যেন এক চরম নাটক। শেষমেশ সব ঠিক হলেও, রেনি দম্পতির কাছে এটা ছিল বেদনা ও শিক্ষা মেশানো এক কঠিন বাস্তবতা।

মুর্শিদাবাদে ধীরে ধীরে স্বস্তির হাওয়া, ঘরছাড়াদের ফেরাতে প্রশাসনের বিশেষ উদ্যোগ

Read more

Local News