অক্ষয়তৃতীয়ায় ঐতিহ্যের সাক্ষী দিঘা!
সৈকতনগরী দিঘা এবার শুধুমাত্র ভ্রমণপ্রেমীদের গন্তব্য নয়, বরং হয়ে উঠছে এক আধ্যাত্মিক কেন্দ্র। পুরীর জগন্নাথধামের অনুকরণে নির্মিত দিঘার জগন্নাথ মন্দির দ্বারোদ্ঘাটনের প্রাক্কালে বর্ণময় আবহে মুখর। আর সেই দ্বারোদ্ঘাটনের আগে শুরু হল বিশেষ ‘মহাযজ্ঞ’, যার পূর্ণাহুতি দেবেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নিজেই।
মঙ্গলবার সকাল থেকেই জগন্নাথধামে যজ্ঞের সূচনা
মঙ্গলবার সকাল ৯টা থেকেই মন্দির চত্বরে শুরু হয়েছে বিশেষ হোমযজ্ঞ। গোটা দিন ধরে চলবে এই পবিত্র আয়োজন। বিকেলে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় স্বয়ং যজ্ঞের পূর্ণাহুতি দেবেন। জানা গিয়েছে, এই যজ্ঞ শুধু আজকের বিষয় নয়—গত শুক্রবার থেকে চলা ধারাবাহিক আচার্যেরই একটি অংশ। বাস্তুপুরুষকে উৎসর্গ করে অপশক্তির প্রভাব দূর করার পর এখন চলছে মূল যজ্ঞপর্ব, যাতে লক্ষাধিক মন্ত্রোচ্চারণের মাধ্যমে দেবতার আগমন ঘটানো হচ্ছে।
মন্দির প্রাঙ্গণে প্রাণপ্রতিষ্ঠার প্রস্তুতি চূড়ান্ত
আগামীকাল অক্ষয়তৃতীয়া উপলক্ষে মন্দিরে অনুষ্ঠিত হবে প্রাণপ্রতিষ্ঠা। সেই উপলক্ষেই চলছে বিশেষ আচার-অনুষ্ঠান। ইতিমধ্যেই সম্পন্ন হয়েছে বিগ্রহের স্নান, পুজো ও বসার আসনের আরাধনা। মুখ্যমন্ত্রীর উপস্থিতিতেই বুধবার দুপুরে মন্দিরের দ্বার খুলে যাবে জনসাধারণের জন্য। মুখ্যমন্ত্রীর হাত দিয়েই হবে জগন্নাথ-বলরাম-সুভদ্রার প্রথম আরতি।
মমতার প্রশংসায় শিল্প ও সম্প্রীতির মিলনস্থল
সোমবারই দিঘায় পৌঁছেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। মন্দির পরিদর্শন করে তিনি প্রশংসা করেছেন কলিঙ্গ শিল্পে নির্মিত স্থাপত্যশৈলীর। মন্দিরের পুরোহিতদের সঙ্গে আলোচনায় তিনি জানান, “এই মন্দিরে অধ্যাত্মবাদ এবং সম্প্রীতির মিলন ঘটেছে।” তাঁর সঙ্গে ছিলেন রাজ্যের দুই মন্ত্রী অরূপ বিশ্বাস ও চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য এবং রাজ্য পুলিশের ডিজি রাজীব কুমার।
শহরজুড়ে উৎসবের আবহ, নজরদারিতে প্রশাসন
দিঘা এখন উৎসবমুখর। শহরের হোটেল, রাস্তাঘাট, মন্দির এলাকা—সবই সেজে উঠেছে রঙিন আলোয়। তৈরি হয়েছে অস্থায়ী মণ্ডপ, এলইডি স্ক্রিনে সরাসরি সম্প্রচার হবে মন্দির দ্বারোদ্ঘাটনের। পূর্ব মেদিনীপুরের জেলাশাসক পূর্ণেন্দু মাজি ও পুলিশ সুপার সৌম্যদ্বীপ ভট্টাচার্য নিজে নিরাপত্তা খতিয়ে দেখেছেন।
আধ্যাত্মিকতা ছুঁয়ে যাচ্ছে দিঘার অর্থনীতিকেও
এই জগন্নাথ মন্দির শুধু ধর্মীয় কেন্দ্র নয়—এ এক সম্ভাবনার দুয়ার। অনেকেই মনে করছেন, এর ফলে দিঘার স্থানীয় অর্থনীতিতে নতুন দিগন্ত খুলবে। হোটেল ব্যবসা, স্থানীয় হস্তশিল্প, পর্যটন—সবকিছুতেই ইতিবাচক পরিবর্তন আনবে এই মন্দির।
উপসংহার
দিঘার বুকে জেগে উঠছে এক নতুন আধ্যাত্মিক কেন্দ্র, যেখানে মিশে যাচ্ছে সংস্কৃতি, ধর্ম আর উন্নয়ন। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের উপস্থিতিতে জগন্নাথধামের যাত্রা এক ঐতিহাসিক দিকচিহ্ন হয়ে রইল বাংলার পুণ্যভূমিতে।
বিএসএফ কর্তাদের আশ্বাসেও থেমে নেই উৎকণ্ঠা, সোমবার পঞ্জাব যাচ্ছেন পূর্ণমের স্ত্রী