Monday, May 19, 2025

হার্ভার্ডের ‘স্বাধীনতা’র দাম ২২ হাজার কোটি! ট্রাম্পের কোপে কেন পড়ল বিশ্বসেরা বিশ্ববিদ্যালয়টি?

Share

হার্ভার্ডের ‘স্বাধীনতা’র দাম ২২ হাজার কোটি!

আমেরিকার শিক্ষা জগতে যেন ভূমিকম্প! বিশ্বের অন্যতম সেরা এবং প্রাচীনতম বিশ্ববিদ্যালয় হার্ভার্ড এবার সোজা ট্রাম্প প্রশাসনের কোপের মুখে। একে একে বন্ধ হতে চলেছে ২২ হাজার কোটির অনুদান, শুল্কছাড়ের সুবিধা, এমনকি বিদেশি শিক্ষার্থীদের ভর্তি প্রক্রিয়াও।

কিন্তু এমন কী করল হার্ভার্ড, যা এতটাই চটে দিয়েছে সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পকে?

গত কয়েক মাসে আমেরিকার বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে প্যালেস্টাইনের সমর্থনে বিক্ষোভ হয়েছে। ইজ়রায়েলের বিরুদ্ধে আওয়াজ তুলেছে শিক্ষার্থীদের একাংশ। এই আন্দোলনকে ‘ইহুদি বিদ্বেষ’ বলে কড়া ভাষায় নিন্দা করেছে ট্রাম্প প্রশাসন। তাদের অভিযোগ— হার্ভার্ডের মতো প্রভাবশালী প্রতিষ্ঠানগুলিই রাজনৈতিক ঘরানায় পরিণত হচ্ছে। শিক্ষা নয়, চলছে মতাদর্শের প্রচার।

এর মধ্যেই সরকারের পক্ষ থেকে হার্ভার্ডকে পাঠানো হয় একগুচ্ছ শর্তাবলি। বলা হয়, ক্যাম্পাসে রাজনৈতিক পক্ষপাতিত্ব বন্ধ করতে হবে, শিক্ষার্থী ও অধ্যাপকদের মতাদর্শগত অবস্থান বিশ্লেষণ করে ব্যবস্থা নিতে হবে, এমনকি পাঠ্যক্রম ও নিয়োগেও সরকারের চিন্তাধারাকে স্থান দিতে হবে।

এইসব শর্ত মানতে অস্বীকৃতি জানায় হার্ভার্ড। বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রেসিডেন্ট অ্যালেন এম গার্বার স্পষ্ট জানিয়ে দেন— “আমরা আমাদের স্বাধীনতা ত্যাগ করব না। সাংবিধানিক অধিকার বিসর্জন দিয়ে সরকারকে সন্তুষ্ট করব না।”

এর জেরেই একের পর এক শাস্তিমূলক পদক্ষেপ নিতে শুরু করে ট্রাম্প প্রশাসন। ইতিমধ্যে বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে প্রায় ২২০ কোটি ডলারের সরকারি অনুদান। স্থগিত করা হয়েছে ৬ কোটি ডলারের একটি গুরুত্বপূর্ণ গবেষণা চুক্তিও। কয়েকজন বিজ্ঞানী এবং গবেষকের কাজও থামিয়ে দেওয়া হয়েছে। ফলে ভবিষ্যৎ গবেষণা কার্যক্রম নিয়ে দেখা দিয়েছে বড় প্রশ্নচিহ্ন।

শুধু তাই নয়, স্বরাষ্ট্র দফতর থেকে হার্ভার্ড কর্তৃপক্ষকে পাঠানো হয়েছে চিঠি— চাওয়া হয়েছে বিদেশি শিক্ষার্থীদের ভিসা সংক্রান্ত তথ্য। হুঁশিয়ারি দেওয়া হয়েছে, শর্ত মানা না হলে আর বিদেশি পড়ুয়া ভর্তি করা যাবে না। পাশাপাশি বাতিল হতে পারে দু’টি বড় ইকুইটি অনুদানও।

নিজস্ব সমাজমাধ্যম ‘ট্রুথ সোশ্যালে’ ট্রাম্প লিখেছেন, “হার্ভার্ড এখন আর জনস্বার্থে কাজ করছে না। বরং এটি হয়ে উঠেছে বামপন্থী ও জঙ্গি অনুপ্রেরিত রাজনীতির কেন্দ্র।” তাই করছাড়ের সুযোগ বাতিলের হুমকিও দিয়েছেন তিনি।

তবে হার্ভার্ড এখনও নিজেদের অবস্থানে অনড়। বিশ্ববিদ্যালয়ের মুখপাত্র জানিয়ে দিয়েছেন, তাঁরা আইন মেনেই প্রতিক্রিয়া জানাবেন। তবে স্বাধীনতা বিসর্জন দিয়ে সরকারের অনুকূলে হাঁটবেন না। তাঁদের মতে, এই অনুদান বন্ধ করে ট্রাম্প সরকার আসলে মানবসভ্যতার গবেষণাকেই বড় ধাক্কা দিচ্ছে।

হার্ভার্ডের প্রাক্তনী, এমনকি কয়েকজন নোবেলজয়ী গবেষকও এই সিদ্ধান্তের তীব্র প্রতিবাদ জানিয়েছেন।

তারা বলছেন, “এটা শুধু একটা বিশ্ববিদ্যালয়ের বিরুদ্ধে আঘাত নয়— এটা স্বাধীন মত প্রকাশের বিরুদ্ধে এক ভয়ঙ্কর বার্তা।”

এসএসসি নিয়োগে আসছে বড় পরিবর্তন: পরীক্ষার্থীরা এবার উত্তরপত্রের কার্বন কপি পাবেন!

Read more

Local News