সুকেশের সঙ্গে সম্পর্কের জেরে বড় আইনি বিপাকে জ্যাকলিন!
সাম্প্রতিক সময়ে একটি সুরেলা মিউজ়িক ভিডিয়োর মাধ্যমে ভক্তদের মন জয় করলেও, অভিনেত্রী জ্যাকলিন ফার্নান্ডেজ়ের জীবনের বাস্তব রূপ কিন্তু খুব একটা আনন্দময় নয়। কারণ, ২০০ কোটি টাকার আর্থিক তছরুপ মামলায় অভিযুক্ত সুকেশ চন্দ্রশেখরের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ সম্পর্কের জেরে এবার দিল্লি হাই কোর্ট থেকে বড় ধাক্কা খেলেন জ্যাকলিন। বৃহস্পতিবার আদালত স্পষ্ট জানিয়ে দেয়, এই মামলায় তিনি রেহাই পাচ্ছেন না। উলটে তাঁর বিরুদ্ধে তদন্তে বাধা দেওয়ার, তথ্য লুকোনোর, এমনকি প্রমাণ মুছে ফেলার অভিযোগ উঠেছে—যা তাঁর আইনি সমস্যাকে আরও গভীর করে তুলেছে।
অভিযোগের কেন্দ্রে আছেন সুকেশ চন্দ্রশেখর, যিনি বর্তমানে ২০০ কোটি টাকার প্রতারণা মামলায় জেলবন্দি। তদন্তে উঠে এসেছে, সুকেশ নিয়মিত জ্যাকলিনকে বিলাসবহুল উপহার পাঠাতেন—যার মধ্যে ছিল দামি গাড়ি, গয়না এবং ডিজাইনার পোশাক। যদিও প্রথমে এই সম্পর্ক অস্বীকার করেছিলেন অভিনেত্রী, পরে তদন্তের চাপে স্বীকার করেন, সুকেশের সঙ্গে তাঁর ঘনিষ্ঠতা ছিল।
জ্যাকলিনের আইনি বিপদের মূল কারণ হল তাঁর বয়ানে অসঙ্গতি। আদালতের পর্যবেক্ষণ অনুযায়ী, তিনি প্রথমে দাবি করেন, সুকেশকে চিনতেন না। পরে তথ্যপ্রমাণ সামনে আসতেই তিনি স্বীকার করেন, তাঁর সঙ্গে সুকেশের দীর্ঘদিনের যোগাযোগ ছিল। এমনকি আদালত জানিয়েছে, “তিনি ইচ্ছাকৃত ভাবে বিভ্রান্তিকর তথ্য দিয়ে তদন্তের গতিপথ ঘোরানোর চেষ্টা করেছেন।”
এর পাশাপাশি, এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট (ইডি) দাবি করেছে, জ্যাকলিন গুরুত্বপূর্ণ তথ্য গোপন করেছেন এবং এমনকি নিজের ফোন থেকে সংশ্লিষ্ট কিছু তথ্য মুছে দিয়েছেন—যা তদন্তে গুরুতর বাধা বলে বিবেচিত হচ্ছে। আদালতের পর্যবেক্ষণ ছিল অত্যন্ত কড়া। বিচারপতি অনীশ দয়াল বলেন, “এমনকি তদন্তকারী সংস্থাকে বিভ্রান্ত করার মত চেষ্টাও করেছেন আবেদনকারী। একাধিক স্তরে প্রমাণ লুকোনোর ঘটনা সামনে এসেছে।”
প্রসঙ্গত, এই মামলায় জ্যাকলিন শুরু থেকেই আদালতে আবেদন করে নিজেকে নির্দোষ প্রমাণ করার চেষ্টা করছিলেন। তাঁর দাবি ছিল, তিনি প্রতারণা চক্রের শিকার হয়েছেন এবং সুকেশের প্রতারণা সম্পর্কে তিনি কিছুই জানতেন না। কিন্তু আদালতের মতে, একাধিক দফায় জিজ্ঞাসাবাদেও তিনি বিভ্রান্তিকর তথ্য দিয়েছেন এবং ইচ্ছাকৃতভাবে তদন্তকে বাধা দিয়েছেন। তাই তাঁর আবেদন খারিজ করে হাই কোর্ট স্পষ্ট করে দেয়, তদন্তে তাঁর বিরুদ্ধে প্রাথমিক অভিযোগ যথেষ্ট শক্তিশালী।
এই রায়ের ফলে জ্যাকলিনের জন্য ভবিষ্যৎ আইনপ্রক্রিয়া আরও জটিল হয়ে উঠবে বলেই মনে করছেন আইনি বিশেষজ্ঞরা। এখন তাঁকে হয় আদালতে নিয়মিত হাজিরা দিতে হবে, নয়তো জামিনের শর্ত কঠোর হতে পারে।