Friday, November 7, 2025

শেয়ারের মালিকানা নিয়ে দাদা-বোনের দ্বন্দ্ব: নতুন যুদ্ধ অন্ধ্রপ্রদেশে

Share

শেয়ারের মালিকানা নিয়ে দ্বন্দ্ব

অন্ধ্রপ্রদেশের রাজনৈতিক অঙ্গনে এক নতুন বিতর্ক শুরু হয়েছে, যা পুরনো পারিবারিক সম্পর্ককেও চ্যালেঞ্জের মুখে ফেলছে। প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী ওয়াইএস জগন্মোহন রেড্ডি এবং তাঁর বোন ওয়াইএস শর্মিলার মধ্যে সম্পত্তি এবং শেয়ারের মালিকানা নিয়ে শুরু হয়েছে আইনি লড়াই। এই বিতর্কের কেন্দ্রবিন্দু হল কোটি কোটি টাকার সম্পত্তি, যা অন্তর্ভুক্ত রয়েছে সরস্বতী পাওয়ার ও অন্যান্য সংস্থায় শেয়ার এবং বেঙ্গালুরুর ইয়েলাহাঙ্কায় ২০ একর জমি।

দাদা-বোনের মধ্যে দ্বন্দ্বের সূচনা

সম্পত্তির উত্তরাধিকার নিয়ে দাদা ও বোনের মধ্যে শুরু হওয়া এই বিবাদ এখন খবরের শিরোনামে। আইনি লড়াই শুরুর আগে জগন্মোহন এবং শর্মিলার মধ্যে চিঠি আদানপ্রদান হয়েছে। সেই চিঠিতে তারা প্রয়াত বাবা তথা প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী ওয়াইএস রাজশেখর রেড্ডির গুণগান গাইলেও একে অপরকে ‘প্রতারক’ বলে উল্লেখ করেছেন।

অতীতে দোস্তি, এখন দুশমন

জগন্মোহন এবং শর্মিলার সম্পর্ক একসময় খুব ভালো ছিল। ২০০৯ সালে হেলিকপ্টার দুর্ঘটনায় রাজশেখর রেড্ডির মৃত্যুর পর শর্মিলা দাদা জগনের পাশে দাঁড়িয়ে রাজনীতিতে সক্রিয় হন। এরপর ২০১১ সালে, জগন নতুন দল ওয়াইএসআর কংগ্রেস প্রতিষ্ঠা করলে শর্মিলা এবং তাঁদের মা বিজয়াম্মা তাঁকে সমর্থন করেন। ২০১২ সালের বিধানসভা উপনির্বাচনে শর্মিলা জগনের হয়ে প্রচার করেছিলেন, যেখানে দলটি ১৮টি আসনের মধ্যে ১৫টিতে জয়লাভ করে।

সম্পর্কের ফাটল

কিন্তু সম্পর্কের ফাটল শুরু হয় ২০২১ সালে, যখন শর্মিলা বাবার নামে নতুন দল গঠন করেন। এই নতুন দলে মা বিজয়াম্মাও যোগ দেন। শর্মিলার অভিযোগ ছিল, জগন হায়দরাবাদ নিবাসী রাজশেখর রেড্ডির স্বার্থের চেয়ে তেলঙ্গানার স্বার্থকে বেশি গুরুত্ব দিতে চান। এরপর ২০২৪ সালের লোকসভা নির্বাচনের আগে শর্মিলা কংগ্রেসে যোগ দেন এবং অন্ধ্রপ্রদেশ কংগ্রেসের সভানেত্রী পদে নিযুক্ত হন।

আইনি লড়াইয়ে দাদা-বোন

সম্পত্তি নিয়ে দ্বন্দ্ব প্রকাশ্যে আসে যখন জগন ন্যাশনাল কোম্পানি ল ট্রাইব্যুনালে একটি চিঠি পাঠান, যাতে তিনি সরস্বতী পাওয়ারের শেয়ার হস্তান্তরকে ‘অবৈধ’ বলে উল্লেখ করেন। জগনের দাবি, এই শেয়ারগুলি তিনি ‘উপহার’ হিসেবে পেয়েছিলেন এবং সেগুলি ফেরত পাওয়ার জন্য তিনি আদালতের দ্বারস্থ হয়েছেন। অন্যদিকে, শর্মিলা দাবি করেছেন যে, বাবা রাজশেখর রেড্ডি চেয়েছিলেন তাঁর যাবতীয় সম্পত্তি চার নাতি-নাতনির মধ্যে সমানভাবে ভাগ হবে, কিন্তু জগন তা করেননি।

ভবিষ্যৎ কী?

এই আইনি লড়াইয়ের ফলে দুই পক্ষের মধ্যে উত্তেজনা বাড়ছে। ন্যাশনাল কোম্পানি ল ট্রাইব্যুনাল ইতোমধ্যে দুপক্ষকে নোটিস পাঠিয়েছে এবং ৮ নভেম্বর মামলার পরবর্তী শুনানির দিন নির্ধারণ করা হয়েছে। দাদা এবং বোনের মধ্যে এই সংঘাত কেবল তাদের পারিবারিক সম্পর্ককেই নয়, বরং অন্ধ্রপ্রদেশের রাজনৈতিক পরিস্থিতিকেও নতুনভাবে আলোচনায় আনছে। এখন দেখার বিষয়, এই পরিস্থিতি কোন দিকে এগোয় এবং দুই প্রাক্তন রাজনৈতিক নেতার সম্পর্কের ভবিষ্যৎ কী হবে।

Read more

Local News