Monday, November 10, 2025

লিভ ইন সঙ্গীকে খুন! আট মাস পর ফ্রিজ থেকে উদ্ধার মহিলার দেহ

Share

লিভ ইন সঙ্গীকে খুন!

মধ্যপ্রদেশের দেওয়াসে ঘটে গেল এক চমকপ্রদ এবং হৃদয়বিদারক ঘটনা। স্থানীয় বাসিন্দারা গত কয়েক দিন ধরে একটি তীব্র পচা গন্ধের উৎস খুঁজছিলেন, যা পুরো এলাকাজুড়ে ছড়িয়ে পড়েছিল। প্রথমে তাঁরা ভাবেন, কোনো প্রাণী মরেছে, কিন্তু গন্ধের তীব্রতা বাড়তে থাকলে এলাকার কিছু মানুষ তার উৎস খুঁজতে বের হন। একপর্যায়ে তারা পৌঁছে যান পাড়ার একটি ভাড়া বাড়ির দিকে। যতই বাড়ির দিকে এগিয়ে যান, ততই গন্ধটি আরও তীব্র হয়ে উঠছিল। বাড়ির দরজার বাইরে তালা মারা দেখে তাদের সন্দেহ হয়, আর তারা পুলিশে খবর দেন।

পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছানোর পর দরজা ভেঙে ঘরের মধ্যে প্রবেশ করে। সেখানে দেখা যায়, ঘরটি অগোছালো অবস্থায় ছিল এবং কোণে একটি ফ্রিজ রাখা ছিল। গন্ধটি সেখান থেকেই আসছিল। ফ্রিজটি খুলতেই চমকে ওঠে পুলিশ। ভিতরে একটি পচাগলা, দলা পাকানো মৃতদেহ ছিল, যার গলা ও হাত-পা দড়ি দিয়ে বাঁধা ছিল। মৃতদেহটি শাড়ি ও গয়না পরিহিত অবস্থায় ছিল, যা দেখে স্থানীয়রা আরও অবাক হয়ে যায়।

এই ঘটনা ঘটেছে দেওয়াস জেলার একটি বাড়িতে, যেখানে ভাড়া থাকতেন সঞ্জয় পতিদার নামে এক ব্যক্তি। স্থানীয়দের কাছ থেকে পুলিশ জানতে পেরেছে, সঞ্জয় বাড়িটির মালিক ছিলেন না, পুরো বাড়িটাই তিনি ভাড়া নিয়েছিলেন। তার সঙ্গে একটি মহিলা থাকতেন, যার নাম পিঙ্কি প্রজাপতি। সঞ্জয় পিঙ্কিকে নিজের স্ত্রী হিসেবে পরিচয় দিতেন।

স্থানীয়রা জানিয়েছেন, সঞ্জয় উজ্জয়িনীর বাসিন্দা, এবং তিনি বিবাহিত। কিন্তু গত পাঁচ বছর ধরে পিঙ্কির সঙ্গে লিভ ইন সম্পর্কে ছিলেন। সঞ্জয়ের বাড়িতে মাঝেমধ্যে আসতেন, তবে গত বছরের জুন থেকে তার আগমন বন্ধ হয়ে যায়। একই সময় পিঙ্কিকেও আর কেউ দেখতে পাননি। তবে এর জন্য কেউ বিশেষ মাথা ঘামায়নি।

পুলিশের অনুসন্ধানে জানা যায়, সঞ্জয় ২০২৩ সালে ওই বাড়িটি ভাড়া নিয়েছিলেন ধীরেন্দ্র শ্রীবাস্তব থেকে। ধীরেন্দ্র হনদওরে বাস করতেন এবং গত বছর নতুন কোনো ভাড়া আসার কথা ছিল। ধীরেন্দ্র দাবি করেন, সঞ্জয়ের কিছু জিনিসপত্র থাকার কারণে তিনি পাশের ঘরটি দেখাননি এবং সেটি বন্ধ রেখেছিলেন। বেশ কিছুদিন না আসায়, ধীরেন্দ্র বাড়ির বিদ্যুৎও বন্ধ করে দেন, যার ফলে ফ্রিজের মধ্যে রাখা পিঙ্কির দেহের পচন ধরা শুরু করে এবং গন্ধ ছড়িয়ে পড়ে।

পুলিশের প্রাথমিক তদন্তে জানা যায়, পিঙ্কি সঞ্জয়কে বিয়ের জন্য চাপ দিচ্ছিলেন, যা নিয়ে তাদের মধ্যে বিরোধ ছিল। তবে, পিঙ্কির খুনের কারণ কি শুধুই বিয়ের জন্য চাপ দেওয়া, নাকি কোনো অন্য কারণ রয়েছে, তা এখনও তদন্ত করা হচ্ছে।

বর্তমানে অভিযুক্ত সঞ্জয় পালাতক, এবং পুলিশ তাকে গ্রেফতার করতে পারেনি। তদন্তকারী এক আধিকারিক জানিয়েছেন, মহিলার দেহ দেখে অনুমান করা হচ্ছে যে, গত বছরের জুন মাসে তাকে খুন করা হয়েছিল। এরপর দেহটি ফ্রিজে ঢুকিয়ে রাখা হয়, যাতে পচন ধরতে অনেকটা সময় লাগে এবং ঘটনাটি গোপন রাখা যায়।

এই ঘটনা এলাকায় ব্যাপক চাঞ্চল্য সৃষ্টি করেছে এবং এর পরিণতি কি হবে, তা এখনো স্পষ্ট নয়। পুলিশ তদন্তের মাধ্যমে দ্রুত প্রকৃত ঘটনা উন্মোচন করার চেষ্টা করছে।

বাড়ির লাগোয়া জমিতে সবজি বাগান করতে চান? বীজ পোঁতার আগে মনে রাখুন এই ৫টি বিষয়

Read more

Local News