মমতার খোলা চিঠি !
রাজ্যের রাজনীতিতে এক নতুন মোড় এনেছে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সাম্প্রতিক খোলা চিঠি। শনিবার রাতে সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত সেই চার পাতার চিঠি এখন শুধু একটি দলীয় বার্তা নয়—এটি হয়ে উঠেছে তৃণমূল কংগ্রেসের রাজনৈতিক কৌশলের মূল ভিত্তি।
সূত্রের খবর, জনসমক্ষে আসার আগেই চিঠিটি পৌঁছে দেওয়া হয়েছিল দলের সব স্তরের জনপ্রতিনিধি ও শাখা সংগঠনের শীর্ষ নেতৃত্বের হাতে। উদ্দেশ্য একটাই—বিজেপি এবং আরএসএস-এর ‘সাম্প্রদায়িক’ রাজনীতির বিরুদ্ধে সর্বাত্মক প্রচার শুরু করা। দলনেত্রীর এই খোলা বার্তা হয়ে উঠেছে রাজ্যজুড়ে বিজেপি-বিরোধী প্রচারের নির্দেশপত্র।
❝চিঠিই প্রচারের লাইন, ভাষাও নির্ধারিত❞
তৃণমূল নেতৃত্ব স্পষ্ট ভাষায় জানিয়েছে—মমতার চিঠির প্রতিটি শব্দ হবে প্রচারের দিশা। পথসভা হোক বা জনসভা, চিঠির বার্তাকেই তুলে ধরতে হবে জনতার সামনে। এমনকি, এলাকায় এলাকায় চিঠিটি লিফলেট আকারে ছাপিয়ে ছড়িয়ে দেওয়ার কথাও ভাবা হচ্ছে।
মমতা চিঠিতে লিখেছেন, “আরএসএস হলো রাজ্যে মিথ্যা প্রচারের মূল কারণ। তাদের প্ররোচনায় ঘটে যাওয়া দুর্ঘটনাগুলিকে ব্যবহার করে বিজেপি সাম্প্রদায়িক রাজনীতির খেলায় মেতে উঠেছে।” তিনি আরও বলেন, “আমরা সবাই মিলেমিশে থাকতে চাই, ওরা বিভাজনের রাজনীতি চায়।”
❝জঙ্গিপুরে উত্তেজনার পর চিঠির তাৎপর্য❞
ওয়াকফ সংশোধনী আইন ঘিরে জঙ্গিপুর এলাকায় সম্প্রতি উত্তেজনা ছড়িয়েছিল। মুর্শিদাবাদে ঘটেছে হিংসাত্মক ঘটনা। সেই প্রেক্ষিতে এই চিঠিকে অনেকেই দেখছেন সতর্কবার্তা হিসেবে। এক তৃণমূল বিধায়ক বলেন, “এই চিঠির মাধ্যমে দিদি আমাদের বুঝিয়ে দিয়েছেন, বিজেপি কীভাবে বিভাজনের রাজনীতি করছে। আমরা ইতিমধ্যেই এলাকাভিত্তিক প্রচার শুরু করেছি।”
❝সম্প্রীতির বার্তা দিয়েই ভোটের লড়াইয়ে নামছে তৃণমূল❞
মমতা চিঠিতে রাজ্যের মানুষকে আহ্বান জানিয়েছেন, “শান্ত থাকুন, সাম্প্রদায়িক অশান্তি রোখা হবেই।” তিনি সব ধর্মের মানুষকে একসঙ্গে কাজ করার বার্তা দিয়েছেন। পশ্চিমবঙ্গ যে উত্তরপ্রদেশ, রাজস্থান, বিহার কিংবা মণিপুরের মতো নয়, সেটাও তিনি স্পষ্ট করেছেন চিঠিতে। ফলে, তৃণমূল নেতারা এবার বিজেপি শাসিত রাজ্যগুলির আইনশৃঙ্খলার দুরবস্থাকেও প্রচারে তুলে ধরতে প্রস্তুতি নিচ্ছেন।
❝বিজেপির পাল্টা অভিযোগ—রাজনীতির আড়ালে ব্যর্থতা ঢাকার চেষ্টা❞
এই চিঠি এবং প্রচার কৌশলকে ঘিরে বিজেপির তরফে এসেছে তীব্র সমালোচনা। দলের পরিষদীয় মুখ্য সচেতক শঙ্কর ঘোষ বলেন, “একজন মুখ্যমন্ত্রীর নিরপেক্ষভাবে সকল নাগরিকের প্রতি দায়িত্ব পালন করা উচিত। প্রশাসনিক ব্যর্থতা ঢাকতেই তিনি বিজেপি ও আরএসএসের উপর দোষ চাপাচ্ছেন।” তাঁর দাবি, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জনগণকে বিভ্রান্ত করছেন এবং এখন তাঁর পদত্যাগ করা উচিত।
📝 শেষ কথা:
মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের খোলা চিঠি যেমন তৃণমূলের নির্বাচনী প্রচারে নতুন গতি এনেছে, তেমনি রাজ্যের রাজনীতিতে আবার উত্তাপ বাড়িয়েছে। সামনের ভোটের ময়দানে চিঠির প্রতিটি বাক্যই এখন তৃণমূলের অস্ত্র—এটাই তাদের বার্তা: “বিজেপি নয়, আমরা চাই মিলেমিশে একসাথে থাকা।”
এসএসসি নিয়োগে আসছে বড় পরিবর্তন: পরীক্ষার্থীরা এবার উত্তরপত্রের কার্বন কপি পাবেন!