২০৩০ সালের মধ্যে মঙ্গল গ্রহে মানুষ পাঠানোর পরিকল্পনা করছে নাসা। তবে মঙ্গলে বসবাসের আগে বিজ্ঞানীরা এক বিপদ সংকেত দিয়েছেন। রাইস ইউনিভার্সিটির জীববিজ্ঞানী স্কট সলোমন তাঁর গবেষণায় জানিয়েছেন, মঙ্গলে মানুষের বসবাস শুরু হলে মানবদেহে বিপুল পরিবর্তন আসতে পারে, এমনকি মানুষের গায়ের রঙ সবুজ হয়ে যেতে পারে। এর সঙ্গে দৃষ্টিশক্তিরও ব্যাপক অবনতি ঘটতে পারে।
বিজ্ঞানীরা দাবি করছেন, এক-দেড় দশকের মধ্যে চাঁদ ও মঙ্গলে উপনিবেশ গড়ার কাজ শুরু হতে পারে। এরই মধ্যে চিন ও আমেরিকা মঙ্গলে মানব বাসযোগ্য পরিবেশ তৈরির প্রচেষ্টায় ব্যস্ত। গত দুই দশকেরও বেশি সময় ধরে মঙ্গল গ্রহের উপর নজর রেখেছে আমেরিকা। মঙ্গল অভিযানে একাধিক মহাকাশযান পাঠিয়েছে নাসা।
সলোমন তাঁর বই “ফিউচার হিউম্যানস” এ জানিয়েছেন, মঙ্গলের প্রতিকূল আবহাওয়ার কারণে নতুন প্রজন্মের শিশুদের মধ্যে বিভিন্ন ধরনের মিউটেশন বা পরিবর্তন হতে পারে। মঙ্গলে বাস করার ফলে মানবদেহের গঠনে স্থায়ী পরিবর্তন আসবে। মঙ্গলে কম অভিকর্ষ ও মহাজাগতিক রশ্মির উচ্চ বিকিরণের কারণে মানুষের দেহের জিনগত গঠনও পরিবর্তিত হবে।

তাঁর গবেষণা অনুযায়ী, মঙ্গলে বসবাস করলে মানুষের দেহে যে পরিবর্তন ঘটতে পারে, তার মধ্যে রয়েছে মাধ্যাকর্ষণের অভাব, ওজোন স্তরের ঘাটতি, এবং বিকিরণের শিকার হওয়া। এই কারণে ভঙ্গুর হাড়, দুর্বল দৃষ্টিশক্তি এবং ত্বকের রঙ পরিবর্তন হয়ে নতুন ধরনের রং ধারণ করা হতে পারে।
সলোমনের মতে, মঙ্গলে বাস করলে মঙ্গলের কঠিন পরিবেশের সঙ্গে মানিয়ে নিতে মানবদেহে মিউটেশন হতে বাধ্য। এর ফলে, দৃষ্টিশক্তির দুর্বলতা দেখা দিতে পারে কারণ সেখানে ঘনবসতির প্রয়োজনীয়তা বেশি হবে। সুতরাং, মানুষকে দূরের জিনিস দেখতে হবে না।
এই সমস্ত পরিবর্তন মঙ্গলে মানব বসতি গড়ার পরিকল্পনার ক্ষেত্রে নতুন ধরনের চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়াতে পারে। যদিও বিজ্ঞানীরা ভবিষ্যতে মানুষের মঙ্গল অভিযানের প্রতি আশাবাদী, তবে তাদের এ ধরনের পরিবর্তনের সম্ভাবনা এবং মানবদেহের অভিযোজন নিয়ে গবেষণা চালিয়ে যেতে হবে।
এখন প্রশ্ন হলো, মঙ্গলে আমাদের জীবনযাত্রা কেমন হবে? পরিবর্তিত মানবদেহের সঙ্গে আদৌ আমরা খাপ খাইয়ে উঠতে পারব কি? গবেষণা এবং সময়ের প্রেক্ষিতে তা জানা যাবে।


