ভারতের পাঁচ যুদ্ধবিমান গুলি করে নামানোর দাবি পাক প্রধানমন্ত্রীর!
পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ় শরিফ বুধবার সংসদে দাঁড়িয়ে দাবি করলেন, ভারতের ‘অপারেশন সিঁদুর’-এর জবাবে পাকিস্তানি সেনা পাঁচটি ভারতীয় যুদ্ধবিমান গুলি করে নামিয়েছে, যার মধ্যে তিনটি রাফাল। এই দাবি ঘিরে আন্তর্জাতিক মহলে প্রশ্ন উঠলেও পাক সেনার ‘সাফল্যে’ পঞ্চমুখ হয়ে উঠেছেন শাহবাজ়। ভারতের অভিযানকে তিনি আখ্যা দিয়েছেন ‘‘কাপুরুষের মতো হামলা’’।
মঙ্গলবার রাতেই ভারত পাকিস্তান ও পাক অধিকৃত কাশ্মীরের অন্তত ৯টি জঙ্গি ঘাঁটিতে অভিযান চালায়। নাম দেওয়া হয় ‘অপারেশন সিঁদুর’। এই অভিযানে জঙ্গি পরিকাঠামো সম্পূর্ণ ধ্বংস করার দাবি করে ভারত। এর জবাবে বুধবার পাকিস্তানের সংসদে দাঁড়িয়ে পাক প্রধানমন্ত্রী বলেন, “আমাদের ছ’টি শহর লক্ষ্য করে ৮০টি ভারতীয় যুদ্ধবিমান হামলা চালাতে এসেছিল। কিন্তু আমরা সম্পূর্ণ প্রস্তুত ছিলাম। পাক সেনা ভারতকে উপযুক্ত জবাব দিয়েছে।”
শাহবাজ়ের আরও দাবি, “পাক সেনা রাফাল-সহ পাঁচটি যুদ্ধবিমান গুলি করে নামিয়েছে। এর মধ্যে দুটি রাফাল ভেঙে পড়েছে কাশ্মীরে, আর একটি ভারতের ভাতিন্দায়।” যদিও ভারত এই দাবিকে এখনও স্বীকার করেনি এবং প্রতিরক্ষা মন্ত্রকের পক্ষ থেকে আনুষ্ঠানিক প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি। বিশেষজ্ঞদের একাংশ মনে করছেন, পাক সরকারের এই দাবি যুদ্ধোন্মাদনার পরিবেশ তৈরি করার কৌশলমাত্র।
শাহবাজ় শুধু সেনার প্রশংসা করেই থেমে থাকেননি, ভারতকে পাল্টা দোষারোপও করেছেন। তিনি বলেন, “পহেলগাঁও হামলার ঘটনায় কোনও প্রমাণ ছাড়াই পাকিস্তানকে দায়ী করা হয়েছে। অথচ জাফরাবাদে ট্রেন অপহরণের সঙ্গে ভারতের সরাসরি যোগ ছিল। আমাদের কাছে সেই প্রমাণ রয়েছে।”
এই বক্তব্য ঘিরে পাকিস্তানের অভ্যন্তরীণ রাজনীতিতেও তীব্র প্রতিক্রিয়া শুরু হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী একে জাতীয় সম্মান রক্ষার বিষয় বলে উল্লেখ করে বলেন, “এখন আর দলাদলির সময় নয়। ভারতের আগ্রাসনের মুখে সমস্ত রাজনৈতিক দলকে একজোট হয়ে দেশের পক্ষে দাঁড়াতে হবে।”
মঙ্গলবার রাতের অভিযানের পর থেকেই পাকিস্তানের নিরাপত্তা ও প্রতিরক্ষা ব্যবস্থায় জোরদার তৎপরতা শুরু হয়েছে। জাতীয় নিরাপত্তা কমিটির (NSC) বৈঠকে সেনাকে পূর্ণ স্বাধীনতা দেওয়া হয়েছে ভারতের হামলার জবাব দিতে। সেনাবাহিনীর তরফে এই অভিযানের সময় কোনও ক্ষয়ক্ষতির নির্দিষ্ট সংখ্যা জানানো না হলেও, পাক প্রধানমন্ত্রী নিজে এসে পাঁচটি যুদ্ধবিমান নামানোর দাবি তুলে তা আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছে।
তবে ভারতের ‘অপারেশন সিঁদুর’ অভিযানে যে ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে, তা নিয়ে পাকিস্তান সরকারও স্পষ্ট করে কিছু জানায়নি। ভারতের তরফে দাবি করা হয়েছে, এই অভিযান ছিল ‘প্রিসিশন স্ট্রাইক’, যেখানে শুধু জঙ্গি ঘাঁটিই লক্ষ্য ছিল। বেসামরিক এলাকায় কোনও হামলা হয়নি।
সাম্প্রতিক ঘটনাপ্রবাহে ভারত-পাকিস্তান সম্পর্ক আরও উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে। তবে এই পরিস্থিতিতে দুই দেশের মধ্যে কূটনৈতিক স্তরে কোনও আলোচনার ইঙ্গিত পাওয়া যায়নি।
আপনি কি চান আমি ভারতের পক্ষ থেকে কী প্রতিক্রিয়া এসেছে, সেটা এখন খুঁজে দেখি?