Tuesday, November 11, 2025

বৌবাজার বিপর্যয়ের পর ইস্ট-ওয়েস্ট মেট্রোর পশ্চিমমুখী সুড়ঙ্গে রেললাইন পাতার প্রস্তুতি

Share

ইস্ট-ওয়েস্ট মেট্রোর পশ্চিমমুখী সুড়ঙ্গে

কলকাতার ইস্ট-ওয়েস্ট মেট্রোর প্রকল্পে বৌবাজার এলাকায় কয়েকটি বিপর্যয়ের পর পশ্চিমমুখী সুড়ঙ্গের অবস্থা বেশ খারাপ হয়ে গিয়েছিল। এই বিপর্যয়ের কারণে পুরো প্রকল্পের ভবিষ্যৎ নিয়েও কিছুটা অনিশ্চয়তা তৈরি হয়েছিল। কিন্তু দীর্ঘ সময় পর অবশেষে ওই সুড়ঙ্গের সমস্যা মিটিয়ে রেললাইন পাতার জন্য প্রয়োজনীয় প্রস্তুতি শুরু হয়েছে।

গত কয়েক বছরে, বিশেষত খননের সময় ইস্ট-ওয়েস্ট মেট্রোর পশ্চিমমুখী সুড়ঙ্গটি তিনবার বিপর্যয়ের মুখে পড়েছে। এসপ্লানেড থেকে শিয়ালদহের মধ্যে বৌবাজার লাগোয়া অংশে এই বিপর্যয় ঘটে, যা প্রকল্পের কাজের গতিতে বেশ সমস্যা সৃষ্টি করেছিল। তবে, এবার পশ্চিমমুখী সুড়ঙ্গের সমস্যাগুলি মেটানো সম্ভব হয়েছে, এবং রেললাইন পাতার জন্য কাজ শুরু হয়েছে।

এদিকে, পূর্বমুখী সুড়ঙ্গেও কিছু ক্ষতি হয়েছে। বৌবাজার এলাকায় বিপর্যয়ের কারণে এই সুড়ঙ্গেও কিছুটা আকারগত পরিবর্তন ঘটে। দুটি সুড়ঙ্গের আকারে ছোটখাটো বদল ঘটলেও, সেগুলিকে মজবুত করার জন্য ইস্পাতের পাত বসানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। পূর্বমুখী সুড়ঙ্গে বর্তমানে লাইন এবং থার্ড রেল উঠিয়ে নতুন পাত বসানোর কাজ শুরু হয়েছে। পূর্বমুখী সুড়ঙ্গের ভিতরের ৯২ মিটার অংশে ইস্পাতের পাত বসানো হবে।

প্রতিটি পাতের পরিধি ১ থেকে ১.২ মিটার এবং এগুলির ওজন প্রায় ২.২ থেকে ২.৫ টন পর্যন্ত। প্রায় ৩২ মিলিমিটার পুরু এই পাতগুলি বিশেষভাবে তৈরি করা হয়েছে, যাতে সুড়ঙ্গের দেওয়াল শক্তিশালী হতে পারে। সেল ও জিন্দাল স্টিল কোম্পানি থেকে এই পাতগুলি সংগ্রহ করা হয়েছে এবং পরে রাসায়নিক মিশ্রণের মাধ্যমে সুড়ঙ্গ এবং ইস্পাতের পাতের মধ্যে ফাঁকা জায়গা ভরা হবে।

বৌবাজারের বিপর্যয়ের কারণে পশ্চিমমুখী সুড়ঙ্গটি দীর্ঘদিন ব্যবহারযোগ্য ছিল না। তবে, বর্তমানে পশ্চিমমুখী সুড়ঙ্গের সংস্কারের কাজ শুরু হওয়ায়, এসপ্লানেডে এই অংশে পরিষেবা সাময়িকভাবে বন্ধ রাখা হয়েছে। পূর্বমুখী সুড়ঙ্গের কাজ শেষ হলে, আগামী জানুয়ারির মধ্যে দুই সুড়ঙ্গেই ট্রেন চালানোর মহড়া শুরু হবে। মেট্রো সূত্রে জানানো হয়েছে যে, আগামী মার্চ মাসের মধ্যে ইস্ট-ওয়েস্ট মেট্রো পুরোপুরি চালু হতে পারে।

এই প্রকল্পটি কলকাতার মেট্রো নেটওয়ার্কের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ সংযোগ এবং এর সফল বাস্তবায়ন নগরবাসীদের জন্য অনেক সুবিধা নিয়ে আসবে। তবে, এই বিপর্যয়ের কারণে যে সব চ্যালেঞ্জ এসেছে, তা মোকাবিলা করে দ্রুততার সঙ্গে কাজ সম্পূর্ণ করা জরুরি ছিল। এখন, প্রকল্পের ধারাবাহিকতা বজায় রাখতে যে সমস্ত সংস্কার করা হয়েছে, তা সফলভাবে বাস্তবায়িত হলে, এটি কলকাতার পরিবহন ব্যবস্থাকে আরও উন্নত করবে এবং শহরের যাতায়াত ব্যবস্থায় নতুন এক যুগের সূচনা হবে।

Read more

Local News