Friday, November 7, 2025

বিধাননগর পুরসভার সতর্কতা: রানওয়ে জলমুক্ত রাখতে প্রস্তুতি

Share

বিধাননগর জলমুক্ত রাখতে প্রস্তুতি

বিধাননগর পুরসভা সম্প্রতি একাধিক পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে রানওয়ে জলমুক্ত রাখতে, বিশেষ করে ঘূর্ণিঝড় ‘দানা’র সম্ভাব্য প্রভাবে কলকাতায় ভারী বৃষ্টির পূর্বাভাসের মাঝে। প্রশাসন নিশ্চিত করছে যে কলকাতা বিমানবন্দরের রানওয়ে বৃষ্টির কারণে জলমগ্ন না হয়, সেজন্য উচ্চ ক্ষমতার জল নামানোর পাম্প বসানো হয়েছে।

আধিকারিকদের তথ্য অনুযায়ী, কৈখালির কাছে মালিরবাগান এবং রাজারহাটের মণ্ডলগাঁতির দিক থেকে রানওয়ের জল নামে, যা হলদিরামের দিক থেকে নিউ টাউন রোড হয়ে বাগজোলা খালে প্রবাহিত হয়। এই কারণে হলদিরাম এলাকা নিয়ে উদ্বেগ রয়েছে। ওই এলাকায় গড়িয়া-বিমানবন্দর মেট্রোর কাজ চলমান থাকায় নিকাশি ব্যবস্থা ইতিমধ্যেই দুর্বল। সেনাবাহিনীর একটি শিবিরও ওই অঞ্চলে অবস্থিত, ফলে সেখানে জল নামানোর আরও চাপ সৃষ্টি হচ্ছে।

বিধাননগরের মেয়র পারিষদ দেবরাজ চক্রবর্তী জানিয়েছেন, সমগ্র পুর এলাকা জুড়ে দেড়শোটি পাম্প প্রস্তুত রাখা হচ্ছে। বৃষ্টির মাত্রা বুঝে প্রয়োজনে পাম্পের সংখ্যা বাড়ানো হবে। এর ফলে, ভারী বৃষ্টির সময়ে শহরের বিভিন্ন স্থানে জল জমার সম্ভাবনা কমে যাবে এবং শহরের জনজীবন ও যানজটের সমস্যা এড়ানো সম্ভব হবে।

এছাড়া, ঘূর্ণিঝড়ের আবহে রাজারহাটের কালীপুজোর উদ্যোক্তাদের কাছে প্রশাসন সুরক্ষা নিশ্চিত করার নির্দেশনা দিয়েছে। উদ্যোক্তাদের মণ্ডপ তৈরি বন্ধ রাখতে বলা হয়েছে। কল্যাণ লোধ, একজন পুজো উদ্যোক্তা, জানান, “মণ্ডপ তৈরির কাজ বন্ধ রাখা হচ্ছে। যতটা তৈরি হয়েছে, তা যাতে ভেঙে না পড়ে, সেই ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।” তিনি উল্লেখ করেন যে, পুজোর আগে মণ্ডপ ভেঙে গেলে নতুন করে তা তৈরি করা কঠিন হবে।

বিধাননগর পুরসভা বিপর্যয় মোকাবিলার জন্য ১৪টি বিশেষ দল গঠন করেছে, যাতে গাছ ভেঙে পড়া এবং অন্যান্য বিপর্যয় মোকাবিলা করা সম্ভব হয়। বুধবার থেকেই কন্ট্রোল রুম খোলা হয়েছে। বৃহস্পতিবার বেলা সাড়ে ১১টার পর থেকে জরুরি ফোন নম্বরগুলি চালু হবে। প্রয়োজনে বিভিন্ন স্কুলে আশ্রয় শিবির খোলার পরিকল্পনাও নেওয়া হয়েছে।

অন্যদিকে, কালীপুজোর জন্য বারাসতে প্রায় ৭০টি পুজো অনুষ্ঠিত হয়। উদ্যোক্তাদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার জন্য বারাসত পুরসভার চেয়ারম্যান অশনি মুখোপাধ্যায় বলেন, “উদ্যোক্তাদের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে, উপায় থাকলে যতটা সম্ভব মণ্ডপ খুলে ফেলতে। তা না হলে যতটা কাজ হয়েছে, সেই কাঠামো মজবুত রাখতে হবে, যাতে হাওয়ার দাপটে বিপদ না ঘটে।”

এছাড়া, হোর্ডিং সংস্থাগুলিকেও সতর্ক করা হয়েছে যেন তাদের কাজ নিরাপদ থাকে। বিধাননগর পুরসভা পরিস্থিতির উপর নজর রাখার জন্য সব ধরনের প্রস্তুতি নিচ্ছে, যাতে জনগণের সুরক্ষা নিশ্চিত করা যায়।

বিধাননগর এবং বারাসত উভয় এলাকাতেই প্রশাসন দৃঢ়ভাবে কাজ করে যাচ্ছে, যাতে ঘূর্ণিঝড় ‘দানা’র প্রভাবে কোনও অঘটন না ঘটে এবং শহরের জনজীবন স্বাভাবিকভাবে চলতে পারে। প্রশাসনের এই পদক্ষেপগুলো নিশ্চিত করবে যে, কালীপুজোর আনন্দ উৎসবটি কোনো ধরনের বাধার সম্মুখীন না হয়।

সুতরাং, বিধাননগর পুরসভা এবং বারাসত পুরসভা উভয়েই এই ঝড়ের আগে যথাসম্ভব সুরক্ষা ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য প্রস্তুত রয়েছে। শহরবাসীকে সতর্ক করে দিয়ে, বর্ষা মৌসুমের চলাকালীন নিরাপত্তা নিশ্চিত করার জন্য তারা কাজ করে যাচ্ছে।

Read more

Local News