বিদ্যুত্স্পৃষ্ট হয়ে তরুণের মৃত্যু
শহরের জাস্টিস দ্বারকানাথ রোডে এক তরুণের বিদ্যুত্স্পৃষ্ট হয়ে মৃত্যুর ঘটনা শোকের ছায়া ফেলেছে। মৃত তরুণের নাম সৌরভপ্রসাদ গুপ্ত, বয়স মাত্র ২২ বছর। তাঁর বাড়ি ইলাহাবাদে এবং পুজোর সময় বাবার ভুজিয়ার দোকানের কাজে কলকাতায় এসেছিলেন। শনিবার বিকেলে এই মর্মান্তিক দুর্ঘটনা ঘটে।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, সৌরভ যখন দোকানের দিকে ফিরছিলেন, তখন প্রবল বৃষ্টিতে রাস্তায় কোমরসমান জল জমে যায়। তিনি এলগিন রোডের দিক থেকে আসছিলেন এবং ওই রাস্তার জমা জল সামলাতে গিয়ে পাশে রাখা একটি ঠেলাগাড়িতে হাত দেন। এ সময় তাঁকে বিদ্যুত্স্পৃষ্ট করে বোর্ডে লাগানো আলো।
ঘটনার সময় আশেপাশের সিসি ক্যামেরার ফুটেজে দেখা গেছে, ঠেলাগাড়িতে হাত দিতেই সৌরভ ছিটকে পড়ে যান এবং ছটফট করতে করতে চিৎকার করতে থাকেন। স্থানীয়রা প্রথমে কিছু বুঝতে পারেননি, তবে পরে বাঁশ নিয়ে জল থেকে তাঁকে উদ্ধার করতে উদ্যোগী হন। শম্ভুনাথ পণ্ডিত হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসকেরা তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন।
এই ঘটনায় এলাকাবাসীদের মধ্যে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। অভিযোগ উঠেছে, প্রবল বৃষ্টিতে জমা জলে বিদ্যুত্স্পৃষ্ট হয়ে মৃত্যুর ঘটনা ঘটলে শহরের রাস্তায় সাধারণ মানুষের নিরাপত্তা কোথায়? ইতিমধ্যে, পুরসভা এবং সিইএসসি-র মধ্যে দায় ঠেলাঠেলি শুরু হয়েছে। পুরসভা দাবি করেছে, ওই রাস্তায় তাদের কোনও বাতিস্তম্ভ নেই, সিইএসসি-ও দাবি করেছে বিদ্যুতের সমস্ত লাইন রাস্তার নীচ দিয়ে গিয়েছে। বেআইনি ভাবে বহুতলের মিটার থেকে বিদ্যুৎ টেনে নিয়ে গিয়ে বিজ্ঞাপনী বোর্ডে আলো জ্বালানোর ফলেই এই দুর্ঘটনা ঘটেছে বলে জানা গেছে।
প্রত্যক্ষদর্শী রাহুলকুমার প্রসাদ বলেছেন, “বৃষ্টির মধ্যে দোকানের দিকে যাচ্ছিলেন সৌরভ। পড়ে যাওয়ার পরে চিৎকার করতে থাকেন। কিন্তু আমরা বুঝে উঠতে পারিনি। আমরা বাঁশ নিয়ে এগিয়ে যাই। কোনও মতে জলের তলা থেকে ওঁকে খুঁজে বার করা হয়।”
ঘটনার পর সিইএসসি-র এক আধিকারিক জানিয়েছেন, “ওই তার থেকেই গ্লোসাইন বোর্ডটি বিদ্যুত্স্পৃষ্ট হয়ে ছিল। বেঘোরে প্রাণ গিয়েছে যুবকের।” তবে ঘটনার সঙ্গে জড়িত চিকিৎসক বলেছেন, “কী করে কী হয়েছে, বলতে পারব না। যা বলার পুলিশকে বলেছি।”
এই ঘটনার পর স্থানীয়রা নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিয়ে প্রশ্ন তুলছেন। তাঁরা দাবি করেছেন, এ ধরনের দুর্ঘটনা রোধে কর্তৃপক্ষকে দ্রুত পদক্ষেপ নেওয়া উচিত, যাতে ভবিষ্যতে আর কেউ এভাবে প্রাণ হারাতে না হয়।


