Saturday, May 17, 2025

বিজেপির অন্দরে ফের ঝড়! ‘হঠাৎ বিজেপি’ নিয়ে দিলীপের কটাক্ষ, অনুগামীর থানায় অভিযোগ

Share

বিজেপির অন্দরে ফের ঝড়!

দলের অন্দরেই যেন এখন ঝড় উঠেছে। একদিকে প্রাক্তন রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষের সরাসরি কটাক্ষ, অন্যদিকে তাঁর ঘনিষ্ঠ অনুগামীর পুলিশের দ্বারস্থ হওয়া—সব মিলিয়ে বিজেপির মেদিনীপুর জেলা রীতিমতো উত্তাল। আর এই পুরো ঘটনার কেন্দ্রে রয়েছে ‘হঠাৎ বিজেপি’ শব্দবন্ধ, যা নিয়ে কার্যত তোলপাড় বাংলার রাজনীতি।

সম্প্রতি মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে দিঘায় জগন্নাথ ধামের উদ্বোধনে হাজির হয়েছিলেন দিলীপ ঘোষ। আর সেখান থেকেই শুরু এই দ্বন্দ্বের রেশ। অনেকের চোখে এটা ছিল এক ধরনের ‘সৌজন্য সাক্ষাৎ’, তবে দলের একাংশে তা ভালোভাবে নেওয়া হয়নি। শোনা যাচ্ছে, দিলীপের এই উপস্থিতি নিয়ে দলেরই কিছু নেতা-নেত্রী অসন্তুষ্ট।

এরই মধ্যে শনিবার ফের মুখ খোলেন দিলীপ। একদিকে যেমন তিনি ‘নব্য বিজেপি’ বা তাঁর কথায় ‘হঠাৎ বিজেপি’-র বিরুদ্ধে কটাক্ষ করেন, তেমনই তোপ দাগেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের দিকেও। বলেন, “আমি সৌজন্য দেখিয়েছি, কিন্তু উনি রামমন্দির উদ্বোধনে সেটা দেখাতে পারেননি।” একইসঙ্গে নিজের দলের শহিদ দিবস মঞ্চে তাঁকে না-দেখা নিয়েও বলেন, “আমি গত তিন বছর কোনও দলীয় কর্মসূচিতে থাকি না, নিজের কাজ নিজেই করি। মাঝে মাঝে বিশ্রামের প্রয়োজন।”

আর ঠিক তখনই দিলীপের অনুগামী বলে পরিচিত মেদিনীপুর সাংগঠনিক জেলার সভাপতি শমিত মণ্ডল অভিযোগ দায়ের করেন থানায়। তাঁর দাবি, দলের জেলা কার্যালয়ে ঢোকার সময় তাঁকে বাধা দেওয়া হয়, এমনকি তাঁর উপরে হামলার চেষ্টা চলে। শমিতের অভিযোগ, যাঁরা এই হামলা চালিয়েছেন, তাঁরা শুভেন্দু অধিকারীর অনুগামী বলে পরিচিত।

শমিত স্পষ্ট বলেন, “ওঁরা কেউ বিজেপির প্রকৃত কর্মী হতে পারেন না। ওঁরা দুষ্কৃতী। আমরা চার জনকে চিহ্নিত করে এফআইআর করেছি।” যদিও এরপরেই তিনি সুর নরম করে বলেন, “আমি মনে করি না দিলীপদা আর শুভেন্দুদার মধ্যে কোনও লড়াই আছে। হামলার নেপথ্যে কারা আছেন, তা তদন্তেই পরিষ্কার হবে।”

দলের একাংশ আবার মনে করছে, পূর্ব মেদিনীপুরে মণ্ডল কমিটি গঠনে ভারসাম্য রক্ষা করতে গিয়ে ‘আদি’ ও ‘নব্য’ দুই গোষ্ঠীর মধ্যে সংঘাত আরও তীব্র হয়েছে। যদিও বিজেপির তমলুক জেলার সহ-সভাপতি আনন্দময় অধিকারীর দাবি, “দলে শুভেন্দু বা দিলীপ অনুগামী বলে কিছু নেই। সবাই বিজেপির কর্মী।”

তবে পরিস্থিতি বলছে ভিন্ন কথা। শহুরে সভা থেকে জেলা পর্যায়ের কমিটি গঠন—সব জায়গাতেই যেন দিলীপ বনাম শুভেন্দুর ঠান্ডা লড়াই এখন তুঙ্গে। বাইরের মানুষ যা দেখছে, তার অনেক গভীরে আরও অনেক হিসেব-নিকেশ কাজ করছে।

রাজনীতি শুধু মঞ্চে নয়, ঘটে দলীয় কার্যালয়ের ভিতরেও। আর সেখানে কেউ ‘আদি’, কেউ ‘নব্য’। আর মাঝখানে পড়ে যাচ্ছে বিজেপির ঐক্যবদ্ধতার বার্তা। কতটা টিকবে এই ঐক্য, আর কতটা ভাঙবে—তা বলবে আগামী রাজনীতি।

কাশ্মীরে টানা ৮ দিন সংঘর্ষবিরতি লঙ্ঘন, পাঁচ জায়গায় গুলি পাক সেনার! পাল্টা জবাব দিল ভারতীয় সেনাও

Read more

Local News