Saturday, July 12, 2025

বন্দি তরুণীর ফোন, কাঁচি, ডিভিআর উদ্ধার শ্বেতার ফ্ল্যাট থেকে— পর্নকাণ্ডে তদন্তে তৎপর হাওড়া পুলিশ

Share

পর্নকাণ্ডে তদন্তে তৎপর হাওড়া পুলিশ!

হাওড়ার বাঁকড়া ফকিরপাড়ার এক বহুতলের ফ্ল্যাট থেকে সোদপুরের এক তরুণীকে আটকে রেখে মাসের পর মাস ধরে শারীরিক ও মানসিক নির্যাতনের অভিযোগ ঘিরে উত্তাল রাজ্য। অভিযুক্ত শ্বেতা খান এবং তাঁর পুত্র আরিয়ান খানের বিরুদ্ধে উঠেছে ভয়াবহ পর্ন কাণ্ডে জড়িত থাকার অভিযোগও। এবার সেই মামলায় গুরুত্বপূর্ণ তথ্য উদ্ধারে তদন্তে বড়সড় অগ্রগতি করল হাওড়া সিটি পুলিশ

রবিবার গভীর রাতে ডোমজুড় থানার একটি দল হানা দেয় ওই বিতর্কিত ফ্ল্যাটে। সেখান থেকে উদ্ধার হয়েছে নির্যাতিত তরুণীর মোবাইল ফোন, একটি ল্যাপটপ এবং একটি কাঁচি— যে কাঁচি দিয়ে অভিযোগ অনুযায়ী তরুণীর চুল কেটে নেওয়া হয়েছিল। এছাড়াও উদ্ধার হয়েছে ফ্ল্যাটের সিসিটিভি ডিভিআর (ডিজিটাল ভিডিও রেকর্ডার), যা গোটা ঘটনার পুঙ্খানুপুঙ্খ চিত্র তুলে ধরতে পারে বলে মনে করছেন তদন্তকারীরা।

ডিভিআর-এ ফুটেজ খতিয়ে দেখা হবে ফরেনসিক বিশেষজ্ঞদের মাধ্যমে। কোন কোন ব্যক্তি এই ফ্ল্যাটে যাতায়াত করত, ঠিক কী ধরনের কাজ চলত সেখানে— সবকিছু স্পষ্ট করে দেবে ওই রেকর্ডিং। এই ভিডিওই হতে পারে মামলার অন্যতম প্রধান প্রমাণ।

তদন্তকারী অফিসারদের মতে, ডিজিটাল ভিডিও রেকর্ডার মূলত সিসি ক্যামেরা থেকে পাওয়া ফুটেজ সংরক্ষণ করে থাকে। হার্ডডিস্কে সেই ডেটা থেকে বিশ্লেষণ করে সহজেই জানা সম্ভব, কবে, কখন, কে কী করেছে বা ঘটনার সময় কী পরিস্থিতি ছিল।

এই মামলায় অভিযুক্ত শ্বেতা ও আরিয়ান বর্তমানে পুলিশি হেফাজতে রয়েছে। তাদের সঙ্গে ধৃত হয়েছে শ্বেতার নাবালিকা কন্যাও। নির্যাতিত তরুণী নিজেই অভিযোগ জানিয়েছিলেন যে, তাঁকে ভয় দেখিয়ে পর্ন ভিডিও বানানো হতো, এবং মাসের পর মাস ধরে আটকে রেখে নিপীড়ন চালানো হয়েছে। অভিযোগ জানার পরে কোনওরকমে পালিয়ে তিনি সোদপুরে নিজের বাড়িতে ফিরে যান। বর্তমানে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন তিনি।

এই মামলার প্রেক্ষিতে ইতিমধ্যেই অভিযুক্তদের আটদিনের পুলিশি হেফাজতে পাঠিয়েছে আদালত। সেই হেফাজতের সময়েই পুলিশ তদন্তে নেমে এইসব গুরুত্বপূর্ণ প্রমাণ সংগ্রহ করছে।

তদন্তে উঠে এসেছে আরও ভয়াবহ তথ্য— নির্যাতনের সময় তরুণীর মাথার চুল কেটে নেওয়া হয়েছিল মানসিকভাবে ভেঙে দিতে। সেই কাঁচিও উদ্ধার করেছে পুলিশ। এই মামলায় ধৃতদের বিরুদ্ধে মানব পাচার, যৌন নিপীড়ন, এবং তথ্যপ্রযুক্তি আইনে একাধিক ধারায় মামলা রুজু করা হয়েছে।

এই ঘটনায় তীব্র প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে রাজ্যজুড়ে। প্রশ্ন উঠছে, কীভাবে এত দিন ধরে এমন অপরাধের ছায়া ফেলে থাকা সম্ভব হল একটি আবাসনে, কোনও প্রতিবেশী কিছুই টের পেল না? স্থানীয় প্রশাসনের ভূমিকাও প্রশ্নের মুখে।

তদন্ত দ্রুত গতিতে এগিয়ে চলেছে বলে জানিয়েছে পুলিশ। এখন নজর সেই সিসিটিভি ফুটেজে ধরা পড়া দৃশ্যগুলির দিকেই।

বিপন্ন ‘ওয়াই’ ক্রোমোজোম! পুরুষের ভবিষ্যৎ কি তবে বিবর্তনের ছাঁকনিতে?

Read more

Local News