পেটের আকৃতি জানিয়ে দেয় শরীরের গোপন সংকেত!
আমাদের শরীরের মেদ কেবল বাহ্যিক সৌন্দর্যের ব্যাপার নয়, এটি শরীরের অভ্যন্তরীণ স্বাস্থ্য সম্পর্কে গুরুত্বপূর্ণ তথ্যই দেয়। শরীরকে যদি তিন ভাগে ভাগ করা যায়—কাঁধ থেকে বুক পর্যন্ত, কোমর ও পেট, এবং নিতম্ব ও ঊরু—তাহলে এই অংশগুলোতে মেদ জমার ধরন বুঝলে শারীরিক সমস্যার পূর্বাভাস পাওয়া সম্ভব। আসুন জেনে নিই, পেটের আকার কী কী শারীরিক সংকেত দিতে পারে আর কখন সতর্ক হওয়া জরুরি।
১। আপেলের মতো পেট
যারা আপেলের মতো পেটের আদল রাখেন, তাদের শরীরের মধ্যভাগে অর্থাৎ কোমর থেকে পেটের অংশে বেশি মেদ জমে থাকে। এই ধরনের শরীরের মেদ জমার কারণ হতে পারে হরমোনের ভারসাম্যের ব্যাঘাত, বিশেষ করে কর্টিসল হরমোনের উচ্চ মাত্রা যা মানসিক চাপের কারণে বাড়তে পারে। এছাড়া অনিয়মিত খাদ্যাভ্যাস, কম শারীরিক সক্রিয়তা এই মেদ বৃদ্ধির জন্য দায়ী। এই ধরনের মেদ শরীরে নানা রোগের জন্ম দিতে পারে, বিশেষ করে হার্টের সমস্যা, ডায়াবেটিসের আশঙ্কা বেড়ে যায়। তাই আপেলের মতো পেট হলে অবশ্যই সতর্ক হওয়া উচিত এবং শারীরিক স্বাস্থ্য নিয়মিত পরীক্ষা করানো উচিত।
২। ন্যাসপাতির মতো পেট
এ ধরনের শরীরের মেদ কোমর থেকে নিতম্ব ও ঊরুর দিকে বেশি জমে। শরীরের মধ্যভাগে মেদ তুলনামূলক কম। এর পেছনে ইস্ট্রোজেন হরমোনের বেশি মাত্রাই মূল কারণ। নারীদের ক্ষেত্রে এই ধরনের গঠন বেশি দেখা যায়। যদিও দেখতে এই ধরনের পেট বেশি উদ্বেগের কারণ না মনে হলেও, ইস্ট্রোজেনের উচ্চ মাত্রার কারণে ক্যানসার, বন্ধ্যাত্বের মতো সমস্যা হতে পারে। তাই যারা ন্যাসপাতির মতো গঠন রাখেন, তাঁদেরও নিয়মিত স্বাস্থ্যপরীক্ষা করা দরকার।
৩। বালুঘড়ির মতো পেট
এই ধরনের শরীরের মেদ গোটা শরীরেই সমানভাবে ছড়িয়ে থাকে। কোমরের নীচের অংশ, হাত, বুক—সব জায়গায় ভারসাম্যপূর্ণ ওজন থাকে। সাধারণত নিয়ম মেনে খাওয়া-দাওয়া এবং নিয়মিত শরীরচর্চার মাধ্যমে এই ধরনের শরীর সুস্থ থাকে।
৪। লম্বাটে আয়তাকার পেট
এই ধরনের গঠনে শরীরের কোনো অংশে তীব্র ঢালু বা মেদ জমে না। পেশির ঘনত্ব বেশি থাকে, যার ফলে শরীর দেখতে মজবুত এবং সুগঠিত লাগে। মেদ থাকলেও তা শরীরের ওপর সমানভাবে ছড়িয়ে থাকে, তাই এই ধরনের গঠনকেও স্বাস্থ্যকর বলা যেতে পারে।
৫। জালার মতো পেট
গোলাকার পেটের বাইরে ভুঁড়ি বের হয়ে থাকলে বোঝা যায় শরীরে জল জমার সমস্যা হতে পারে। অতিরিক্ত ক্যালরি গ্রহণ, হজমে সমস্যা অথবা জিনগত কারণে শরীরের বিপাকের গতি ধীর হতে পারে। জল জমার কারণে শরীরে ফুলে যাওয়া বা ওজন বেড়ে যাওয়া দেখা দিতে পারে, যা সময় মতো চিকিৎসা না করলে গুরুতর সমস্যা তৈরি করতে পারে।
কোন পেটের আকারে সতর্ক হওয়া উচিত?
শরীরের মধ্যভাগে মেদ জমার অর্থাৎ আপেলের মতো পেটের ক্ষেত্রে বিশেষ সতর্ক হওয়া দরকার। কারণ এই ধরনের মেদ হার্টের সমস্যা, ডায়াবেটিসসহ অন্যান্য জটিলতা ডেকে আনতে পারে। বিশেষত যাঁদের ইতিমধ্যেই হৃদরোগ রয়েছে, তাঁদের জন্য এই ধরনের মেদ আরও বিপজ্জনক।
তবে আশার কথা হলো, সময়মতো সচেতন হলে ও স্বাস্থ্যকর জীবনযাপন করলে এই ঝুঁকি অনেকাংশে কমানো সম্ভব। নিয়মিত ব্যায়াম, সুষম খাদ্যাভ্যাস, মানসিক চাপ কমানো—এসব পদক্ষেপ মেনে চলা হলে শরীর সুস্থ রাখা যায়।
সরস্বতী নদীর দূষণ নিয়ন্ত্রণের পরিকল্পনা কাগজেই সীমাবদ্ধ? বাস্তব কাজ এখনও অধরা