Friday, June 13, 2025

পার্ক স্ট্রিটের হোটেলে ‘সিবিআই’-এর নামে ছক! কেন্দ্রীয় কর্তা ডিজিটাল বন্দি, খোয়া গেল ২৫ লক্ষ টাকা

Share

পার্ক স্ট্রিটের হোটেলে ‘সিবিআই’-এর নামে ছক!!

রাজ্যের প্রশাসনিক এবং অর্থনৈতিক প্রাণকেন্দ্র কলকাতা এবার সাক্ষী হল এক চাঞ্চল্যকর ডিজিটাল প্রতারণার। প্রযুক্তির ছায়ায় ছদ্মবেশ ধারণ করে একদল প্রতারক ফাঁদে ফেলল কেন্দ্রীয় সরকারের এক উচ্চপদস্থ আধিকারিককে। সিবিআই পরিচয়ে তাঁকে বন্দি করে পার্ক স্ট্রিটের একটি হোটেলে আটকে রেখে অনলাইনে হাতিয়ে নেওয়া হল ২৫ লক্ষ টাকা। এই ঘটনায় পুলিশ ইতিমধ্যে গ্রেফতার করেছে আট জনকে, যাঁরা প্রত্যেকেই রাজস্থানের জোধপুরের বাসিন্দা।

ঘটনাটি প্রকাশ্যে আসে ২৩ মে, যখন পর্ণশ্রী থানায় অভিযোগ দায়ের করেন তেঁতুলতলার বাসিন্দা শৌভিক শিকদার, যিনি ইন্ডিয়ান ব্যুরো অফ স্ট্যান্ডার্ডস-এর ডেপুটি ডিরেক্টর। তিনি জানান, ২২ মে তাঁর মোবাইলে একাধিক অচেনা নম্বর থেকে ফোন আসে। ফোনের ওপারে থাকা ব্যক্তিরা নিজেদের কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা, অর্থাৎ সিবিআইয়ের অফিসার বলে পরিচয় দেন। তাঁরা দাবি করেন, শৌভিকের নামে একটি পার্সেল ধরা পড়েছে যাতে নাকি মাদক রয়েছে। সেই অভিযোগের তদন্তে তাঁর ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট ‘যাচাই’ প্রয়োজন।

এই যুক্তিকে ঘিরেই শুরু হয় প্রতারণার নীলনকশা। ভয় ও চাপের পরিবেশ সৃষ্টি করে তাঁকে পার্ক স্ট্রিটের এক হোটেলে আসতে বলা হয়, যেখানে তাঁকে ‘ডিজিটাল বন্দি’ করে রাখে অভিযুক্তেরা। এরপর শুরু হয় অনলাইনে টাকা নেওয়ার পালা—দফায় দফায় পাঠাতে হয় মোট ২৫ লক্ষ টাকা। প্রতারকেরা বলেন, অ্যাকাউন্ট যাচাইয়ের পর পুরো অর্থ ফেরত দেওয়া হবে, কিন্তু বাস্তব চিত্র ছিল সম্পূর্ণ আলাদা।

তদন্তে নেমে পুলিশ ৫ জুন রাতে নিউটাউনের ইকো পার্ক এলাকা থেকে প্রথমে তিন জনকে গ্রেফতার করে—নরপত সিংহ, রাজেন্দ্র সোনি এবং হরিশ কুমার। তাঁদের জেরা করে হাওড়ার গোলাবাড়ি এলাকা থেকে আরও পাঁচ জনকে ধরা হয়—মনোহর, সংগ্রাম সিংহ, সুরজ, দিলীপ এবং জিতেন্দ্র। অভিযুক্তদের সকলেই পেশাদার প্রতারক, যাঁরা ভুয়ো পরিচয়ে বিভিন্ন শহরে ঘুরে বেড়িয়ে প্রতারণা চালিয়ে যাচ্ছিলেন।

পুলিশের তদন্তে উঠে এসেছে, তাঁরা প্রথমে নিউটাউনে ঘর ভাড়া নিয়ে বসবাস শুরু করেন, এরপর প্রতিদিন ঠিকানা বদলাতে থাকেন যাতে নজর এড়িয়ে যাওয়া যায়। পরে তাঁরা দুই দলে বিভক্ত হয়ে হাওড়া এবং নিউটাউন এলাকায় সমান্তরাল প্রতারণা চালান। তাঁদের কাছ থেকে উদ্ধার হয়েছে দুটি পিওএস মেশিন, পাঁচটি স্মার্টফোন, বিভিন্ন ব্যাঙ্কের চেকবই, পাশবই, আধার, প্যান এবং ভোটার কার্ডের জাল নথির প্রতিলিপি।

শুক্রবার ধৃতদের আলিপুর আদালতে পেশ করা হলে বিচারক তাঁদের ১৮ জুন পর্যন্ত পুলিশ হেফাজতে রাখার নির্দেশ দেন। পুলিশের তরফে জানানো হয়েছে, এই চক্রের পেছনে আরও কেউ জড়িত থাকতে পারে এবং তদন্ত সেই দিকেও এগোচ্ছে।

৪০ বছর পরে ফের এক ভারতীয় মহাকাশে! শুভাংশুকে নিয়ে উৎক্ষেপণের প্রস্তুতিতে তুঙ্গে ‘ড্রাগন

Read more

Local News