পাতিলেবু খেলে মাইগ্রেন কমে?
এক দিকে কপাল, কখনও মাথার পিছনে—নানা রকম যন্ত্রণা নিয়ে যারা মাইগ্রেনে ভোগেন, তাঁদের কাছে ব্যথা কমানোর জন্য টোটকা মানেই যেন এক আশার আলো। সম্প্রতি এক সমাজমাধ্যম ব্যবহারকারী দাবি করেছেন, সব ওষুধ ব্যর্থ হওয়ার পর পাতিলেবুর রস খেয়েই নাকি তাঁর মাইগ্রেনের ব্যথা হঠাৎ কমে যায়। সঙ্গে সঙ্গেই ভাইরাল হয়ে যায় সেই পোস্ট। তবে প্রশ্ন উঠছে—এই টোটকায় কতটা যুক্তি আছে?
পাতিলেবু খেলে কি সত্যিই ব্যথা কমে?
মাইগ্রেনের ক্ষেত্রে বহু মানুষই নানা ঘরোয়া উপায় অবলম্বন করেন। কেউ বলেন কফি খান, কেউ বলেন বরফ ঘষুন, কেউ বা পাতিলেবুর রস পান করার পরামর্শ দেন। কিন্তু চিকিৎসা বিজ্ঞানে এর কোনও প্রমাণ মেলে না।
নিউরোলজিস্ট সুবর্ণ গোস্বামীর মতে, “এ ধরনের টোটকার কোনও বৈজ্ঞানিক ভিত্তি নেই। বরং মাইগ্রেনের মূল কারণগুলো শনাক্ত করে তাতেই প্রতিরোধের পথ খোঁজা উচিত। বিশেষ করে যাদের নিয়মিত সমস্যা হয়, তাঁদের উচিত চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া।”
পাতিলেবুতে থাকা উপাদান কি ক্ষতিকর?
এই বিষয়ে হৃদ্রোগ বিশেষজ্ঞ মাহয়ার মাদ্দাহ্ আলি আরও এক ধাপ এগিয়ে বলেন, “পাতিলেবুতে রয়েছে টায়রামাইন নামের একটি উপাদান, যা নোরপাইনফ্রাইন হরমোনের নিঃসরণ বাড়াতে সাহায্য করে। এটি রক্তচাপ বাড়িয়ে দিতে পারে, যার ফলে উল্টে মাথাব্যথা আরও তীব্র হতে পারে।”
ফরিদাবাদের স্নায়ুরোগ চিকিৎসক দীপক যাদবেরও একই মত। তাঁর মতে, “পাতিলেবু খেলে মাইগ্রেন কমবে—এমন কোনও প্রমাণ নেই। বরং গরম সেঁক বা উষ্ণ জলে পা ডুবিয়ে রাখলে অনেক সময় আরাম পাওয়া যায়।”
গরম না ঠান্ডা—কোনটা বেশি উপকারী?
এই প্রশ্নেও চিকিৎসকদের মতানৈক্য রয়েছে। কেউ বলেন গরম সেঁক দিন, কেউ বলেন ঠান্ডা সেঁকই ভালো। সুবর্ণ গোস্বামী মনে করেন, “যেখানে ব্যথা হচ্ছে, সেখানে ঠান্ডা সেঁক দিলে উপকার হয়।” তবে রোগীর প্রতিক্রিয়ার উপর নির্ভর করেও পদ্ধতি পাল্টানো যেতে পারে।
কী করবেন মাইগ্রেন কমাতে?
চিকিৎসকদের পরামর্শ অনুযায়ী, আগে বুঝতে হবে কী কারণে আপনার মাইগ্রেন হয়। অতিরিক্ত আলো, শব্দ, স্ক্রিন টাইম, খিদে পেয়ে যাওয়া, না ঘুমোনো—এসবই ট্রিগার হতে পারে। তাই এগুলি চিহ্নিত করে তা এড়িয়ে চলাই প্রথম ধাপ।
মাইগ্রেন যদি ক্রমাগত সমস্যা তৈরি করে, তবে ঘরোয়া টোটকায় নয়, দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হওয়াই বুদ্ধিমানের কাজ।
সারা দিন “স্নান করে বেরোলাম” লুক—কীভাবে পাবেন তরতাজা ও সতেজ চুলের জাদু?