Saturday, June 14, 2025

পাকিস্তানি গুপ্তচরের সঙ্গে ঘনিষ্ঠতা, বিদেশ সফরও একসঙ্গে! তথ্য পাচারে গ্রেফতার ইউটিউবার জ্যোতি মলহোত্র

Share

গ্রেফতার ইউটিউবার জ্যোতি মলহোত্র!

সামাজিক মাধ্যমে পরিচিত মুখ, ইউটিউব ট্র্যাভেল ভ্লগার হিসেবে যার পরিচিতি ‘ট্রাভেল উইথ জো’ নামে— সেই জ্যোতি মলহোত্র এখন এক বিস্ময়কর বিতর্কের কেন্দ্রে। অভিযোগ, হরিয়ানার এই সমাজমাধ্যম প্রভাবী পাকিস্তানি গুপ্তচরদের সঙ্গে গোপনে যোগাযোগ রেখে ভারতের সংবেদনশীল তথ্য পাচার করতেন। সম্প্রতি তাঁকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ, এবং তাঁর বিরুদ্ধে দেশদ্রোহিতার মতো গুরুতর অভিযোগ উঠেছে।


কীভাবে ফাঁস হলো তথ্য পাচারের চক্র?

তদন্তকারী সংস্থার দাবি, পঞ্জাব ও হরিয়ানায় দীর্ঘদিন ধরেই সক্রিয় ছিল একটি পাক গুপ্তচরচক্র, যার সঙ্গে যুক্ত ছিলেন জ্যোতিও। পুলিশের দাবি, ২০২৩ সালে জ্যোতি পাকিস্তানে সফর করেছিলেন এবং তখনই দিল্লিতে পাকিস্তান হাই কমিশনের আধিকারিক এহসান-উর-রহিম ওরফে ‘দানিশ’-এর সঙ্গে তাঁর ঘনিষ্ঠতা গড়ে ওঠে। এই দানিশকেই সম্প্রতি ভারত সরকার ‘অবাঞ্ছিত’ ঘোষণা করেছে। অভিযোগ, তাঁর মাধ্যমেই পাক গুপ্তচর সংস্থার অন্যান্য কর্মকর্তাদের সঙ্গে জ্যোতির যোগাযোগ তৈরি হয়।


প্রযুক্তির আড়ালে চক্রান্ত

তদন্তে উঠে এসেছে, জ্যোতি হোয়াটসঅ্যাপ, টেলিগ্রাম ও স্ন্যাপচ্যাট-এর মতো অ্যাপে পাকিস্তানি চরদের সঙ্গে যোগাযোগ রাখতেন। তারা যাতে ধরা না পড়ে, সে জন্য তাদের নম্বর জ্যোতি ভিন্ন নামে সেভ করে রাখতেন। যেমন, এক ব্যক্তির নম্বর তিনি ‘জাট রানধাওয়া’ নামে সেভ করেছিলেন। সন্দেহ, ওই ব্যক্তি আসলে পাক গুপ্তচর শাকির ওরফে রানা শাহবাজ।

‘ইন্ডিয়া টুডে’র রিপোর্ট অনুসারে, তদন্তকারীরা আরও সন্দেহ করছেন— জ্যোতির এক পাক গুপ্তচরের সঙ্গে “ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক” তৈরি হয়েছিল এবং তাঁরা একসঙ্গে বিদেশ সফরেও গিয়েছিলেন। বালি এবং ইন্দোনেশিয়ায় ভ্রমণের সময়ও এক পাকিস্তানি চর তাঁর সঙ্গেই ছিলেন বলে মনে করা হচ্ছে।


ছড়িয়ে পড়া জাল, আরও গ্রেফতার

এই ঘটনায় শুধু জ্যোতি নন, পুলিশ আরও পাঁচজনকে গ্রেফতার করেছে। সন্দেহ, এই চক্রের মূল নেটওয়ার্ক পঞ্জাব, হরিয়ানা ও রাজস্থানে বিস্তৃত। তদন্তকারীরা এখন খতিয়ে দেখছেন, সম্প্রতি যে সব পাকিস্তান-যোগের অভিযোগে আরও কয়েক জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে, তাঁদের সঙ্গে জ্যোতির কোনও সংযোগ রয়েছে কি না।


প্রশ্ন উঠছে, নিরাপত্তা ব্যবস্থার ঘাটতি নিয়ে

এই ঘটনার পর, দেশের নিরাপত্তা নিয়ে সাধারণ মানুষের মনে উদ্বেগ বেড়েছে। প্রশ্ন উঠছে— একজন সমাজমাধ্যম প্রভাবী, যিনি দেশ-বিদেশে ঘুরে বেড়ান এবং লাখো দর্শক তাঁর ভিডিও দেখেন, তিনি কীভাবে গোপনে এমন গুরুত্বপূর্ণ তথ্য পাচার করলেন? কীভাবে একাধিক পাক চর তাঁর এত কাছাকাছি আসতে পারল?


এখন সমস্ত নজর তদন্তের দিকেই। জ্যোতি মলহোত্রর বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রমাণিত হলে তা হবে ভারতীয় সাইবার এবং নিরাপত্তা ব্যবস্থার এক বড়সড় ধাক্কা। সমাজমাধ্যমের এই উলটো মুখ আমাদের মনে করিয়ে দেয়— ভার্চুয়াল জগতের আড়ালে লুকিয়ে থাকতে পারে অনেক বড় বিপদ।

জেনিভার নিলামে ঝলসে উঠল ‘মেডিটেরেনিয়ান ব্লু’, ১০ ক্যারাটের হিরের দাম ১৮৪ কোটি!

Read more

Local News