পন্থের ব্যাটে চুপ, লখনউয়ের স্বপ্ন ফিকে!
প্রত্যাশার চূড়ায় উঠে শুরু করেছিলেন, অথচ এখন একরাশ হতাশা। ঋষভ পন্থকে ২৭ কোটি টাকায় কিনে লখনউ সুপার জায়ান্টসের নেতৃত্ব তুলে দেওয়া হয়েছিল যাঁর হাতে, সেই পন্থ এখন আইপিএলের সবচেয়ে বড় ব্যর্থতা। একের পর এক ম্যাচে রান না পাওয়ায় কেবল নিজে ব্যর্থ নন, টানছেন নিচে পুরো দলকেও। পঞ্জাব কিংসের বিরুদ্ধে আরও একটি হার—এবার ৩৭ রানে—লখনউয়ের প্লে-অফে ওঠার স্বপ্নকে করে তুলল ধোঁয়াশাপূর্ণ।
এই ম্যাচেও যেন নিজেকে হারিয়েই ফেলেছেন পন্থ। ব্যাট হাতে নেমে ১৭ বলে করেছেন মাত্র ১৮ রান। অথচ এর মধ্যে ১৪ রান এসেছে বাউন্ডারি থেকে—মানে দৌড়ে রান তো দূরের কথা, ফাঁকা জায়গা খুঁজেও বেরোতে পারছেন না। একটানা ব্যর্থতার ছায়া স্পষ্ট তাঁর শরীরী ভাষাতেও। ওমরজাইয়ের বলে তাঁর আউট হওয়ার ধরন যেন উপমা হয়ে রইল বর্তমান অবস্থা বোঝাতে—ব্যাট গেল একদিকে, বল আরেকদিকে, আর ক্যাচ ধরা পড়ল অনায়াসে!
এই মুহূর্তে আইপিএলের সর্বোচ্চ রান সংগ্রাহকদের তালিকায় পন্থ ৬০ নম্বরে, যেখানে তিনি একমাত্র ব্যাটার যার স্ট্রাইক রেট ১০০-র নিচে। ১১ ম্যাচে মাত্র ১২৮ রান করেছেন ১২.৮০ গড় ও ৯৯.২২ স্ট্রাইক রেটে। চেন্নাইয়ের বিরুদ্ধে একটি ইনিংসে ৬৩ না করলে ছবিটা আরও করুণ হত।
প্রথমদিকে মিচেল মার্শ, মার্করাম, পুরানদের পারফরম্যান্সে পন্থের ফর্মের অভাব চাপা পড়ে গিয়েছিল। কিন্তু সময় যত গড়িয়েছে, তাঁরাও ফিকে, ফলে দল হয়ে পড়েছে ছন্নছাড়া। অধিনায়কত্বেও যেন নেই কোনও কৌশল। বিশ্নোইয়ের মতো স্পিনার থাকা সত্ত্বেও একগাদা পেসার খেলানো, মায়াঙ্ক যাদবের চোট থেকে ফিরে ফর্মহীন ফিরে আসা, আর প্রতিপক্ষের ব্যাটসম্যানদের বিরুদ্ধে কোনও বিকল্প পরিকল্পনার অভাব—সব মিলিয়ে প্রশ্ন উঠছে নেতৃত্বেও।
যেখানে একসময় কঠিন ম্যাচে দলকে জয় এনে দিতেন পন্থ, সেখানে এখন তাঁকে দেখা যাচ্ছে চুপচাপ ডাগআউটে বসে থাকতে। মাঠে যেমন হাসি নেই, গ্যালারিতে মালিক গোয়েন্কার মুখেও তা উধাও। শুরুতে পঞ্জাবের ব্যাটার আউট হওয়ার পর তাঁর যে হাসি দেখা গিয়েছিল, ম্যাচ শেষে তা যেন মিলিয়ে গেল সময়ের সঙ্গে।
লখনউ এখন ১১ ম্যাচে ১০ পয়েন্ট নিয়ে পয়েন্ট তালিকার সাত নম্বরে। যদিও প্লে-অফের আশা এখনও টিকে রয়েছে, তবে তা অত্যন্ত কঠিন পথ। বাকি তিন ম্যাচ বেঙ্গালুরু, গুজরাত ও হায়দরাবাদের বিরুদ্ধে। প্রতিপক্ষের বর্তমান ফর্ম বিচার করলে একটিও সহজ নয়। আরও একটি হার মানেই প্লে-অফের দরজা বন্ধ।
গোয়েন্কার ভরসা পন্থকে নিয়ে যে বাজি খেলেছিলেন, এখন তা যেন পরিণত হয়েছে এক দুঃস্বপ্নে। ব্যাটে না থাকলে নেতৃত্ব দিয়েও তো ভরসা জোগানো যায়। কিন্তু পন্থ এখন নিজেকেই খুঁজে ফিরছেন। ব্যাট না চললে দল তো আর চলবে না—আর তা-ই হচ্ছে লখনউ সুপার জায়ান্টসের মাঠে।
চোট উপেক্ষা করে সোনা! পুণেতে ঋতু ও প্রতিষ্ঠার জিমন্যাস্টিকে স্বর্ণোজ্জ্বল লড়াই