Friday, November 7, 2025

দিঘায় নির্মীয়মাণ জগন্নাথ মন্দির দেখতে মুখ্যমন্ত্রীর সফর: প্রশাসনিক ও সাংগঠনিক প্রস্তুতি তুঙ্গে

Share

দিঘায় নির্মীয়মাণ জগন্নাথ মন্দির

দিঘায় মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের তিন দিনের সফর ঘিরে উৎসাহ এবং প্রস্তুতির জোয়ার বইছে। মূলত দিঘার নির্মীয়মাণ জগন্নাথ মন্দিরের কাজ পরিদর্শন এবং প্রশাসনিক বৈঠকই এই সফরের কেন্দ্রবিন্দু। মঙ্গলবার দুপুরে মুখ্যমন্ত্রীর হেলিকপ্টার দিঘার হেলিপ্যাডে নামার পর থেকেই উত্তেজনার পারদ চড়তে থাকে।

হেলিপ্যাডে নামার পরই জনতার সঙ্গে হাত মেলানো ও কথা বলার সময় মুখ্যমন্ত্রীকে ঘিরে সমবেত মানুষের উচ্ছ্বাস ছিল দেখার মতো। তাঁকে স্বাগত জানাতে উপস্থিত ছিলেন কাঁথি সাংগঠনিক জেলা তৃণমূলের সভাপতি পীযূষ পণ্ডা এবং প্রাক্তন মন্ত্রী অখিল গিরির পুত্র সুপ্রকাশ গিরি। এরপর তিনি সোজা চলে যান ওল্ড দিঘার অতিথিশালায়।

জগন্নাথ মন্দির পরিদর্শনের প্রস্তুতি

মুখ্যমন্ত্রীর সফর উপলক্ষে দিঘা জুড়ে কড়া নিরাপত্তার ব্যবস্থা করা হয়েছে। দিঘা গেট থেকে সৈকত পর্যন্ত রাস্তা ব্যারিকেড দিয়ে ঘিরে ফেলা হয়েছে। পাশাপাশি, সৈকত পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখার কাজও সম্পন্ন করা হয়েছে। বুধবার সকালে মুখ্যমন্ত্রী নির্মীয়মাণ জগন্নাথ মন্দিরে গিয়ে কাজের অগ্রগতি খতিয়ে দেখবেন। মন্দিরের কাজ কতটা এগিয়েছে, কী কী অংশ বাকি রয়েছে—এসব বিষয়ে তিনি বিস্তারিত রিপোর্ট নেবেন।

এছাড়া, মন্দিরে একটি ট্রাস্টি বোর্ড গঠনের বিষয়েও আলোচনা হতে পারে। তবে এ বিষয়ে আনুষ্ঠানিক কোনো ঘোষণা এখনও হয়নি। মন্দিরের কাজ দেখতে গিয়ে স্থানীয় বিধায়কদের সঙ্গে একটি প্রশাসনিক বৈঠকও করার পরিকল্পনা রয়েছে মুখ্যমন্ত্রীর।

তৃণমূলের সাংগঠনিক বার্তা

মুখ্যমন্ত্রীর সফরের সঙ্গে সাংগঠনিক বিষয়ও সংযুক্ত হয়েছে। দলের অভ্যন্তরীণ কাজ ও প্রস্তুতি নিয়ে তিনি জেলার নেতাদের সঙ্গে আলোচনা করছেন। আগামী ১৫ ডিসেম্বর কাঁথি সমবায় ব্যাঙ্কের নির্বাচনের প্রেক্ষাপটে দলীয় ঐক্যের বার্তা দিয়েছেন মমতা। ওই ভোটে দলীয় প্রার্থীদের জয় নিশ্চিত করতে বিরোধ ভুলে ঐক্যবদ্ধ লড়াইয়ের আহ্বান জানিয়েছেন তিনি।

জগন্নাথ মন্দির নির্মাণের ইতিহাস

২০১৮ সালে দ্বিতীয়বার মুখ্যমন্ত্রী হওয়ার পর, দিঘায় পুরীর সমান উচ্চতার জগন্নাথ মন্দির নির্মাণের ঘোষণা করেছিলেন মমতা। শুরুতে ওল্ড দিঘায় মন্দির নির্মাণের ভাবনা ছিল। তবে পরে নিউ দিঘার ভোগীব্রহ্মপুর মৌজায় মন্দির গড়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।

২০২২ সালের অক্ষয় তৃতীয়ার দিনে, ২৫ একর জমিতে জগন্নাথধাম ও সংস্কৃতি কেন্দ্র নির্মাণের কাজ শুরু হয়। রাজ্য সরকার এই প্রকল্পের দায়িত্ব দেয় হিডকোকে, যেখানে খরচ ধরা হয়েছে ১৮০ কোটি টাকা। মন্দিরটি শুধুমাত্র ধর্মীয় স্থান নয়, এটি পর্যটকদের জন্যও একটি আকর্ষণীয় কেন্দ্র হয়ে উঠবে বলে আশা করা হচ্ছে।

প্রশাসনিক প্রস্তুতি ও ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা

মুখ্যমন্ত্রীর এই সফরের মূল লক্ষ্য প্রশাসনিক ও উন্নয়নমূলক প্রকল্পগুলির অগ্রগতি পর্যালোচনা। বৃহস্পতিবার কলকাতায় ফেরার আগে তিনি আরও কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ বৈঠক করতে পারেন।

তাঁর উপস্থিতি দিঘায় নতুন উদ্যমে উন্নয়ন প্রকল্পগুলিকে গতিশীল করতে সাহায্য করবে। মন্দির এবং তার আশেপাশের উন্নয়ন দিঘাকে একটি আন্তর্জাতিক পর্যটন কেন্দ্রে রূপান্তরিত করার পথে একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ হয়ে থাকবে।

Read more

Local News