ট্রাম্পের জাতীয় জরুরি অবস্থা উত্তাল আমেরিকা
ডোনাল্ড ট্রাম্প, যিনি সদ্য মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে জয়ী হয়েছেন, সীমান্ত নিরাপত্তা ও অভিবাসন নিয়ে কঠোর পদক্ষেপ নেওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন। তাঁর পরিকল্পনার মধ্যে রয়েছে জাতীয় জরুরি অবস্থা ঘোষণা ও অবৈধ অভিবাসীদের ফেরাতে সামরিক শক্তি ব্যবহার। সোমবার তিনি নিজেই এই তথ্য নিশ্চিত করেন, যা ইতিমধ্যে রাজনৈতিক অঙ্গনে তীব্র বিতর্কের সৃষ্টি করেছে।
অভিবাসন ইস্যুতে ট্রাম্পের প্রতিশ্রুতি
নির্বাচনী প্রচার থেকেই ট্রাম্প সীমান্ত সমস্যাকে একটি গুরুত্বপূর্ণ ইস্যু হিসেবে তুলে ধরেন। তিনি বারবার দাবি করেছেন, জো বাইডেন প্রশাসনের সময় অবৈধ অভিবাসনের সংখ্যা রেকর্ড মাত্রায় বেড়েছে। তাঁর ভাষায়, “অবৈধ অভিবাসীরা আমেরিকানদের জীবন ও সম্পত্তির জন্য হুমকি হয়ে উঠছেন।”
ট্রাম্পের পরিকল্পনায় অবৈধ অভিবাসীদের চিহ্নিত করে তাঁদের দ্রুত দেশে ফেরত পাঠানোর ওপর জোর দেওয়া হয়েছে। তিনি দাবি করেছেন, এই উদ্যোগ সীমান্তের স্থিতিশীলতা ফিরিয়ে আনবে। এরই অংশ হিসেবে তিনি ১৭৯৮ সালের পুরনো ‘এলিয়েন এনিমিজ অ্যাক্ট’-এর পুনর্বহালের ইঙ্গিত দিয়েছেন।
‘এলিয়েন এনিমিজ অ্যাক্ট’-এর পুনরুজ্জীবন
এই আইনটি মার্কিন ইতিহাসে বিতর্কিত। এটি ১৯৪০-এর দশকে জাপানি-আমেরিকানদের আটক করতে ব্যবহৃত হয়েছিল। সমালোচকদের মতে, এই আইন পুনরায় প্রয়োগ করলে মানবাধিকারের লঙ্ঘন হতে পারে। ট্রাম্প সমর্থকদের মতে, এটি জাতীয় নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে কার্যকর হবে।
নতুন মন্ত্রক গঠন ও সেনা ব্যবহারের পরিকল্পনা
ট্রাম্প ইতিমধ্যেই অভিবাসন সমস্যার সমাধানে নতুন মন্ত্রক গঠনের ঘোষণা দিয়েছেন। এর নেতৃত্বে থাকবেন অভিবাসন এবং শুল্ক দফতরের প্রাক্তন প্রধান টম হোম্যান। হোম্যান ইতিমধ্যে অভিবাসীদের “ব্যাগ গুছিয়ে রাখার” সতর্কবার্তা দিয়েছেন।
রাজনৈতিক ও সামাজিক প্রতিক্রিয়া
ট্রাম্পের এই পরিকল্পনা আমেরিকার রাজনৈতিক অঙ্গনে ঝড় তুলেছে। সমর্থকরা মনে করেন, এটি দেশকে সুরক্ষিত করবে। তবে সমালোচকরা বলছেন, ট্রাম্পের পরিকল্পনা বিভাজন সৃষ্টি করবে এবং মানবাধিকারের ওপর চাপ ফেলবে। আমেরিকার প্রায় ১ কোটি ১০ লক্ষ অবৈধ অভিবাসী সরাসরি প্রভাবিত হতে পারেন।
আন্তর্জাতিক প্রতিক্রিয়া
মেক্সিকোসহ আশপাশের দেশগুলো ট্রাম্পের সিদ্ধান্তের প্রতি উদ্বেগ প্রকাশ করেছে। দীর্ঘদিন ধরে সীমান্ত উত্তেজনা চললেও এই পদক্ষেপ সম্পর্কগুলিকে আরও জটিল করতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
ট্রাম্পের নতুন প্রশাসনের এই উদ্যোগ শুধু আমেরিকার নয়, গোটা বিশ্বের নজর কাড়ছে। জরুরি অবস্থা ঘোষণা হলে এর প্রভাব কতটা গভীর হবে, সেটাই এখন বড় প্রশ্ন।


