টানা বৃষ্টিতে জলমগ্ন বারাণসী!
উত্তরপ্রদেশের বারাণসী এবং আশপাশের এলাকায় টানা বৃষ্টিতে কার্যত বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে সাধারণ মানুষের জীবনযাত্রা। গত তিন দিন ধরে থামার নাম নেই বৃষ্টির, শুক্রবার রাতভর অবিরাম বর্ষণের পর শনিবার সকালেও আকাশ ভিজিয়ে গেছে জলধারায়। ফলস্বরূপ, শহরের বহু রাস্তায় জমে গেছে হাঁটুসমান জল, থমকে গেছে যান চলাচল, ভোগান্তির শেষ নেই বাসিন্দাদের।
শনিবার সকালে সবচেয়ে চমকপ্রদ দৃশ্য দেখা যায় বেনারস হিন্দু বিশ্ববিদ্যালয় (বিএইচইউ)-এর স্যার সুন্দরলাল হাসপাতাল চত্বরে। সেখানে প্রায় হাঁটুসমান জল জমে গেছে, সেই জল পেরিয়েই আসতে-যেতে হচ্ছে রোগী ও তাঁদের আত্মীয়দের। শহরের বহু গুরুত্বপূর্ণ রাস্তাও একইভাবে জলমগ্ন হয়ে পড়েছে। শুক্রবারের মাত্র ৯ ঘণ্টার টানা বৃষ্টিতে বিএইচইউ এলাকায় নেমেছে ১০৮.৮ মিলিমিটার বৃষ্টি। সংবাদমাধ্যম জাগরণ-এর তথ্য অনুযায়ী, গত ১২৫ বছরে অক্টোবর মাসে এই এলাকায় এত বৃষ্টি হয়নি। এর আগে ১৯০০ সালের ৯ অক্টোবর রেকর্ড হয়েছিল ১৩৮.৯ মিলিমিটার বৃষ্টি।
অবিরাম বর্ষণে জল জমতে শুরু করেছিল শুক্রবার রাত থেকেই। শনিবার সকাল পর্যন্ত পরিস্থিতি অপরিবর্তিত রয়ে গেছে, বহু এলাকায় জল নামেনি একেবারেই। কোথাও হাঁটুসমান, কোথাও আবার আরও গভীর জল। গোটা শহর কার্যত জলমগ্ন হয়ে পড়ায় সাধারণ মানুষকে বাধ্য হয়ে জামাকাপড় গুটিয়ে রাস্তায় নামতে হয়েছে। জরুরি প্রয়োজনে কেউ অফিস যাচ্ছেন, কেউ দোকান খোলার পথে — সবারই এক অবস্থা, জমা জল ঠেলে যাতায়াত করতে হচ্ছে।
শুধু জলাবদ্ধতাই নয়, লাগাতার বৃষ্টির কারণে বারাণসীর তাপমাত্রাও নেমে গেছে স্বাভাবিকের তুলনায় প্রায় সাড়ে ৬ ডিগ্রি নিচে। এতে একদিকে যেমন স্বস্তি এসেছে গরম থেকে, অন্যদিকে বাড়ছে ঠান্ডাজনিত রোগের আশঙ্কা।
ঘটনাচক্রে, বারাণসী হল প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর লোকসভা কেন্দ্র। গত কয়েক বছরে এই শহরের উন্নয়ন নিয়ে বিজেপি একাধিকবার প্রচার করেছে, এমনকি মোদীকেও বহু জনসভায় বারাণসীর উন্নয়ন নিয়ে কথা বলতে শোনা গেছে। কিন্তু টানা কয়েক দিনের বৃষ্টিতে জলনিকাশির দুর্বল ব্যবস্থা ফের প্রশ্ন তুলেছে সেই উন্নয়নের দাবির উপরে। শহরের রাস্তায় জমে থাকা জল এবং হাসপাতালের মতো গুরুত্বপূর্ণ স্থানে হাঁটুসমান জলের ছবি দেখিয়ে বিরোধীরাও ইতিমধ্যেই সরকারকে sk kritik করেছে।
সম্প্রতি কলকাতাতেও রাতভর বৃষ্টিতে বহু এলাকা জলমগ্ন হয়েছিল। সেই একই চিত্র এবার দেখা গেল মোদীর শহর বারাণসীতেও। বহু উন্নয়ন প্রকল্পের দাবির পরেও মৌলিক পরিকাঠামোর ঘাটতি যে রয়ে গেছে, তা চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দিল এই টানা বর্ষণ।
এখনও পর্যন্ত আবহাওয়া দফতর জানিয়েছে, আরও কয়েক ঘণ্টা বৃষ্টি চলতে পারে বারাণসীতে। ফলে পরিস্থিতি আরও জটিল হতে পারে বলেই আশঙ্কা করা হচ্ছে। শহরবাসীর এখন একটাই চাওয়া — দ্রুত জল নিষ্কাশনের ব্যবস্থা করে প্রশাসন যেন স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরিয়ে আনে এই ঐতিহ্যবাহী শহরকে।
টানা বৃষ্টিতে ডুবে থাকা বারাণসীর চিত্র যেন একবারে স্পষ্ট করে দিল, কাগজে-কলমে উন্নয়নের দাবির পরেও বাস্তবের মাটিতে নাগরিক সমস্যাগুলি কতটা অমীমাংসিত রয়ে গেছে।
কষা মাংসের রান্নায় পেঁয়াজ কাটতে গিয়ে চোখে জল? জানুন ৫ কার্যকরী টোটকা


