চিনে কি নতুন ভাইরাসের হানা?
চিনে নতুন কোনও ভাইরাসের প্রকোপ শুরু হয়েছে কি না, তা নিয়ে জল্পনা তুঙ্গে। সমাজমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া একাধিক ভিডিওতে দেখা যাচ্ছে, চিনের বিভিন্ন হাসপাতালে রোগীদের উপচে পড়া ভিড়। অনেক ভিডিওতে দাবি করা হচ্ছে, এই রোগীরা হিউম্যান মেটাপনিউমোনিয়া ভাইরাস (এইচএমপিভি)-এ আক্রান্ত। যদিও এই দাবির সত্যতা যাচাই করা হয়নি।
চিনের সরকার এখনও এই বিষয়ে কোনও আনুষ্ঠানিক বিবৃতি দেয়নি। তবে আন্তর্জাতিক সংবাদ সংস্থা রয়টার্স জানাচ্ছে, চিনের রোগ প্রতিরোধ সংস্থা একটি রুটিন নজরদারি শুরু করেছে। শীতকালে নিউমোনিয়ার মতো রোগের প্রকোপ বাড়ে বলে জানিয়েছে সংস্থাটি। তবে এই উদ্যোগও মানুষের উদ্বেগ কমাতে পারেনি।
ভাইরাসটি কী ধরনের?
এইচএমপিভি একটি শ্বাসজনিত ভাইরাস। এটি সাধারণত হাঁচি, কাশি বা সংক্রমিত ব্যক্তির ব্যবহার করা জিনিসের সংস্পর্শে এলে ছড়িয়ে পড়ে। সংক্রমণের ফলে সর্দি, জ্বর, নাকবন্ধ হওয়া, শ্বাসকষ্টের মতো উপসর্গ দেখা দিতে পারে। এটি বিশেষ করে শিশু এবং বয়স্কদের ওপর মারাত্মক প্রভাব ফেলতে পারে।

সামাজিক মাধ্যম ও জনমনে আতঙ্ক
সমাজমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া ভিডিওতে দেখা যাচ্ছে, চিনের বিভিন্ন হাসপাতাল রোগীতে ভরে উঠেছে। একাধিক পোস্টে দাবি করা হচ্ছে, ইনফ্লুয়েঞ্জা এ, এইচএমপিভি, মাইক্রোপ্লাজমা নিউমোনিয়া এবং কোভিড-১৯—সবাই একসঙ্গে মাথাচাড়া দিয়ে উঠেছে। অনেক হাসপাতালে নাকি নতুন রোগীদের ভর্তি করার জায়গা পর্যন্ত নেই।
ভিডিওগুলির একটি বড় অংশে শিশু ও বয়স্কদের অসুস্থ অবস্থায় হাসপাতালের ভিড়ে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখা গেছে। এই পরিস্থিতি দেখে নেটিজেনদের একাংশের মনে পড়ছে ২০২০ সালের কোভিড অতিমারির স্মৃতি। সেবারও উহান শহর থেকেই ভাইরাসটি ছড়িয়ে পড়েছিল বলে ধারণা করা হয়। যদিও কোভিডের সঠিক উৎস এখনও স্পষ্ট নয়।
চিনে কি আবার অতিমারির শঙ্কা?
২০২০ সালের শুরুতে কোভিডের প্রকোপে বিশ্বব্যাপী যে আতঙ্ক দেখা গিয়েছিল, তা অনেকেরই মনে দাগ কেটে রয়েছে। তাই চিনে নতুন করে এই ভাইরাসের হানা এবং হাসপাতালের ভিড় দেখে মানুষের মধ্যে আতঙ্ক দেখা দিয়েছে। কেউ কেউ মনে করছেন, এটি কোভিডের মতোই একটি নতুন অতিমারি হতে পারে।
তবে বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এমন কোনও সিদ্ধান্তে পৌঁছানোর আগে রোগটির প্রকৃতি এবং উৎস সম্পর্কে বিশদ গবেষণা প্রয়োজন। একই সঙ্গে, রোগের বিস্তার রোধে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার উপরও জোর দেওয়া হয়েছে।
শীতকাল ও শ্বাসজনিত রোগের বাড়বাড়ন্ত
শীতকালে সাধারণত শ্বাসজনিত রোগের প্রকোপ বেড়ে যায়। চিনে রুটিন নজরদারির সিদ্ধান্তও সেই কারণেই নেওয়া হয়েছে। এই নজরদারির মাধ্যমে রোগটির প্রকৃত উৎস এবং সংক্রমণের পথ জানা সম্ভব হবে বলে আশা করা হচ্ছে।
জনসাধারণের জন্য সতর্কবার্তা
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এই মুহূর্তে চিনের পরিস্থিতি নিয়ে কোনও ভুল তথ্য বা গুজব ছড়ানো থেকে বিরত থাকা উচিত। একই সঙ্গে, শ্বাসজনিত অসুস্থতার ক্ষেত্রে চিকিৎসকের পরামর্শ মেনে চলা এবং নিয়মিত স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলা প্রয়োজন।
শেষ কথা
চিনে হাসপাতালের ভিড় এবং নতুন ভাইরাসের প্রসঙ্গ এখন আন্তর্জাতিক চর্চার বিষয়। যদিও সরকারিভাবে এ নিয়ে নিশ্চিত কিছু জানা যায়নি, মানুষের উদ্বেগ এবং আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে। এই পরিস্থিতিতে আরও গবেষণা এবং কার্যকরী পদক্ষেপ প্রয়োজন, যাতে ভবিষ্যতের কোনও অতিমারি রুখে দেওয়া যায়।
‘রোহিতকে বিদায়ী টেস্ট খেলার সুযোগ দিন’, গম্ভীরের কাছে বোর্ডের আবেদন, খারিজ করলেন গৌতি


