Sunday, December 7, 2025

খাতা হারালে পড়ুয়াদের বিকল্প ব্যবস্থা জানাবে কলেজ

Share

খাতা হারালে পড়ুয়াদের বিকল্প ব্যবস্থা

কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা স্নাতকোত্তর প্রথম সেমিস্টারের ১২০টি পরীক্ষার খাতা হারানোর ঘটনা অনেক ছাত্র-ছাত্রীর জন্য উদ্বেগের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। এই ঘটনা সঠিকভাবে মোকাবিলা করার লক্ষ্যে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ বিভিন্ন বিকল্প ব্যবস্থা গ্রহণের সিদ্ধান্ত নিয়েছে। ক্যাম্পাস খুললেই কলেজগুলিকে চিঠি পাঠিয়ে বিষয়টি সম্পর্কে বিস্তারিত জানানো হবে। অন্তর্বর্তী উপাচার্য শান্তা দত্ত দে জানিয়েছেন, শিক্ষার্থীদের যাতে কোনো ক্ষতি না হয়, সেজন্য কলেজগুলির অধ্যক্ষদের বিষয়টি যথাযথভাবে জানাতে নির্দেশ দেওয়া হবে।

বিশ্ববিদ্যালয়ের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, যে পরীক্ষার্থীদের নম্বর আপলোড হয়ে গেছে, তারা সেই নম্বর গ্রহণ করতে পারবেন। তবে, যদি কেউ নম্বরের পুনর্বিবেচনার জন্য আবেদন করতে চান, তবে তা সম্ভব নয়, কারণ খাতার হদিস নেই। এই অবস্থায়, সংশ্লিষ্ট পরীক্ষার্থীদের বিকল্প প্রস্তাব দেওয়া হবে। হারানো খাতার ভিত্তিতে যে নম্বর দেওয়া হবে, সেটিই ওই পরীক্ষার্থীর সর্বাধিক নম্বর হিসেবে ধরা হবে। যদি তাও পরীক্ষার্থীকে মেনে নিতে না পারে, তাহলে তাদের পুনরায় পরীক্ষায় বসার সুযোগ দেওয়া হবে।

এছাড়া, জানা গেছে, এই ১২০টি খাতার মধ্যে কিছু খাতা পুড়ে গিয়েছে, এবং অন্য কিছু খাতা জমা পড়েনি বলে অভিযোগ উঠেছে। শিক্ষার্থীরা যে কলেজগুলির পরীক্ষকদের মাধ্যমে এই সমস্যায় পড়েছেন, তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ তিনটি কলেজকে মৌখিকভাবে নির্দেশ দিয়েছে। কলেজগুলোকে একটি কমিটি গঠন করতে বলা হয়েছে এবং কী ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে, তা বিশ্ববিদ্যালয়ে রিপোর্ট পাঠাতে হবে।

শিক্ষার্থীদের অধিকার রক্ষায় ছাত্র সংগঠন এসএফআইও এই ঘটনার প্রেক্ষাপটে কলেজের গাফিলতি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে। তারা দাবি করছে, বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষকে অবশ্যই দায়িত্ব নিতে হবে যাতে ১২০ জন পরীক্ষার্থীর উচ্চশিক্ষায় কোনো দাগ না পড়ে। পাশাপাশি, কলেজে এই ঘটনায় যারা জড়িত, তাদের বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়ারও দাবি জানানো হয়েছে।

এমন পরিস্থিতিতে শিক্ষার্থীদের মধ্যে চরম হতাশা ও উদ্বেগ সৃষ্টি হয়েছে। খাতা হারানোর ঘটনা যদি তাদের উচ্চশিক্ষার পথে বাধা হয়ে দাঁড়ায়, তাহলে তা ভবিষ্যতের জন্য মারাত্মক প্রভাব ফেলতে পারে। তাই বিশ্ববিদ্যালয়ের এই উদ্যোগ খুবই গুরুত্বপূর্ণ। শিক্ষার্থীদের জন্য বিকল্প ব্যবস্থা নিশ্চিত করা এবং তাদের সঙ্গে যোগাযোগ রক্ষা করা এই মুহূর্তে অত্যন্ত প্রয়োজনীয়।

কলেজ কর্তৃপক্ষের কাছে দাবি উঠছে, তারা যেন এই বিষয়টি সঠিকভাবে তদন্ত করে দায়ী ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করে। কলেজগুলোকে উচিত হবে যে, তারা শিক্ষার্থীদের প্রতি দায়িত্বশীলতা দেখিয়ে তাদের নিরাপত্তা ও স্বার্থ রক্ষার ব্যবস্থা নেবে। ভবিষ্যতে যাতে এ ধরনের ঘটনা পুনরাবৃত্তি না ঘটে, সে জন্য সতর্কতার সঙ্গে পদক্ষেপ নিতে হবে।

আশা করা যায়, শিক্ষার্থীদের এই উদ্বেগজনক পরিস্থিতির দ্রুত সমাধান হবে এবং তারা তাদের পড়াশোনায় আবার মনোযোগ দিতে পারবে। বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ এবং কলেজগুলো যৌথভাবে এই সমস্যার সমাধানে যত দ্রুত সম্ভব কার্যকরী পদক্ষেপ নেবে, এটাই প্রত্যাশিত।

Read more

Local News