কেরলে পেনশন দুর্নীতি
কেরলে এক অভিনব আর্থিক দুর্নীতির ঘটনা প্রকাশ্যে এসেছে। রাজ্য সরকারের পক্ষ থেকে আর্থিকভাবে পিছিয়ে পড়া জনগণের জন্য বরাদ্দ পেনশন সরকারি কর্মকর্তাদের অ্যাকাউন্টে চলে যাচ্ছে। এই ঘটনাটি সামনে আসতেই রাজ্যজুড়ে হুলস্থুল পড়ে গেছে। কেরলের অর্থ দফতর যখন তাদের পক্ষ থেকে পেনশন প্রাপকদের জন্য একটি সমীক্ষা চালাচ্ছিল, তখনই এই বেনিয়মের ঘটনা প্রকাশ্যে আসে। এই বিষয়ে তদন্তের নির্দেশ দিয়েছে সরকার, এবং ইতিমধ্যেই বিষয়টি খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
প্রশাসন সূত্রে জানা গেছে, আর্থিকভাবে পিছিয়ে পড়া রাজ্যের প্রায় ৬২ লক্ষ মানুষ প্রতি মাসে ১৬০০ টাকা পেনশন পেয়ে থাকেন। এই পেনশনটিই অনেক সরকারি কর্মীদের অ্যাকাউন্টে চলে যাচ্ছে, যাঁরা প্রকৃত পেনশনভোগী নয়। অর্থ দফতরের অডিটে এই ঘটনা ধরা পড়ে, এবং তখনই গোটা বিষয়টি নিয়ে তদন্ত শুরু হয়।
সরকারি সূত্রে আরও জানা গেছে, প্রাথমিকভাবে ১৫০০ সরকারি কর্মী এমন সন্দেহজনক পেনশন সুবিধা উপভোগ করছেন। এই তালিকায় সরকারি কলেজের অধ্যাপক, গেজেটেড অফিসারসহ বিভিন্ন সরকারি পদমর্যাদার কর্মীরা রয়েছেন। অর্থ দফতরের অডিটে এটি ধরা পড়ার পর রাজ্য প্রশাসনে চাঞ্চল্য সৃষ্টি হয়েছে। রাজ্য সরকারের অর্থমন্ত্রী কেএন বালগোপাল ঘটনার তীব্র সমালোচনা করেছেন এবং দ্রুত তদন্তের পাশাপাশি অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশ দিয়েছেন।
রাজ্যের সরকার এখন তদন্তের মাধ্যমে খতিয়ে দেখছে, কীভাবে এই বেনিয়ম ঘটল এবং কোথায় গাফিলতি ছিল। অর্থমন্ত্রী জানিয়েছেন, “আমরা চিহ্নিত করার কাজ শুরু করেছি, কাদের অ্যাকাউন্টে পেনশনের টাকা ঢুকেছে। এই ঘটনার পেছনে যারা জড়িত, তাদের বিরুদ্ধে দ্রুত পদক্ষেপ নেওয়া হবে। পেনশন প্রাপকদের যথাযথভাবে তাদের টাকা পৌঁছানোর জন্য নজরদারি চালানো হবে।”
এখন কেরল প্রশাসন দ্রুত তদন্ত করতে এবং দোষীদের শাস্তির আওতায় আনার জন্য প্রস্তুত। সরকারি কর্মীদের বিরুদ্ধে এই ধরনের দুর্নীতির ঘটনা প্রকাশ্যে আসা রাজ্যবাসীর মধ্যে তীব্র অসন্তোষ সৃষ্টি করেছে। বিশেষ করে, যারা সত্যিকার অর্থে পেনশনের সুবিধা পাচ্ছেন, তাদের জন্য এই ধরনের ঘটনার ফলে অসুবিধা হতে পারে। প্রশাসনের পক্ষ থেকে আশ্বস্ত করা হয়েছে যে, সমস্ত প্রক্রিয়া সঠিকভাবে চালানো হবে এবং যাঁরা ভুলভাবে পেনশন গ্রহণ করেছেন, তাদের বিরুদ্ধে কড়া ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
এই ঘটনাটি শুধুমাত্র কেরলেই নয়, দেশের অন্যান্য রাজ্যেও পেনশন বা সরকারি অর্থের অপব্যবহার নিয়ে আরও নজরদারি চালানোর প্রয়োজনীয়তা তুলে ধরেছে। সরকারের এই দ্রুত পদক্ষেপ প্রমাণ করে, যে কোনও ধরনের দুর্নীতির বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।


