কলেজ পড়ুয়ার হাতে আয়ের সুযোগ!
কলেজ জীবন মানে স্বাধীনতার স্বাদ, নতুন বন্ধু, ক্যান্টিনের আড্ডা আর স্বপ্নে ভরা ভবিষ্যৎ! তবে অনেক সময় পরিবারের আর্থিক পরিস্থিতি অথবা নিজের ক্যারিয়ারকে এগিয়ে নিয়ে যেতে চাওয়ার ইচ্ছাই শিক্ষার্থীদের পড়াশোনার পাশাপাশি আংশিক সময়ের কাজের পথে ঠেলে দেয়। দিনে ক্লাস এবং পরে নিজের মতো কয়েক ঘণ্টা ব্যয় করে উপার্জনের সুযোগ এখন আরও সহজ হয়ে গিয়েছে। বিভিন্ন সংস্থায় আংশিক কর্মী প্রয়োজন হয় নিয়মিতই। সেই তালিকায় রয়েছে এমন কিছু পেশা, যা কলেজ পড়ুয়ার পক্ষে সামলানো খুবই সহজ। দেখে নেওয়া যাক সেই পাঁচটি জনপ্রিয় কাজ এবং তার সম্ভাব্য উপার্জন—
১) কনটেন্ট রাইটিং— সৃজনশীলতার হাত ধরে উপার্জন
যাঁরা লেখালিখি ভালোবাসেন, তাঁদের জন্য কনটেন্ট রাইটিং হলো আদর্শ আংশিক পেশা। বাংলা বা ইংরেজি— যেকোনও ভাষায় সাবলীলভাবে লিখতে পারলেই কাজ পাওয়া যায় বিভিন্ন সংস্থায়। ব্লগ, স্ক্রিপ্ট, ওয়েবসাইট কনটেন্ট, সংবাদ প্রতিবেদন থেকে শুরু করে ব্র্যান্ড কপি— লেখার ক্ষেত্র বিশাল। ফ্রিল্যান্স হিসেবে কাজ করা যায়, সময় নিজের মতো করে বেছে নেওয়া যায়। মাসিক উপার্জন হতে পারে ৫,০০০ থেকে ২৫,০০০ টাকা পর্যন্ত। পাশাপাশি, লেখার দক্ষতা উন্নত হওয়ার বড় সুযোগ তো থাকছেই।
২) ডেটা এন্ট্রি অপারেটর— কম দক্ষতায় দ্রুত আয়
দ্বাদশ পাশ থাকলেই ডেটা এন্ট্রি অপারেটরের কাজ হাতে নেওয়া যায়। বিভিন্ন সংস্থার তথ্য কম্পিউটার সফ্টে সাজানো, সংশোধন করা এবং সংরক্ষণ করাই মূল দায়িত্ব। কাজটি তুলনামূলক কম চাপের, নিয়মিত প্র্যাকটিস থাকলে সহজেই আয় করা সম্ভব। কলেজ পড়ুয়ারা মাসে ১০,০০০ থেকে ২০,০০০ টাকা পর্যন্ত উপার্জনের সুযোগ পান এই পেশায়।
৩) কল সেন্টার/গ্রাহক সেবা প্রতিনিধি— যোগাযোগ দক্ষতার সদ্ব্যবহার
যাঁদের কথাবার্তা বলার দক্ষতা ভালো, বিশেষ করে ইংরেজি ভাষায়, তাঁদের জন্য কল সেন্টার বা কাস্টমার সার্ভিস অসাধারণ একটি সুযোগ। বিভিন্ন কোম্পানির গ্রাহক সমস্যার সমাধান দেওয়া, পরিষেবা সংক্রান্ত তথ্য জানানো— এই কাজগুলো ফোনের মাধ্যমে হয়, তাই বাড়ি থেকেই করা যায় অনেক ক্ষেত্রে। আংশিক সময়ের চাকরি হিসেবে মাসিক ৮,০০০ থেকে ১৯,০০০ টাকা পর্যন্ত উপার্জন সম্ভব।
৪) গিগ ওয়ার্কার— নিজের সময়েই কাজ
খাবার ডেলিভারি থেকে শুরু করে গ্রোসারি পৌঁছে দেওয়া— গিগ ইকোনমির জোয়ারে এই পেশা অত্যন্ত জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে। বিভিন্ন অ্যাপভিত্তিক সংস্থায় আংশিক সময়ের জন্য রোজগারের সুযোগ পাওয়া যায়। দিনে কয়েক ঘণ্টা সময় দিলেই মাসিক ৮,০০০ থেকে ১২,০০০ টাকা পর্যন্ত উপার্জন সম্ভব। সবচেয়ে বড় সুবিধা হলো— সময় নিজের ইচ্ছামতো বেছে নেওয়া যায়।
৫) গৃহশিক্ষক বা অনলাইন শিক্ষক— শিক্ষাদানের পথে প্রথম পদক্ষেপ
যাঁরা কোনও বিষয়ে দক্ষ, কিংবা ভবিষ্যতে শিক্ষকতা করতে চান, তাঁদের জন্য টিউশন একটি আদর্শ আংশিক কাজ। অফলাইন বা অনলাইন— দুইভাবেই শিক্ষার্থী পাওয়া যায়। কোচিং সেন্টার, বাড়িতে বা ডিজিটাল প্ল্যাটফর্মে পড়ানোর সুযোগ রয়েছে। বিষয়ভেদে আয়ও বেশ ভালো— ১০,০০০ থেকে ২০,০০০ টাকা পর্যন্ত মাসিক উপার্জন সম্ভব।
অতিরিক্ত সুযোগ
এ ছাড়াও পড়ুয়ারা চাইলে ডিজিটাল মার্কেটিং, সেলস, সোশ্যাল মিডিয়া ম্যানেজমেন্ট, ভিডিও এডিটিং— এমন আরও অনেক কাজ করতে পারেন আংশিক সময়ের ভিত্তিতে।
কলেজ পড়ুয়ারা সময় ঠিকঠাক ভাগ করে নিলে পড়াশোনা ও আয়ের মধ্যে সঠিক সামঞ্জস্য বজায় রাখা সম্ভব। পাশাপাশি কর্মক্ষেত্রের প্রথম অভিজ্ঞতা ভবিষ্যতের ক্যারিয়ার গঠনেও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নেয়। তাই ইচ্ছা থাকলে পরিশ্রম করে আংশিক কাজের মাধ্যমে আর্থিক স্বাধীনতার দরজাও খুলে যায় কলেজ জীবনেই।

