Friday, November 7, 2025

ওড়িশার নয়াগড়ের জঙ্গলে কালো চিতাবাঘ! বিরল মুহূর্ত ধরা পড়ল ক্যামেরায়

Share

ওড়িশার নয়াগড়ের জঙ্গলে কালো চিতাবাঘ!

ওড়িশার নয়াগড়ের জঙ্গলে দেখা মিলল বিরল কালো চিতাবাঘের। বন দফতরের পাতা ট্র্যাপ ক্যামেরায় ধরা পড়েছে এই অসাধারণ মুহূর্ত। শুক্রবার কালো চিতাবাঘটিকে তার শাবককে মুখে করে জঙ্গলে ঘুরে বেড়াতে দেখা গিয়েছে। এই বিরল চিত্র প্রকাশ্যে আসার পর বন দফতর এবং প্রাণীপ্রেমীরা দারুণ উৎসাহিত।

কালো চিতাবাঘ: বিরল এবং লাজুক

কালো চিতাবাঘ সাধারণত খুবই লাজুক প্রকৃতির। এদের দেখা পাওয়া অত্যন্ত দুষ্কর। চিতাবাঘের গায়ে থাকা মেলানিন নামক রঞ্জকের মাত্রা বেশি হওয়ায় এদের চামড়ার রং কালো দেখায়। যদিও সাধারণ চিতাবাঘের মতোই এদের দেহে ছোপ ছোপ দাগ থাকে, তবে দূর থেকে এগুলি বোঝা যায় না।

প্রধান মুখ্য বনপাল (বন্যপ্রাণ) প্রেম কুমার ঝা নিজে সমাজমাধ্যমে এই বিরল কালো চিতাবাঘের ছবি শেয়ার করেছেন। তিনি লেখেন, “বিরল কালো চিতাবাঘের দেখা মিলেছে নয়াগড়ের জঙ্গলে। আমরা এর গতিবিধির উপর নজরদারি চালিয়ে যাচ্ছি।’’

চিতাবাঘ

কোথায় দেখা মেলে কালো চিতাবাঘের?

অল ওড়িশা লেপার্ড এস্টিমেশন ২০২৪-এর তথ্য অনুযায়ী, রাজ্যের তিনটি জঙ্গলে কালো চিতাবাঘের অস্তিত্বের কথা জানা গেছে। এর মধ্যে নয়াগড়ের জঙ্গলে ধরা পড়েছে এই বিরল প্রজাতির ছবি।

২০১৮ সালে প্রথমবার সুন্দরগড় জেলার হেমগিরি অরণ্যে একটি কালো চিতাবাঘ ট্র্যাপ ক্যামেরায় ধরা পড়েছিল। তার পর থেকে কালো চিতাবাঘের দেখা মাঝে মধ্যে মিলেছে। ২০২৩ সালের বাঘশুমারির সময় রাজ্যের দু’টি আলাদা জায়গায় দুটি কালো চিতাবাঘের অস্তিত্ব পাওয়া যায়।

কালো চিতাবাঘ রক্ষায় পদক্ষেপ

বন দফতর জানিয়েছে, এই বিরল প্রজাতিকে রক্ষার জন্য এবং তাদের বাস্তুতন্ত্র অক্ষুণ্ণ রাখতে একাধিক পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। জঙ্গলের ভিতরে মানুষের প্রবেশ নিয়ন্ত্রণ করা, বনাঞ্চল সুরক্ষিত রাখা এবং ট্র্যাপ ক্যামেরার মাধ্যমে নজরদারি চালানো হচ্ছে।

বন দফতরের সাম্প্রতিক সমীক্ষা অনুযায়ী, ওড়িশায় বর্তমানে ৬৯৬টি চিতাবাঘ রয়েছে। তবে কালো চিতাবাঘের সংখ্যা অত্যন্ত কম। এদের টিকে থাকার জন্য বিশেষভাবে মনোযোগ দেওয়ার প্রয়োজন বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।

কালো চিতাবাঘ দেখা গেলেও কেন তা বিরল?

কালো চিতাবাঘ সাধারণত ঘন জঙ্গলে বাস করে এবং দিনের বেলা খুব একটা দেখা যায় না। এদের প্রধানত রাতে শিকার করতে দেখা যায়। তাই ক্যামেরায় ধরা পড়া এই ছবি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। বন দফতর জানিয়েছে, চিতাবাঘের সুরক্ষা এবং প্রাকৃতিক বাস্তুতন্ত্র টিকিয়ে রাখাই তাদের প্রধান লক্ষ্য।

চিতাবাঘ সংরক্ষণে বন দফতরের প্রচেষ্টা

বন দফতর ইতিমধ্যেই চিতাবাঘ সংরক্ষণে বিভিন্ন প্রকল্প চালু করেছে। শুধু নয়াগড় নয়, রাজ্যের বিভিন্ন বনাঞ্চলেও নজরদারি চালানো হচ্ছে। বিশেষত কালো চিতাবাঘের মতো বিরল প্রজাতি রক্ষায় আরও শক্তিশালী পদক্ষেপের প্রয়োজন বলে মনে করছেন প্রাণীসংরক্ষণবিদরা।

বন দফতরের এক আধিকারিক বলেন, “এ ধরনের বিরল প্রাণী জঙ্গলের বাস্তুতন্ত্রের ভারসাম্য রক্ষায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। তাই তাদের সুরক্ষার দিকটি আমাদের কাছে অগ্রাধিকার।”

সাধারণ মানুষের ভূমিকা

বন দফতর সাধারণ মানুষকেও এই বিষয়ে সচেতন হওয়ার আহ্বান জানিয়েছে। জঙ্গলে অপ্রয়োজনে প্রবেশ না করা এবং বন্যপ্রাণীদের বিরক্ত না করা, এ রকম সাধারণ নিয়ম মেনে চললে এই বিরল প্রজাতিগুলি সুরক্ষিত থাকবে।

এই বিরল কালো চিতাবাঘের ছবি শুধু ওড়িশার নয়, সমগ্র দেশের বন ও বন্যপ্রাণ রক্ষার প্রচেষ্টার একটি অনন্য উদাহরণ। ভবিষ্যতে আরও এমন বিরল দৃশ্য ক্যামেরায় ধরা পড়বে এবং আমাদের প্রাকৃতিক সম্পদ আরও সমৃদ্ধ হবে, এটাই প্রত্যাশা।

উত্তাপ ক্রমে চড়ছে সিডনিতে, দিনের শেষ বলে খোয়াজাকে আউট করে কনস্টাসের দিকে সটান তেড়ে গেলেন জসপ্রীত বুমরাহ

Read more

Local News