উদ্ধব-রাজের সম্ভাব্য জোট!
১৯ বছর আগে দুই ভাইয়ের পথ আলাদা হয়েছিল। রাজ ঠাকরে আলাদা হয়ে গড়েছিলেন মহারাষ্ট্র নবনির্মাণ সেনা (এমএনএস), আর শিবসেনার দায়িত্বে আসেন উদ্ধব ঠাকরে। কিন্তু সময় বদলেছে, রাজনীতি বদলেছে, মরাঠাভূমির সমীকরণও এখন অন্যরকম। সেই প্রেক্ষিতেই উঠে এসেছে বড় প্রশ্ন—উদ্ধব ও রাজ যদি আবার একজোট হন, তাহলে মহারাষ্ট্রের ভোটব্যাঙ্কে কতটা ধাক্কা খেতে পারে শাসক জোট এনডিএ?
দুই ভাইয়ের হাত মেলানোর ইঙ্গিত
সম্প্রতি প্রকাশ্যে রাজ ঠাকরে বলেন, “আমাদের মধ্যে মতপার্থক্য থাকতে পারে, কিন্তু বৃহত্তর স্বার্থে একসঙ্গে কাজ করাটা কঠিন কিছু নয়। শুধু ইচ্ছেটাই জরুরি।” এই বার্তার সুরে সুর মিলিয়েছেন উদ্ধবও। দাদরে শিবসেনা (ইউবিটি)-র এক সভায় উদ্ধব বলেন, “মহারাষ্ট্র এবং মরাঠি মানুষের স্বার্থে ছোটখাটো মতভেদ দূরে সরিয়ে রাখতে চাই।” অর্থাৎ দু’জনেই এখন রাজনীতি নয়, মরাঠা গর্বকে সামনে রেখে একজোট হওয়ার বার্তা দিচ্ছেন।
ভোটে প্রভাব ফেলবে কি?
এই সম্ভাব্য জোট নিয়েই এখন আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে মহারাষ্ট্রের রাজনীতি। বিশেষ করে চলতি বছরের শেষ দিকে অনুষ্ঠিত হতে চলা বৃহন্মুম্বই পুরসভা (BMC) নির্বাচনকে ঘিরে উত্তেজনা তুঙ্গে। অনেকের মতে, বিজেপির বিরুদ্ধে একটি মরাঠা ফ্রন্ট তৈরি করতেই হয়তো দুই ভাইয়ের পুনর্মিলনের ভাবনা।
বিজেপির প্রতিক্রিয়া
মহারাষ্ট্রের উপমুখ্যমন্ত্রী দেবেন্দ্র ফডণবীস অবশ্য বিষয়টি নিয়ে উদ্বিগ্ন নন। তিনি বলেন, “ঠাকরে ভাইয়েরা এক হলেই আমরা খুশি হব। তাঁদের মধ্যে বিভেদ থাকাটা ভালো নয়। তবে এতে এনডিএ-র কোনও ক্ষতি হবে না।” অর্থাৎ বিজেপি এখনও নিজেদের ভোটব্যাঙ্কে আস্থা রাখছে।
শিন্দের বিরক্তি
অন্যদিকে, একনাথ শিন্দে এই সম্ভাব্য জোটের প্রসঙ্গে প্রশ্ন করা হলে প্রকাশ্যে বিরক্তি দেখান। তিনি বলেন, “সরকার যে ভালো কাজ করছে, সেটাই তুলে ধরুন। এই ধরনের জল্পনায় আমি নেই।” বোঝাই যাচ্ছে, ঠাকরে পরিবার একজোট হলে সবচেয়ে অস্বস্তিতে পড়বেন তিনিই।
অতীত ও বর্তমানের রাজনীতি
২০০৫ সালে রাজ শিবসেনা ছেড়ে বেরিয়ে আসেন। ২০০৬ সালে গড়েন এমএনএস। এরপর ২০২২ সালে শিবসেনার ভাঙনে নেতৃত্ব দেন একনাথ শিন্দে। অধিকাংশ সাংসদ ও বিধায়ককে পাশে নিয়ে শিবসেনার নাম ও প্রতীক নিজের দখলে আনেন তিনি। এই পরিস্থিতিতে উদ্ধব ও রাজের পুনর্মিলন কি নতুন করে শিবসেনার হারানো জমি ফিরিয়ে দিতে পারে? মরাঠা আত্মপরিচয় ও আঞ্চলিক আবেগকে সামনে রেখে যদি তাঁরা একসঙ্গে ভোটে নামেন, তবে যে বিজেপির হিসেব-নিকেশ এলোমেলো হয়ে যেতে পারে, তা আর বলার অপেক্ষা রাখে না।
উপসংহার
রাজনীতি কখন কোন দিকে মোড় নেয়, তা বলা কঠিন। তবে ঠাকরে পরিবার আবার যদি এক হয়, তাহলে শুধু আবেগ নয়, বাস্তব রাজনীতির ময়দানে বড় প্রভাব ফেলতে পারে। সেই কারণেই এবার সবাই তাকিয়ে আছে উদ্ধব-রাজ জুটির পরবর্তী পদক্ষেপের দিকে।
এসএসসি নিয়োগে আসছে বড় পরিবর্তন: পরীক্ষার্থীরা এবার উত্তরপত্রের কার্বন কপি পাবেন!