রাজনৈতিক বিতর্কের উত্তাপ আবার চরমে উঠেছে। পুরমন্ত্রী ফিরহাদ হাকিমের সাম্প্রতিক মন্তব্যকে ঘিরে বিজেপি সরব হয়েছে। এই ইস্যুকে কেন্দ্র করে বিজেপি এবং তৃণমূল কংগ্রেসের মধ্যে নতুন করে বাকযুদ্ধ শুরু হয়েছে। বিজেপি নেতা অমিত মালব্য এবং আন্দামানের বিজেপি সাংসদ বিষ্ণুপদ রায় সরাসরি আক্রমণ করেছেন ফিরহাদ এবং মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে।
ফিরহাদ হাকিমের বক্তব্য: কী বলেছিলেন তিনি?
ফিরহাদ হাকিম একটি সভায় বলেন, “আমি এমন একটি সম্প্রদায় থেকে এসেছি, যারা বাংলায় ৩৩ শতাংশ এবং সারা ভারতে মাত্র ১৭ শতাংশ। আমাদের সংখ্যালঘু বলা হয়। আমি নিজেকে সংখ্যালঘু ভাবি না। আমি বিশ্বাস করি, আল্লাহ যদি করুণা করেন, তাহলে একদিন আমরা সংখ্যাগরিষ্ঠ হব। মোমবাতি মিছিল বা বিচার চাওয়া যথেষ্ট নয়। আমাদের নিজেদের এমন উচ্চতায় নিয়ে যেতে হবে, যাতে আমরা নিজেরাই ন্যায়বিচার করতে পারি।”
এই বক্তব্যের ভিডিও সোশ্যাল মিডিয়ায় পোস্ট করেছেন বিজেপির আইটি সেলের প্রধান অমিত মালব্য। ভিডিওটি শেয়ার করে তিনি অভিযোগ তোলেন, ফিরহাদ হাকিম ভারতের ধর্মীয় ভারসাম্য নষ্ট করার চেষ্টা করছেন।
বিজেপির পাল্টা আক্রমণ
অমিত মালব্যর ভিডিও পোস্টের পর বিজেপি সাংসদ বিষ্ণুপদ রায় কড়া ভাষায় প্রতিক্রিয়া জানান। তিনি প্রশ্ন তোলেন, “ফিরহাদ হাকিম কি আদৌ ভারতীয়? তিনি কি ভারতের সংবিধানকে মানেন? মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় কি দেশকে ইসলামিক রাষ্ট্রে পরিণত করতে চান?” বিষ্ণুপদ রায় আরও বলেন, “তৃণমূল কংগ্রেস এবং ফিরহাদ হাকিমের স্বপ্ন কখনোই সফল হবে না। ভারত হিন্দুরাষ্ট্র হবে, হবেই।”
রাজনৈতিক উত্তাপ: সংখ্যালঘু-সংখ্যাগরিষ্ঠ বিতর্ক
বিজেপির অভিযোগ, তৃণমূল কংগ্রেস সংখ্যালঘু ভোটব্যাংকের রাজনীতি করছে। বিজেপি নেতাদের মতে, এই ধরনের মন্তব্য দেশের ধর্মীয় সৌহার্দ্য নষ্ট করতে পারে। অন্যদিকে, তৃণমূল কংগ্রেস থেকে এখনও এই বিতর্ক নিয়ে কোনো সরাসরি প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি।
ধর্মীয় রাজনীতির নতুন দিক
ভারতবর্ষের রাজনীতিতে ধর্ম বরাবরই গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে এসেছে। তবে সাম্প্রতিক সময়ে সংখ্যালঘু-সংখ্যাগরিষ্ঠ বিতর্ক আরও তীব্র হয়েছে। বিজেপির পক্ষ থেকে প্রায়ই হিন্দুরাষ্ট্রের ধারণাকে সামনে আনা হয়। এই বিতর্কে বাংলাদেশের সাম্প্রতিক ঘটনা এবং ভারতের ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের নিয়ে উদ্বেগ নতুন মাত্রা যোগ করেছে।
সমাপ্তি ভাবনা
এই বিতর্কের পরিণতি কী হবে, তা সময়ই বলবে। তবে স্পষ্ট যে, সাম্প্রদায়িক রাজনীতি এবং ধর্মীয় ভাবাবেগকে কেন্দ্র করে দেশের রাজনৈতিক পরিবেশ উত্তপ্ত হতে চলেছে। জনগণের আশা, রাজনীতিবিদরা ধর্মের ভিত্তিতে বিভাজনের পরিবর্তে দেশের সংহতি এবং উন্নয়নে মনোযোগ দেবেন।


