আর জি করের ন্যায়ের দাবিতে মা কালী
পশ্চিম মেদিনীপুরের গড়বেতার চন্দ্রকোনা রোডের রেনেসাঁস পুজো কমিটি এবার কালীপূজোয় নিয়ে এলো এক অন্য রকম থিম। এবারের থিমের নাম, “জাস্টিস ফর আর জি কর”। কালীমন্দিরের আদলে তৈরি করা হয়েছে তাদের মণ্ডপ, যেখানে মা কালী সশস্ত্রভাবে ন্যায় প্রতিষ্ঠার প্রতীক হয়ে বিরাজ করছেন। তবে এ কেবল মূর্তি নয়, একটি প্রতীকী প্রতিবাদ যা আর জি কর মেডিকেল কলেজের চলমান আন্দোলনকে সমর্থন করছে। চলুন দেখে নিই এই বিশেষ থিমের আদ্যোপান্ত।
মণ্ডপে আর জি কর হাসপাতালের আদলে প্রতিমা স্থাপন
রেনেসাঁস পুজো কমিটি এ বছর আর জি কর হাসপাতালের ন্যায়সংগত দাবির প্রতি সমর্থন জানিয়ে তৈরি করেছে অনন্য এক মণ্ডপ। মণ্ডপটি আর জি কর হাসপাতালের অনুকরণে নির্মিত, যেখানে মূল আকর্ষণ মা কালীর মূর্তি। মা কালীর এক হাতে খড়গ, আর অন্য হাতে তিনি শক্তভাবে ধরে আছেন সন্দীপ ঘোষের চুলের মুঠি। এই রূপে মা কালী যেন ন্যায় প্রতিষ্ঠার প্রতীক হিসেবে বিরাজ করছেন। মণ্ডপে মূর্তির সঙ্গেই রয়েছে ডাক্তার ও নার্সের মূর্তি, যারা আর জি কর হাসপাতালের আন্দোলনে কর্মী হিসেবে অবদান রেখেছেন।
আন্দোলনের সঙ্গেই মিশে আছে পূজোর থিম
পুজো কমিটির মতে, “জাস্টিস ফর আর জি কর” থিমটি মানুষের মধ্যে সাড়া জাগিয়েছে। তারা বলছেন, আর জি করের ন্যায়সংগত আন্দোলন শুধু রাজ্য নয়, দেশের গণ্ডি পেরিয়ে আন্তর্জাতিক স্তরে ছড়িয়ে পড়েছে। এই আন্দোলনের পেছনে সরাসরি বা পরোক্ষভাবে সন্দীপ ঘোষের ভূমিকা রয়েছে, যা এই থিমের মাধ্যমে তুলে ধরা হয়েছে। আর্থিক বরাদ্দ, কাজের পরিবেশ ও অধিকার সংক্রান্ত দাবির বিষয়টি সাধারণ মানুষকে জানাতে ও সচেতন করতে এমন এক অভিনব থিম গ্রহণ করেছে পুজো কমিটি।
দর্শনার্থীদের কৌতূহল ও উচ্ছ্বাস
থিমটি বেশ জনপ্রিয়তা পেয়েছে এবং এলাকার মানুষজন প্রতিমা দেখতে ভিড় জমাচ্ছেন। মা কালীর এই রূপ যেমন নতুন প্রজন্মকে ভাবতে শিখিয়েছে, তেমনি প্রতিমার ন্যায়ের দিকটি অনেকের মধ্যে আন্দোলন ও সমাজের প্রতি সচেতনতা জাগিয়েছে। এই থিমের মধ্য দিয়ে আর জি কর হাসপাতালের আন্দোলনের যে ন্যায়ের দাবি তা নিয়ে সাধারণ মানুষও উদ্বুদ্ধ হচ্ছেন।
সমাজের প্রতি পুজো কমিটির বার্তা
পুজো কমিটি মনে করে, পুজো কেবল ধর্মীয় আনুষ্ঠানিকতা নয়, এটি সমাজের প্রতি দায়বদ্ধতা প্রকাশেরও একটি মাধ্যম। তাই এ বছর তারা পূজোর মাধ্যমে আর জি করের আন্দোলনের সঙ্গে সংহতি জানাচ্ছেন। এটি পুজোর একটি নতুন ভাবনা, যেখানে সামাজিক ইস্যুগুলিকে গুরুত্ব দিয়ে মানুষের মাঝে সচেতনতার সঞ্চার ঘটানো হচ্ছে।
মন্দিরের বাইরে প্রতিক্রিয়া
মণ্ডপের সামনে দর্শকদের বেশ ভালো সাড়া লক্ষ্য করা গেছে। তারা বলেন, “প্রতিমার এই রূপ সমাজকে একটি শক্তিশালী বার্তা দেয়। মা কালীর মাধ্যমে আমরা বুঝতে পারছি যে, সত্য ও ন্যায়ের পক্ষে দাঁড়ানো আমাদের দায়িত্ব।” পূজো কমিটি মনে করে, ধর্মীয় প্রেক্ষাপটকে ব্যবহার করে ন্যায়ের এই আবেদন নতুন দৃষ্টান্ত স্থাপন করবে।


