Saturday, June 14, 2025

‘আমি সাহায্য না করলে ট্রাম্প হারতেন’— ইলন মাস্কের বিস্ফোরক হুঁশিয়ারি, সম্পর্কের অবনতিতে সরগরম মার্কিন রাজনীতি

Share

ইলন মাস্কের বিস্ফোরক হুঁশিয়ারি!

যুক্তরাষ্ট্রের রাজনীতির মঞ্চে ফের ঝড় তুললেন প্রযুক্তি ও ধনকুবের ইলন মাস্ক। প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পকে নিয়ে তাঁর সাম্প্রতিক মন্তব্য যেন আগুনে ঘি ঢেলে দিয়েছে। মাস্কের দাবি, “আমি সাহায্য না করলে ট্রাম্প প্রেসিডেন্ট পদে জিততেই পারতেন না।” শুধু তাই নয়, তিনি ট্রাম্পের নামে থাকা বিতর্কিত তথ্য ফাঁস করার হুঁশিয়ারিও দিয়েছেন। এই বিস্ফোরক মন্তব্যের জেরে দুই বিশিষ্ট ব্যক্তিত্বের সম্পর্কের চরম অবনতি এখন স্পষ্ট।

ঘটনার সূত্রপাত বৃহস্পতিবার। সেই দিন ট্রাম্প একটি বক্তব্যে দাবি করেন, মাস্কের কোনও প্রয়োজন ছিল না, তিনি তাঁর সাহায্য ছাড়াই পেনসিলভানিয়া অঙ্গরাজ্যে জিততে পারতেন। এই মন্তব্য ছড়িয়ে পড়তেই পাল্টা জবাব দেন টেসলা এবং এক্স-এর মালিক মাস্ক। এক টুইটে তিনি লেখেন, “আমার সাহায্য ছাড়া ট্রাম্প জয়ী হতে পারতেন না।” মাস্কের দাবি অনুযায়ী, তাঁর সহায়তা না থাকলে প্রতিনিধি পরিষদে ডেমোক্র্যাটদের সংখ্যাগরিষ্ঠতা তৈরি হতো, এবং সিনেটেও রিপাবলিকানদের প্রাধান্য কমে যেত। যদিও কীভাবে তিনি ট্রাম্পকে সাহায্য করেছেন, সে বিষয়ে কোনও বিস্তারিত ব্যাখ্যা দেননি।

তবে এখানেই শেষ নয়। মাস্ক আরও এক ধাপ এগিয়ে ট্রাম্পের বিরুদ্ধে ‘বড় বোমা’ ফেলার হুঁশিয়ারি দেন। তিনি বলেন, বিতর্কিত ‘এপস্টাইন ফাইল’-এ ট্রাম্পের নাম থাকলেও শুধুমাত্র তাঁর নাম রয়েছে বলেই সেটি প্রকাশ্যে আনা হয়নি। মাস্ক স্পষ্ট করে জানিয়েছেন, ভবিষ্যতে তিনি এই ফাইল সামনে আনবেন এবং ‘সত্যি বেরিয়ে আসবে’। এই পোস্টের মাধ্যমে তিনি ইঙ্গিত দেন, বড় কিছু ফাঁস হতে চলেছে।

জেফ্রি এপস্টাইন নামক বিতর্কিত ধনকুবেরের বিরুদ্ধে যৌন কেলেঙ্কারির অভিযোগ ছিল দীর্ঘদিনের। তাঁর ঘনিষ্ঠ মহলের অনেকের নাম রয়েছে সেই মামলার নথিতে। অভিযোগ উঠেছিল, ট্রাম্প বহুবার এপস্টাইনের ব্যক্তিগত বিমানে চড়ে বিদেশ সফরে গিয়েছেন। চলতি বছরের শুরুতে ওই নথির কিছু অংশ প্রকাশ্যে এলেও মাস্ক চান পুরো ফাইলই সামনে আনা হোক।

এই পরিস্থিতিতে মাস্ক আরও একটি বিস্ফোরক মন্তব্য করেন, যেখানে তিনি বলেন, ট্রাম্পকে ইমপিচ (অপসারণ) করে ভাইস প্রেসিডেন্ট জেডি ভান্সকে প্রেসিডেন্ট করা উচিত। এই মন্তব্যে পরিষ্কার, তাঁদের মধ্যেকার রাজনৈতিক বোঝাপড়াও ভেঙে পড়েছে।

অথচ, মাত্র কিছু মাস আগেই ট্রাম্প দ্বিতীয়বার প্রেসিডেন্ট হওয়ার পর ইলন মাস্ককে তাঁর প্রশাসনের বিশেষ পরামর্শদাতা হিসেবে নিয়োগ করেছিলেন। ‘সরকারি দক্ষতা বিষয়ক দফতর’-এর দায়িত্বও দিয়েছিলেন তাঁকে, যার মূল কাজ ছিল প্রশাসনিক খরচ কমানো। কিন্তু ট্রাম্পের একাধিক নীতিকে ‘জঘন্য’ বলে উল্লেখ করে সেই পদ থেকে ইস্তফা দেন মাস্ক।

সবশেষে, ট্রাম্প নিজেই বলেন, “আমি ইলনের উপর খুবই হতাশ। আমাদের দারুণ সম্পর্ক আর থাকবে কি না, জানি না।” মাস্কের একের পর এক হুঁশিয়ারি পোস্টের পর স্পষ্ট, তাঁদের মধ্যে সেই ‘দারুণ সম্পর্ক’ এখন অতীত। এই দ্বন্দ্ব শুধু ব্যক্তিগত স্তরে সীমাবদ্ধ নয়— মার্কিন রাজনীতিতে এর প্রভাব পড়তে চলেছে বলেই মনে করছে পর্যবেক্ষক মহল।

বর্ষার আগেই বাইরে রাখা আসবাব ভালো রাখার ৫ সহজ উপায়

Read more

Local News