আইপিএল এক সপ্তাহ বন্ধ থাকায় বিসিসিআইয়ের ক্ষতি?
২০২৫ সালের আইপিএল এবারও ক্রিকেট প্রেমীদের জন্য ছিল এক দারুণ উৎসব। আর তা হয়ে উঠেছে ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ডের অর্থনৈতিক সাফল্যের বড় হাতিয়ার। প্রতিবারের মতো এবারের আইপিএল থেকেও বিপুল অর্থ আয় করেছে বিসিসিআই। তবে মাঝপথে এক সপ্তাহের বিরতি থাকায় কি বোর্ডের অর্থনৈতিক ক্ষতি হয়েছে? এ ব্যাপারে স্পষ্ট ধারণা পাওয়া গেল।
গত কয়েক বছর ধরে আইপিএল থেকে বিসিসিআইয়ের রোজগার ক্রমশ বৃদ্ধি পাচ্ছে। ২০২৩ সালে আইপিএল থেকে বোর্ড আয় করেছিল ১৬,৪৯৩ কোটি টাকা, যা ২০২৪ সালে বেড়ে দাঁড়ায় ২০,৬৮৬ কোটি টাকায়। আর এবার এই আয় আরও অনেকটাই বেড়ে হয়েছে প্রায় ২২,৫৬৩ কোটি টাকা। তবে এই পরিসংখ্যান থেকে এক সপ্তাহের বিরতির প্রভাবও কম নয়। ওই সময় টিভি সম্প্রচার বন্ধ থাকায় এবং বিজ্ঞাপন না থাকায় বোর্ড কিছুটা লোকসান করেছে বলে মনে করা হচ্ছে।
কীভাবে আয় হয়েছে?
আইপিএল আয় মূলত বিভিন্ন মাধ্যম থেকে আসে। এর মধ্যে সবচেয়ে বড় আয় আসে সম্প্রচার অধিকার থেকে। প্রতি ম্যাচের জন্য স্টার স্পোর্টস প্রায় ১৩০ কোটি ৭০ লক্ষ টাকা প্রদান করে থাকে। পুরো লিগের জন্য বিসিসিআই পেয়েছে ৯,৬৭৮ কোটি টাকা। এর পাশাপাশি, ডিজিটাল সম্প্রচারের অধিকার রয়েছে ভায়াকম১৮-এর কাছে, সেখান থেকেও বোর্ড ভাল আয় করেছে।
বিজ্ঞাপনের ক্ষেত্রেও আগের থেকে ২৭ শতাংশ বেশি অর্থ এসেছে। ‘ইকোনমিক টাইমস’-এর রিপোর্ট অনুযায়ী, এই বৃদ্ধি বোর্ডের আয়ের একটি বড় উৎস।
টাইটেল স্পনসর হিসেবে টাটা গোষ্ঠী রয়েছে। ২০২৪ থেকে ২০২৮ সাল পর্যন্ত পাঁচ বছরের জন্য টাটার সঙ্গে ২৫০০ কোটি টাকার চুক্তি রয়েছে, অর্থাৎ প্রতি বছর বোর্ড পাবে ৫০০ কোটি টাকা। এবারে সেই চুক্তির টাকা সময়মতো পেয়েছে বিসিসিআই।
টাটাকে বাদ দিলে আরও অনেক স্পনসর আছেন, যেমন— মাই ১১ সার্কেল, এঞ্জেল ওয়ান, রুপে, সিয়াট, আরামকো ইত্যাদি। তারা থেকেও নিয়মিত বোর্ডকে অর্থ প্রদান করা হয়।
অন্যদিকে, টিকিট বিক্রি থেকে, ক্রিকেটারদের জার্সি, দলীয় পতাকা ও আনুষঙ্গিক পণ্যের বিক্রিও বোর্ডের আয় বৃদ্ধি করেছে। যদিও এসব থেকে বোর্ডের অংশের আকার বড় নয়, তবুও মোট আয়কে সামগ্রিকভাবে শক্তিশালী করেছে।
এবারের আয় থেকে বোর্ড পুরো টাকা নিজস্ব কোষাগারে রাখতে পারে না। প্রত্যেক দলকে লভ্যাংশ হিসেবে ৪২৫ কোটি টাকা করে দেয় বিসিসিআই। তবে বাকি অংশ অর্থাৎ প্রায় ১৮ হাজার কোটি টাকা ভারতের ক্রিকেটের উন্নয়ন ও অন্যান্য কাজে ব্যবহৃত হয়।
অতীতে যেমন আইপিএল ছিল শুধুই একটি টুর্নামেন্ট, এবার তা হয়ে উঠেছে বিশাল অর্থনৈতিক মঞ্চ। তবে এক সপ্তাহের বিরতি এবং টিভি সম্প্রচারে বাধা এক দিক থেকে ক্ষতি হলেও সামগ্রিক আয় বিসিসিআইয়ের জন্য আশাব্যঞ্জক। আগামী আইপিএল আরো আয় বৃদ্ধি করবে বলে ক্রিকেট বিশেষজ্ঞরা আশাবাদী।
বাড়ির খাবারেও বাড়তে পারে কোলেস্টেরল: প্রাতরাশে এই ৫ খাবার খাবেন না কেন?